Class 10

Class 10 Life Science Chapter 01 Part 02 Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর Part 02 উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন-এর দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

Class 10 Life Science Chapter 01 Part 02 Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর Part 02 উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন-এর দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

এই নিবন্ধে আমরা মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর Part 02 উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সম্বন্ধয়-হরমোন-এর দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরের 08 টি প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবো।

Class 10 Life Science Chapter 01 Part 02 Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর Part 02 উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন-এর দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

1. উদ্ভিদ হরমোনের বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উত্তরঃ- উদ্ভিদ হরমোনের বৈশিষ্ট্য:
i) উৎস: উদ্ভিদ হরমোন প্রধানত বর্ধনশীল অঙ্গের ভাজক কলার কোশ, বীজ, বীজপত্র, মুকুল ও সস্য থেকে উৎপন্ন হয়।
ii) পরিবহন: উদ্ভিদ হরমোন সাধারণত উৎসস্থল থেকে জলে দ্রবীভূত অবস্থায় ব্যাপন প্রক্রিয়ায় ক্রিয়াশীল অঙ্গের লক্ষ্য কোশে পরিবাহিত হয়।
iii) রাসায়নিক প্রক্রিয়া: উদ্ভিদ হরমোন গুলি সাধারণত আম্লিক হয়ে থাকে।
iv) কাজ: উদ্ভিদ হরমোন রাসায়নিক সমন্ধায়ক হিসেবে কাজ করে ও বিভিন্ন অঙ্গের বৃদ্ধি ও বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করে, পুষ্প প্রস্ফুটন, বীজের অঙ্কুরগম প্রভৃতি কাজ উদ্ভিদ হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
v) পরিণতি: উদ্ভিদ হরমোন ক্রিয়ার পর জারিত হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং ওই স্থান থেকে নির্গত হয়।

2. জিব্বেরেলিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও শারীরবৃত্তীয় কাজ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ- জিব্বেরেলিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য: i) জিব্বেরেলিন টারপিনয়েড-জাতীয় নাইট্রোজেন বিহীন জৈব অম্ল।
ii) জিব্বেরেলিন জলের মাধ্যমে ঊর্ধ্ব ও নিম্ন অভিমুখে পরিবাহিত হয়।
iii) একটি প্রধানত কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন নিয়ে গঠিত।
iv) একটি বীজের সুপ্ত দশা ভঙ্গ করে অঙ্কুরোদগমে সাহায্য করে।

জিব্বেরেলিনের শারীরবৃত্তীয় কাজ: i) অঙ্কুরোদগম: উদ্ভিদের বীজের সুপ্তদশা ভঙ্গ করে দ্রুত অঙ্কুরোদগমে সাহায্য করে।
ii) বংশগত খর্বতা দূরীকরণ: এটি উদ্ভিদের বংশগত খর্বতা দূর করে স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ভুট্টা, মটর প্রভৃতি খর্ব জাতের গাছের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়।
iii) পুষ্প প্রস্ফুটন: এই হরমোন সমস্ত রকম উদ্ভিদের ফুল ফোটাতে মুখ্য ভূমিকা নেয়।
iv) ফল গঠন: আঙ্গুর, আপেল, নাশপাতি প্রভৃতি উদ্ভিদের ফল গঠনে জিব্বেরেলিন সাহায্য করে।
v) পরিস্ফুটন: এই হরমোন প্রয়োগে অগ্রমুকুল ও পুষ্প মুকুলের পরিস্ফুটন ঘটে।
vi) লিঙ্গ পরিবর্তন: উন্নত উদ্ভিদের লিঙ্গ নির্ধারণে এবং স্ত্রীফুলের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
vii) উদ্ভিদ অঙ্গের আয়তন বৃদ্ধি: পাতা, ফুল ও ফলের আয়তন বৃদ্ধিতে ও বীজহীন ফল উৎপাদনে সহায়তা করে।

3. অক্সিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি? অক্সিনের কার্যাবলী সংক্ষেপে লেখো।
উত্তরঃ- অক্সিনের বৈশিষ্ট্য:
i) অক্সিন ইন্ডোল বর্গক্ষেত্র N2-যুক্ত এক প্রকার জৈব অম্ল।
ii) অক্সিনের ক্রিয়া প্রধানত মেরুবর্তি। অক্সিন ফ্লোয়েম কলার মাধ্যমে শীর্ষক বিটপ থেকে মূলের দিকে প্রবাহিত হয়।
iii) অক্সিন প্রধানত ব্যাপন প্রক্রিয়ায় জলের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।
iv) ক্রিয়া প্রধানত আলোর বিপরীতে ভালো হয়।
v) অক্সিন উদ্ভিদের প্রধান বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন।
অক্সিনের কার্যাবলী: অক্সিন উদ্ভিদদেহে যে সব গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ করে তা হল –
i) বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ: অক্সিন উদ্ভিদ দেহের প্রধান বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক হরমোন। এই হরমোন উদ্ভিদ দেহের সামগ্রিক বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে যেসব উপায়ে, তা হল

a) কোশে DNA-র সংশ্লেষণ বৃদ্ধি করে কোশের বিভাজন ঘটায়।
b) কোশ প্রাচীরকে নমনীয় করে কোশের আয়তন বৃদ্ধি করে।
c) পরিস্ফুটন ক্ষমতা বিহীন কোশপুঞ্জ বা ক্যলাস সৃষ্টি করে।
d) কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ব্যাহত করে অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে ফলে উদ্ভিদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি ঘটায়।
e) অক্সিন, ক্যাম্বিয়ামের সক্রিয়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে উদ্ভিদের গৌণ বৃদ্ধিতে ও সাহায্য করে।
ii) ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ: অক্সিন হরমোনের অসম বন্টনের ফলে কাণ্ড ও মূলের ফটোট্রপিক ও জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রিত হয়।
iii) অঙ্গ পরিস্ফুরণ: লঘু ঘনত্বের অক্সিনের প্রভাবে উদ্ভিদের মূল, কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফলের পরিস্ফুটন বা বিভেদ নিয়ন্ত্রিত হয়।
iv) অঙ্গমোচন রোধ: অক্সিন উদ্ভিদের পাতা ও ফলের অকাল-পাতন রোধ করে।
v) ফল সৃষ্টি: অক্সিন উদ্ভিদদেহে স্বাভাবিক ফল গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া কৃত্রিম অক্সিন প্রয়োগে বীজহীন ফল গঠিত হয়।
vi) ক্ষত নিরাময়: অক্সিন হরমোন উদ্ভিদের ক্ষতস্থানে ক্যালাস টিস্যু সৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষতস্থান নিরাময়ে সাহায্য করে।

4. উদ্ভিদের ফটোট্রপিক ও জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিন হরমোনের ভূমিকা লেখ।
উত্তরঃ- ফটোট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা: কাণ্ড ও মূলের আলোকিত অংশের বিপরীতে অক্সিন বেশি সঞ্চিত হয়। ফলে কাণ্ডের ও মূলের যে পাশে আলো পড়ে, সেখান থেকে অক্সিন আলোর বিপরীত পাশে চলে যায়। যেহেতু কাণ্ডের কোশ বেশি অক্সিন ঘনত্বে এবং মূলের কোশ কম অক্সিন ঘনত্বে বেশি সক্রিয় হয়, সেজন্য কাণ্ডের আলোকিত অংশের বিপরীত পাশের কোশগুলি ও মূলের আলোকিত অংশের কোশগুলি দ্রুত বিভাজিত হয়। এর ফলে কাণ্ডের অগ্রভাগ আলোর দিকে বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ অনুকূল আলোকবর্তি চলন প্রদর্শন করে এবং মূলের অগ্রভাগ আলোর বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ প্রতিকূল আলোকবর্তি চলন প্রদর্শন করে।
জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা: অভিকর্ষ বলের জন্য অনুভূতি ভাবে শায়িত উদ্ভিদের কাণ্ড ও মূলের অগ্রভাগের নীচে বেশি অক্সিন জমা হয়। মূলের অধিক অক্সিনযুক্ত অঞ্চলের কোশগুলির বিভাজন ক্ষমতা কমে যায়। কারণ মূলের কোশগুলি বেশি ঘনত্বের অক্সিনের উপস্থিতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। অন্যদিকে মূলের ওপরের অংশ কম অক্সিন জমার ফলে ওই অংশের কোশগুলি লঘু ঘনত্বের অক্সিনের উপস্থিতিতে দ্রুত বিভাজিত হয়ে মূলের বৃদ্ধি ঘটিয়ে মূলকে মাটির গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে অনুকূল জিওট্রপিক চলন দেখায়। কাণ্ডের অগ্রভাগের কোশগুলোকে মূলের ঠিক বিপরীত ঘটনা ঘটে। ফলে কাণ্ড অভিকর্ষ বলের বিপরীতে বৃদ্ধি ও প্রতিকুল জিও ট্রপিক চলন দেখায়।

5. উদ্ভিদের বৃদ্ধি সহায়ক উপাদান হিসেবে হরমোনের ভূমিকা লেখ।
উত্তরঃ- উদ্ভিদের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকা: উদ্ভিদের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকাগুলি হল –
i) উদ্ভিদদেহে সংবেদনশীলতা ও সাড়াপ্রদান: উদ্দীপনায় সাড়া দেওয়ার জন্য উদ্ভিদের কোশ, কলা ও অঙ্গের মধ্যে রাসায়নিক বার্তা প্রেরণ এবং সংযোগসাধন বিভিন্ন উদ্ভিদ হরমোনের মাধ্যমে ঘটে থাকে।
ii) উদ্ভিদের অগ্র ও পার্শ্বীয় বৃদ্ধি: উদ্ভিদের অগ্রমূলের বৃদ্ধির মাধ্যমে কাণ্ড ও মূলের বৃদ্ধি অক্সিন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অক্সিন পার্শ্বস্থ ভাজক কলা হিসেবে ক্যাম্বিয়ামকে সক্রিয় করে উদ্ভিদের পার্শীয় বৃদ্ধি বা গৌণ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এছাড়া কোষ বিভাজন, কোশের আকার ও আয়তন বৃদ্ধির মাধ্যমে উদ্ভিদদেহের সামগ্রিক বৃদ্ধি অক্সিন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
iii) পুষ্প প্রস্ফুটন: জিব্বেরেলিন এবং ফ্লোরিজেন হরমোন পুষ্প প্রস্ফুটনের সাহায্য করে।
iv) মুকুলোদগম: সাইটোকাইনিন হরমোনের প্রভাবে উদ্ভিদের কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে। বীজের থেকে ভ্রণমূল ও ভ্রূণমুকুলের সৃষ্টি ও বৃদ্ধি হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে।
v) বীজের অঙ্কুরোদগম: জিব্বেরেলিন সুপ্ত বীজের অংকুরোদগম ঘটায়। এই হরমোনের প্রভাবে বীজের মধ্যে আলফা-অ্যামাইলেজ উৎসেচকের ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়, হলে বীজমধ্যস্থ সস্য সঞ্চিত খাদ্য স সরলীকৃত অবস্থান দ্রুত ভ্রুণে পরিবাহিত হয়। এর ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম ত্বরান্বিত হয়।
vi) ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ: অক্সিন ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা নেয়। উদ্ভিদ অঙ্গে অক্সিনের অসম বন্টন ফটোট্রপিক ও জিওট্রপিক চলনে সাহায্য করে।

6. অক্সিন ও জিব্বেরেলিনের একটি করে উৎসগত ও দুটি করে কার্যগত পার্থক্য লেখ। একটি টবে লাগানো চারা গাছকে মাটির সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে শুইয়ে দিলে কয়েকদিন পরে চারা গাছটির বেঁকে ওপরের দিকে বাড়তে শুরু করে কেন?
উত্তরঃ- অক্সিন ও জিব্বেরেলিনের একটি উৎসগত পার্থক্য হল – অক্সিন কান্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলায় উৎপন্ন হয়। জিব্বেরেলিন উৎপন্ন হয় পরিণত বীজ, বীজপত্র ও পাতার বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে।
অক্সিন এবং জিব্বেরেলিন এর দুটি কার্যগত পার্থক্য হল –
i) ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।(অক্সিন)
চলন নিয়ন্ত্রণে জিব্বেরেলিনের কোন ভূমিকা নেই। (জিব্বেরেলিন)
ii) অক্সিন অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি ঘটায় পার্শীয় বা কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। (অক্সিন)
পুষ্প মুকুলের বৃদ্ধি ঘটায় জিব্বেরেলিন। (জিব্বেরেলিন)

টবে লাগানো চারা গাছ বেঁকে উপরের দিকে বাড়তে থাকার কারণ: অক্সিনের ধর্ম হল আলোকিত অংশের বিপরীতে অধিক পরিমাণে সঞ্চিত হওয়া। ফলে অক্সিন কান্ডের মাটির দিকের অংশে বেশি পরিমাণে সঞ্চিত হয়। আবার কান্ডের কোশগুলি অধিক ঘনত্বের অক্সিনে দ্রুত বিভাজিত হয়। তাই মাটির দিকের কান্ডের কোশগুলি দ্রুত বিভাজিত হওয়ায় চারাগাছটি বেঁকে মাটির সঙ্গে প্রায় লম্বভাবে ওপরের দিকে বাড়তে শুরু করে।

7. কৃষিক্ষেত্রে সংশ্লেষিত বা কৃত্রিম উদ্ভিদ হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ আলোচনা করো।
উত্তরঃ- বিভিন্ন কৃত্রিম হরমোন গুলি সহজলভ্য ও সস্তা হওয়ায় বর্তমানে কৃষি ও উদ্যানবিদ্যায় এদের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নীচে বিভিন্ন কৃত্রিম হরমোনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করা হল –
i) শাখা কলম থেকে অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি: শাখা কলমের দ্বারা অতিদ্রুত উদ্ভিদের কৃত্রিম অঙ্গজ জননে মূল ও মুকুল সৃষ্টি করার জন্য IBA, NAA প্রভৃতি কৃত্রিম অক্সিন ব্যবহার করা হয়। তাড়াতাড়ি মূল সৃষ্টির ফলে অপত্য উদ্ভিদের উৎপাদন দ্রুত হয়। এইভাবে কৃত্রিম হরমোন ব্যবহারে গোলাপ, জবা, বেল ইত্যাদি ফুল গাছ ও আম, লেবু, পেয়ারা প্রভৃতি ফলের গাছে শাখা কলম তৈরি করা হয়।
ii) অপরিণত ফলের মোচন রোধ: 2, 4-D; NAA প্রভৃতি কৃত্রিম অক্সিনের দ্রবন স্প্রে করে আম, লেবু, পেয়ারা, আঙ্গুর, নাশপাতি প্রভৃতি উদ্ভিদের অপরিণত ফলের অকালমোচন রোধ করা হয়।
iii) আগাছা নির্মূলকরণ: কৃষি কাজে আগাছা গুলি শস্য উদ্ভিদের প্রধান শত্রু। তাই ধান, গম, জব প্রভৃতি ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত উদ্ভিদ বা আগাছা নির্মূল করার জন্য 2, 4-D; MCPA প্রভৃতি কৃত্রিম অক্সিন প্রয়োগ করা হয়।
iv) পার্থেনোকার্পিক (বিজহীন) ফল সৃষ্টি: পরাগযোগ ও নিষেক ছাড়া ডিম্বাশয়ে IBA-জাতীয় কৃত্রিম অক্সিন এবং কৃত্রিম জিব্বেরেলিন হরমোন প্রয়োগ করে বীজহীন বড় ফল উৎপাদন করা হয়। এইভাবে উৎপন্ন ফলকে পার্থেনোকার্পিক ফল বলে। এইসব ফলের মধ্যে পেঁপে, পেয়ারা, আঙ্গুর, কলা প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
v) ক্ষতস্থান পূরণ: চা, আপেল, নাশপাতি, পাতাবাহার প্রভৃতি উদ্ভিদের ডাল ছাটার পর বেশি ঘনত্বের কৃত্রিম অক্সিন ছিটিয়ে কেলাস কোষের গঠন ত্বরান্বিত করে ক্ষতস্থার মেরামত করা হয়। ফলে ক্ষতস্থান রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেনা।
vi) অংকুরোদগম ত্বরান্বিত করা: কৃত্রিম জিব্বেরেলিন প্রয়োগের দ্বারা বীজের সুপ্ত অবস্থা ভঙ্গ করে দ্রুত অঙ্কুরোদগম ঘটানো হয়।
vii) ফল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি: আনারস, আপেল, লেবু প্রভৃতি গাছের ফল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য কৃত্রিম হরমোনের দ্রবন স্প্রে করা হয়।
viii) পুষ্প পরিস্ফুটনের নিয়ন্ত্রণ: কৃত্রিম অক্সিন (NAA) প্রয়োগের দ্বারা পুষ্পমুকুলেদ্রুত পরিস্ফুটন ত্বরান্বিত করা হয়। এছাড়া জিভেরেলিন প্রয়োগে দ্বিবর্ষজীবী উদ্ভিদে প্রথম বছর ফুল উৎপন্ন করা যায়।

8. সাইটোকাইনিন এর প্রধান বৈশিষ্ট্য ও শারীরবৃত্তি ও কাজ লেখ
উত্তরঃ- সাইটোকাইনের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল –
i) এটি N2-যুক্ত, অ্যাডিডিন গোষ্ঠীভুক্ত ক্ষারীয় উদ্ভিদ হরমোন।
ii) এটি জলে দ্রবণীয়, ব্যাপনক্ষম ও প্রবাহ উভমুখী।
iii) এটি উভয় সংবহন কলার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।
iv) এটি বীজের সস্যে ও ফলে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে সঞ্চিত থাকে।
v) উদ্ভিদকোশের সাইটোপ্লাজম এর বিভাজন তথা সাইটোকাইনেসিসের সাহায্য করে।

সাইটোকাইনিনের শারীরবৃত্তীয় ও কাজ: সাইটোকাইনিন উদ্ভিদের যে সমস্ত শরীরবৃত্তীয় কাজ গুলিকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে, সেগুলি হল –
i) কোশ বিভাজন: সাইটোকাইনের উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গের ভাজক কলায় কোশগুলির দ্রুত বিভাজনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
ii) বার্ধক্য বিলম্বিতকরণ: সাইটোকাইনিনের প্রভাবে উদ্ভিদের জরা ও বার্ধক্য বাধাপ্রাপ্ত হয়। উদ্ভিদের বিচ্ছিন্ন পাতার ক্লোরোফিল সংরক্ষণেও এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। একে রিচমন্ড-ল্যাং প্রভাব বলে।
iii) কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি: এই হরমোন অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি রোধ এবং কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ও পরিস্ফুটনকে ত্বরান্বিত করে।
iv) অঙ্গ-বিভেদ নিয়ন্ত্রণ: ক্যালাস টিসু থেকে বিটপ গঠনে অধিক মাত্রায় সাইটোকাইনিন সাহায্য করে।

Class 10 Life Science Chapter 01 Part 02 Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর Part 02 উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন-এর দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

Shares:

Related Posts

class-10-geography-chapter-01-question-answer
Class 10

Class 10 Geography Chapter 01 Question Answer দশম শ্রেনীর ভূগোল অধ্যায় ০১ “ভূমিরূপ এবং তার শ্রেণীবিভাগ” অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

এই নিবন্ধে আমরা দশম শ্রেণির ভূগোল প্রথম অধ্যায় "ভূমিরূপ এবং তার শ্রেণীবিভাগ” অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 10 Geography Chapter 01 Question Answer Class 10 Geography Chapter 01
Class-10-Life-Science-Chapter-01-MCQ-Answer
Class 10

Class 10 Life Science Chapter 01 MCQ Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 সাড়াপ্রদান ও ভৌতসমন্বয়-স্নায়ুতন্ত্রর বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

Class 10 Life Science Chapter 01 MCQ Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় - স্নায়ুতন্ত্রর অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর এই নিবন্ধে আমরা মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান
Class 10

Class 10 Life Science Chapter 01 Part 03 Fill Blank True False Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর Part 03 প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় – হরমোন – এর শূন্যস্থান পূরণ ও সত্য মিথ্যা উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

Class 10 Life Science Chapter 01 Part 03 Fill Blank True False Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 01 এর Part 03 প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় - হরমোন