এই নিবন্ধে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় অর্থাৎ বিশ শতকে ভারতে কৃষক শ্রমিক এবং বাম্পন্থী আন্দোলন এর বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 10 History Chapter 06 MCQ Answer
Class 10 History Chapter 06 MCQ Answer | মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় ০৬ – বিশ শতকে ভারতে কৃষক শ্রমিক এবং বাম্পন্থী আন্দোলন প্রশ্ন ও উত্তর
Table of Contents
সঠিক উত্তর নির্বাচনধর্মী প্রশ্ন :
১. বিজোলিয়া সত্যাগ্রহ দেখা যায় –
(ক) অযোধ্যায়
(খ) দ্বারভাঙায়
(গ) রাজস্থানে
(ঘ) বাংলায়
উত্তরঃ (গ) রাজস্থানে
২. ফ্লাউড কমিশন কোন্ বিদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত? –
(ক) চম্পারন
(খ) তেভাগা
(গ) তেলেঙ্গানা
(ঘ) মোপালা
উত্তরঃ (খ) তেভাগা
৩. ‘নিজ খামারে ধান তোলো’ – স্লোগানটি ছিল –
(ক) মেদিনীপুরের কৃষকদের
(খ) তেলেঙ্গানার কৃষকদের
(গ) ত্রিবাঙ্কুরের কৃষকদের
(ঘ) গুজরাটের কৃষকদের
উত্তরঃ (ক) মেদিনীপুরের কৃষকদের
৪. গান্ধিজির রাজনৈতিক গুরু ছিলেন –
(ক) উইলিয়ম ওয়ার্ড
(খ) গোপালকৃষ্ণ গোখলে
(গ) বিদ্যাসাগর
(ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তরঃ(খ) গোপালকৃষ্ণ গোখলে
৫. মানবেন্দ্রনাথ রায়ের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে হাতেখড়ি যে দলের মাধ্যমে হয়েছিল, তা হল-
(ক) অনুশীলন সমিতি
(খ) যুগান্তর দল
(গ) বেঙ্গাল ভলান্টিয়ার্স দল
(ঘ) কংগ্রেস
উত্তরঃ (খ) যুগান্তর দল
৬. বেঙ্গল ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির নেতা ছিলেন –
(ক) বাবা রামচন্দ্র
(খ) মদনমোহন মালব্য
(গ) নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত
(ঘ) জওহরলাল নেহরু
উত্তরঃ (গ) নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত
৭. ‘গণবাণী’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন –
(ক) কাজী নজরুল ইসলাম
(খ) মুজফ্ফর আহমেদ
(গ) এস এ ডাঙ্গে
(ঘ) সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ার
উত্তরঃ (খ) মুজফ্ফর আহমেদ
৮. ‘পাতিদার যুবক মণ্ডল’ তৈরি হয় –
(ক) মাদ্রাজে
(খ) বিহারে
(গ) কলকাতায়
(ঘ) বারদৌলিতে
উত্তরঃ (ঘ) বারদৌলিতে
৯. ‘লেবার স্বরাজ পার্টি’ প্রতিষ্ঠিত হয় –
(ক) বাংলায়
(খ) অন্ধ্রপ্রদেশে
(গ) যুক্তপ্রদেশে
(ঘ) বিহারে
উত্তরঃ (ক) বাংলায়
১০. একা আন্দোলনের নেতা ছিলেন –
(ক) মাদারি পাসি
(খ) ড. আম্বেদকর
(গ) মহাত্মা গান্ধি
(ঘ) বাবা রামচন্দ্র
উত্তরঃ (ক) মাদারি পাসি
১১. নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল –
(ক) ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (খ) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে
১২. বারদৌলি সত্যাগ্রহ হয়েছিল –
(ক) বোম্বাই-এ
(খ) পাঞ্জাবে
(গ) মাদ্রাজে
(ঘ) গুজরাটে
উত্তরঃ (ঘ) গুজরাটে
১৩. গান্ধিজির নেতৃত্বে ডান্ডি অভিযান শুরু হয়েছিল –
(ক) ১২ মার্চ ১৯৩০
(খ) ১৫ মার্চ ১৯৩১
(গ) ২১ মার্চ ১৯৩২
(ঘ) ২৯ মার্চ ১৯২৯-খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (ক) ১২ মার্চ ১৯৩০
১৪. বাবা রামচন্দ্র কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন –
(ক) বিহারে
(খ) যুক্তপ্রদেশে
(গ) রাজস্থানে
(ঘ) মহারাষ্ট্রে
উত্তরঃ(খ) যুক্তপ্রদেশে
১৫. রম্পা উপজাতীয় বিদ্রোহ সংঘটিত হয় –
(ক) মালাবার অঞ্চলে
(খ) কোঙ্কন উপকূলে
(গ) ওড়িশায়
(ঘ) গোদাবরী উপত্যকায়
উত্তরঃ (ঘ) গোদাবরী উপত্যকায়
১৬. প্রথম বয়কট আন্দোলনের ডাক দেন-
(ক) কৃষ্ণকুমার মিত্র
(খ) সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(গ) শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু
(ঘ) প্রমথনাথ মিত্র
উত্তরঃ (ক) কৃষ্ণকুমার মিত্র
১৭. তিন কাঠিয়া প্রথা যে ফসলের সঙ্গে যুক্ত সেটি হল –
(ক) নীল
(খ) পাট
(গ) আম
(ঘ) ধান
উত্তরঃ (ক) নীল
১৮. বিংশ শতকে ব্রিটিশবিরোধী কোন্ কোন্ আন্দোলনে কৃষকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ লক্ষ করা গিয়েছিল?
(i) বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন, – (ii) অহিংস অসহযোগ আন্দোলন, (iii) আইন অমান্য আন্দোলন, (iv) ভারত ছাড়ো আন্দোলন ।
(ক) i, ii ঠিক
(খ) i, ii, iii ঠিক
(গ) i, ii ভুল
(ঘ) সবকটি ঠিক
উত্তরঃ(ঘ) সবকটি ঠিক
১৯. সর্বভারতীয় কিষানসভার প্রথম সভাপতি ছিলেন –
(ক) এন জি রঙ্গ
(খ) স্বামী সহজানন্দ
(গ) বাবা রামচন্দ্র
(ঘ) লালা লাজপত রায়
উত্তরঃ (খ) স্বামী সহজানন্দ
২০. ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’ যুক্ত ছিল –
(ক) রাওলাট সত্যাগ্রহে
(খ) অসহযোগ আন্দোলনে
(গ) বারদৌলি সত্যাগ্রহে
(ঘ) সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে
উত্তরঃ(ঘ) সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে
২১. কানপুরে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম হয় –
(ক) ১৯০৫ সালে
(খ) ১৯২০ সালে
(গ) ১৯২৫ সালে
(ঘ) ১৯৪২ সালে
উত্তরঃ (গ) ১৯২৫ সালে
২২. ‘একা আন্দোলন’ শুরু হয়েছিল –
(ক) ঔপনিবেশিক সরকারের কাছ থেকে জমি দখলের দাবিতে
(খ) সূর্যাস্ত আইন রদের দাবিতে
(গ) জোর করে বাড়তি খাজনা আদায় রদের দাবিতে
(ঘ) তিন কাঠিয়া ব্যবস্থা রদের দাবিতে
উত্তরঃ (গ) জোর করে বাড়তি খাজনা আদায় রদের দাবিতে
২৩. AITUC এর প্রথম সম্পাদক হলেন –
(ক) দেওয়ান চমনলাল
(খ) বাতিস্তা
(গ) লালা লাজপত রায়
(ঘ) অমৃত ডাকো
উত্তরঃ (ক) দেওয়ান চমনলাল
২৪. একা আন্দোলন ঘটেছিল –
(ক) বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনের পর্যায়ে
(খ) আইন অমান্য আন্দোলনের পর্যায়ে
(গ) অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের পর্যায়ে
(ঘ) ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পর্যায়ে
উত্তরঃ(গ) অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের পর্যায়ে
২৫. ‘একা’ আন্দোলনকে ‘সামাজিক দস্যুতা’ বলে চিহ্নিত করেছেন ঐতিহাসিক –
(ক) অমলেশ ত্রিপাঠী
(খ) সুমিত সরকার
(গ) শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়
(গ) এরিক হবসবম
উত্তরঃ (গ) এরিক হবসবম
২৬. ‘লাঙল’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন –
(ক) কাজী নজরুল ইসলাম
(খ) মুজফ্ফর আহমেদ
(গ) এস এ ডাঙ্গে
(গ) আচার্য নরেন্দ্র দেব
উত্তরঃ (ক) কাজী নজরুল ইসলাম
২৭. মানবেন্দ্রনাথ রায়ের প্রকৃত নাম ছিল –
(ক) নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
(খ) যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
(গ) নরেন্দ্রনাথ রায়
(ঘ) যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
উত্তরঃ (ক) নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
২৮. ‘কুনবি’ বলা হত –
(ক) উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের
(খ) পাঞ্জাবের কৃষকদের
(গ) বাংলার কৃষকদের
(ঘ) গুজরাটের কৃষকদের
উত্তরঃ (ঘ) গুজরাটের কৃষকদের
২৯. পুন্নাপ্রা-ভায়লার আন্দোলন হয়েছিল –
(ক) গুজরাটে
(খ) অন্ধ্রপ্রদেশে
(গ) ত্রিবাঙ্কুরে
(ঘ) পাঞ্জাবে
উত্তরঃ (গ) ত্রিবাঙ্কুরে
৩০. ‘লাঙল যার জমি তার’ – এই স্লোগান যে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তার নাম হল –
(ক) তেভাগা আন্দোলন
(খ) তেলেঙ্গানা আন্দোলন
(গ) একা আন্দোলন
(ঘ) পুন্নাপ্রা-ভায়লার আন্দোলন
উত্তরঃ (ক) তেভাগা আন্দোলন
৩১. তেলেঙ্গানা বিদ্রোহ সংঘটিত হয় –
(ক) অযোধ্যায়
(খ) রাজস্থানে
(গ) মহারাষ্ট্রে
(ঘ) হায়দরাবাদে
উত্তরঃ (ঘ) হায়দরাবাদে
৩২. বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্তকে ‘গভীর জাতীয় বিপর্যয়’ আখ্যা দিয়েছেন –
(ক) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
(খ) চিত্তরঞ্জন দাশ
(গ) গান্ধিজি
(ঘ) কৃষ্ণকুমার মিত্র
উত্তরঃ (ক) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
৩৩ ভারতে মহাত্মা গান্ধির প্রথম সত্যাগ্রহ আন্দোলন ছিল-
(ক) খেদা
(খ) চম্পারন
(গ) আহমেদাবাদ
(ঘ) রাওলাট
উত্তরঃ (খ) চম্পারন
৩৪. বারদৌলি সত্যাগ্রহ হয়েছিল—
(ক) জমি অধিগ্রহণের দাবিতে
(খ) খাজনা হ্রাসের দাবিতে
(গ) মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে
(ঘ) ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করার জন্য
উত্তরঃ (খ) খাজনা হ্রাসের দাবিতে
৩৫. ভারতে বামপন্থী আন্দোলনের জনক ছিলেন –
(ক) লালা লাজপত রায়
(খ) সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ার
(গ) রাসবিহারী বসু
(ঘ) মানবেন্দ্ৰনাথ রায়
উত্তরঃ (ঘ) মানবেন্দ্ৰনাথ রায়
অনুরূপ প্রশ্ন : ভারতে সাম্যবাদী আন্দোলনের জনক বলা হয় –
(ক) আচার্য নরেন্দ্র দেবকে
(খ) জয়প্রকাশ নারায়ণকে
(গ) নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে
(ঘ) বি পি ওয়াদিয়াকে
উত্তরঃ (গ) নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে
৩৬. গিরনি কামগড় ইউনিয়ন নামে শ্রমিক সংগঠন গড়ে ওঠে –
(ক) মাদ্রাজে
(খ) বোম্বাইয়ে
(গ) দিল্লিতে
(ঘ) কলকাতায়
উত্তরঃ (খ) বোম্বাইয়ে
৩৭. ‘দেশপ্রাণ’ নামে পরিচিত ছিলেন –
(ক) সতীশচন্দ্র সামন্ত
(খ) অশ্বিনীকুমার দত্ত
(গ) বীরেন্দ্রনাথ শাসমল
(ঘ) যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত
উত্তরঃ (গ) বীরেন্দ্রনাথ শাসমল
৩৮. মোপালা বিদ্রোহ (১৯২১) হয়েছিল –
(ক) মালাবার উপকূলে
(খ) কোঙ্কন উপকূলে
(গ) গোদাবরী উপত্যকায়
(ঘ) তেলেঙ্গানা অঞ্চলে
উত্তরঃ (ক) মালাবার উপকূলে
৩৯. ‘মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা’ (১৯২৯) হয়েছিল –
(ক) জাতীয় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে
(খ) বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে
(গ) শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে
(ঘ) কৃষক নেতাদের বিরুদ্ধে
উত্তরঃ (গ) শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :
1. স্বামী বিবেকানন্দের নেতৃত্বে কোথাকার কৃষকেরা কবে বিদ্রোহ ঘােষণা করেন?
উত্তর : ১৯১৯ থেকে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দের নেতৃত্বে ‘দ্বারভাঙ্গার’ জমিদারের বিরুদ্ধে বিহারের কৃষকেরা বিদ্রোহ ঘােষণা করে।
2. জলপাইগুড়ির বুড়িমা বিখ্যাত কেন?
উত্তর : বুড়িমা নামে অভিহিত হয়েছিল জলপাইগুড়ি জেলার দেবীগঞ্জ এলাকার এক বৃদ্ধা বিধবা। তিনি ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে তেভাগা আন্দোলনের উত্তরবঙ্গের রাজবংশীয়দের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এক প্রবাদে পরিণত হয়েছিলেন।
3. বারদৌলি সত্যাগ্রহ কী?
উত্তর : ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে গুজরাতের সুরাত জেলার বারদৌলি ‘ভারতের বিসমার্ক’ নামে খ্যাত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে কৃষক চাষিরা খাজনা না দেওয়ার দাবিতে যে আন্দোলন করে তা বারদৌলি সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।
4. রশিদ আলি দিবস কী?
উত্তর : রশিদ আলির মুক্তির দাবিতে মুসলিম ছাত্রলিগ ১১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ধর্মঘট-এর ডাক দিলে সব ছাত্র সংগঠন এই ধর্মঘটে শামিল হয়। ডালহৌসি স্কোয়ারের দিকে আগুয়ান ছাত্র মিছিলের ওপর পুলিশ গুলি চালায় পরের দিন অর্থাৎ ১৯৪৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারি রশিদ আলি দিবস-এর ডাক দেওয়া হয়।
5. মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা কী?
উত্তর : ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে কানপুর ষড়যন্ত্র মামলার পরিসমাপ্তির সঙ্গে কমিউনিস্ট নেতাদের দমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে পরের বছর অর্থাৎ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৩১ জন বামপন্থী নেতার বিরুদ্ধে পাঁচ বছর ধরে যে মামলা চলছিল তা মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত। এই মামলা Judicial Scandal নামে খ্যাত।
6, গান্ধিজির মতে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের পবিত্র ঘটনা বলতে কী বােঝাে?
উত্তর : গান্ধিজি অহিংস আন্দোলনে হিংসার আশ্রয়কে পছন্দ করতেন না। কিন্তু বাবা রামচন্দ্রের রায়বেরিলিতে কৃষক শ্রমিকদের নিয়ে জঙ্গী সংগঠন করার জন্য তৎপর হলে ব্রিটিশ সরকার ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ১০ ফেব্রুয়ারি রামচন্দ্রকে গ্রেপ্তার করে। এই গ্রেপ্তারের ঘটনাকে গান্ধিজি পবিত্র ঘটনা বলেছেন।
7. ভাগচাষি বলতে কী বােঝ?
উত্তর : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পর থেকে ভূস্বামীর জমি ভাড়া নিয়ে যে সমস্ত কৃষক | নিজেদের খরচে চাষবাস করত তাদের বলা হত ভাগচাষি।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর :
1. আইন অমান্য আন্দোলনর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। এই আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করাে।
অথবা, আইন অমান্য আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। এই আন্দোলন কতখানি সফল হয়েছিল?
উত্তর :
ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ১৯২৯ থেকে ১৯৩১ খ্রিঃ পর্যন্ত আইন অমান্য আন্দোলন এক সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। অসহযােগ আন্দোলনের পরে জাতীয় সংগ্রামে দ্বিতীয় বৃহত্তম গণঅভূত্থান হল আইন অমান্য আন্দোলন।
পটভূমিকা : সমকালীন ভারতবর্ষের নানা ঘটনাবলি ও ক্ষোভের পরিণতি হল আইন অমান্য আন্দোলন। যেমন : (a) বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা (b) কমিউনিস্ট দলের উদ্ভব (c) পুঁজিপতি শ্রেণির অসন্তোষ (d) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। প্রথম পর্যায় :
আন্দোলনের সূচনা :
(a) লবণ সত্যাগ্রহ : সে সময় ভারতবাসীদের স্বহস্তে লবণ তৈরি করা দণ্ডনীয়। অপরাধ ছিল। এই অবস্থায় ১৯৩০ খ্রিঃ ১২ মাচঈ লবণ আইন ভঙ্গের উদ্দেশ্যে। গান্ধিজি সবরমতী আশ্রম থেকে গুজরাটের সমুদ্রতীরে ডান্ডি অভিমুখে ৭৮ জন সত্যাগ্রহীকে নিয়ে ঐতিহাসিক ডান্ডি অভিযান শুরু করেন। ৬ এপ্রিল ডান্ডিতে স্বহস্তে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরি করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন এব আন্দোলনের সূচনা করেন।
(b) আন্দোলনের ব্যাপকতা : গান্ধিজির আহ্বানে আইন অমান্য আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ গুজরাট উপকূল থেকে দাবানলের মতাে সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। মহা উল্লাসে সর্বত্রই চলতে থাকে লবণ তৈরি। কলকাতার মেয়র যতীন্দ্রমােহন সেনগুপ্ত প্রকাশ্য জনসভায় নিষিদ্ধ গ্রন্থ পাঠ করে আইন ভঙ্গ করে। উঃ পঃ সীমান্তে খান আর দুল গফফর খান-এর নেতৃত্বে খােদা-ই-খিদমতার দলের অনুচরেরা আন্দোলনকে তীব্র রূপ দেন।
(c) সরকারি দমননীতি : আন্দোলনের ব্যাপকতা লক্ষ করে ব্রিটিশ সরকার সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং আন্দোলনকে দমন করার জন্য নিষ্ঠুর দমননীতির আশ্রয় গ্রহণ করে। গান্ধিজি সহ প্রায় ৭৬০০০ সত্যাগ্রহীকে গ্রেফতার করা হয়। তাছাড়া বেত্রাঘাত, বাড়িতে অগ্নি সংযােগ করা হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়ে আইন অমান্য আন্দোলন : ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনে দ্বিতীয় গােলটেবিল বৈঠক বসে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গান্ধিজি এবং নারীসমাজের পক্ষ থেকে সরােজিনী নাইড় বৈঠকে যােগ দেন। গান্ধীজি বড়ােলাট লর্ড উইলংডন-কে টেলিগ্রাম করে দমন নীতি বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু তিনি এতে কর্ণপাত না করায় গান্দিজি পুনরায় আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেন।
(a) সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা : যখন সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে মুখর, তখন আন্দোলন দমন করার জন্য ব্রিটিশ সরকার এক কূটনৈতিক চাল দেয়। ১৯৩২-এর ১৬ আগস্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডােনাল্ড ‘সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা জারি করে। মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান ও হিন্দুদের জন্য পৃথক পৃথক নির্বাচনের অধিকার দিয়ে ভারতীয় জনমতকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করেন।
(b) পুনা চুক্তি : গান্ধিজির জীবন বাঁচাতে অনুন্নত সম্প্রদায়ের নেতা ড. বি আর আম্বেদকর ও গান্ধিজির মধ্যে সমঝােতামূলক পুনা চুক্তি সম্পাদিত হয়।
গুরুত্ব : (a) এই আন্দোলন ১৯৪২-এর ভারত ছাড়াে আন্দোলনের পথকে প্রশস্ত করে দেয়। (b) এই আন্দোলন বহির্বিশ্বে আলােড়ন সৃষ্টি করে।