Class 10

Class 10 History Chapter 01 Short Question Answer | মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় 01 – ইতিহাসের ধারণা – এর 72 টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর

Class 10 History Chapter 01 Short Question Answer | মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় 01 – ইতিহাসের ধারণা – এর 72 টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর

এই নিবন্ধে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারণা থেকে 72 টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর আমরা জানবো। Class 10 History Chapter 01 Short Question Answer | মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় 01 – ইতিহাসের ধারণা – এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর

Class 10 History Chapter 01 Short Question Answer | মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় 01 – ইতিহাসের ধারণা – এর 72 টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর

1. সামাজিক ইতিহাস কি?
উত্তরঃ- 1960 ও 1970 -এর দশকে ইউরোপ ও আমেরিকায় ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে প্রচলিত রাজনৈতিক, সামরিক, সাংবিধানিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসের পরিবর্তে সমাজের অবহেলিত দিকগুলিসহ সমগ্র সমাজের ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় যা নতুন সামাজিক ইতিহাস নামে পরিচিত। এই ইতিহাস সংশোধনবাদী ইতিহাস নামে ও পরিচিত।
প্রথমত, এই ইতিহাসের বিভিন্ন দিকগুলি হল – সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, জাতি-বর্ণ ও জাতিবিদ্বেষ, হিংসা ও সম্প্রীতি।
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চায় যুক্ত গবেষকরা হলেন ইউজিন জেনোভিস, হারর্বাট গুটম্যান, রঞ্জিত গুহ, জ্ঞানেন্দ্র পান্ডে, শাহিদ আমিন, সুমিত সরকার, গৌতম ভদ্র, দীপেশ চক্রবর্তী।

2. মার্কসবাদী ইতিহাস চর্চা বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের উদগাতা কার্ল মার্ক্সের অনুসৃত অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ, ঐতিহাসিক বস্তুবাদ ও দ্বন্দ্ব মূলক বস্তুবাদ এর ওপর ভিত্তি করে উনিশ শতক থেকে ইতিহাস চর্চায় যে নতুন ধারার সূচনা হয়েছে তা মার্কসবাদী ইতিহাস চর্চা নামে পরিচিত।
এই ইতিহাসচর্চার উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল –
প্রথমত, ইতিহাসকে বিশ্লেষণের সময় শোষক-শোষিত সম্পর্ক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উৎপাদনের ধরন এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, মার্কসবাদী ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন এরিক হবসবম, ক্রিস্টোফার হিল, রজনীপাম দত্ত, সুশোভন সরকার, ইরফান হাবিব প্রমুখ।

3. নিম্নবর্গের ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- 1982 খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ গুহ নিম্নবর্গের ইতিহাস রচনা পদ্ধতির কথা তুলে ধরেন যা সাবল্টার্ন স্টাডিজ নামে পরিচিত। এই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিক গুলি হল –
প্রথমত, প্রচলিত ইতিহাসচর্চায় সমাজের উচ্চবর্গের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হত; কিন্তু এই ইতিহাসচর্চায় নিম্নবর্গ অর্থাৎ কৃষক, শ্রমিক, শহুরে জনতা, আদিবাসী এবং সমাজের নিম্নস্তরের মানুষ বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় আন্দোলনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, নিম্নবর্গের ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জ্ঞান পাণ্ডে, স্টিফেন হেনিংহাম, দীপেশ চক্রবর্তী, গৌতম ভদ্র, শাহিদ আমিন প্রমুখ।

4. ইতিহাসচর্চায় ‘অ্যানাল স্কুল’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- বিশ শতকে ফ্রান্সে ঐতিহাসিক মার্ক ব্লখ ও লুসিয়েন ফেভার ‘দ্যা অ্যানালস’ পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে ইতিহাসচর্চায় যে নতুন ঘরানার সূচনা করেন তা হল ‘অ্যানাল স্কুল’।
এই ধরনের ইতিহাস চর্চায় –
প্রথমত, সামাজিক ইতিহাসসহ সার্বিক ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
দ্বিতীয়ত, ভৌগোলিক কাঠামো, আর্থসামাজিক পটভূমি, জনসংখ্যাতত্ত্ব, মানসিক প্রবণতার ওপর গুরুত্ব দান করে ইতিহাস রচনার কাজ শুরু করা হয়।

5. ইতিহাসচর্চায় ভিকোর মতামত কি?
উত্তরঃ- ইতালির ঐতিহাসিক ও মানবতাবাদী দর্শনের প্রবক্তা গিয়ান বাতিস্তা ভিকোর মতে,

  • ইতিহাস হল মানব সমাজ ও তার প্রতিষ্ঠান সমূহের বিবর্তনের কাহিনি।
  • পূর্ব পরিকল্পিত ধারণা বা অবরোহী পদ্ধতিতে ইতিহাসচর্চার পরিবর্তে তিনি ঐতিহাসিক পদ্ধতি ও ঐতিহাসিকের সৃজনশীল মানসিকতার উপর জোর দেন।
  • তিনি ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করেন – দেবতা, বীরনায়ক, সাধারণ মানুষের যুগ।

6. প্রচলিত ইতিহাসচর্চা কি?
উত্তরঃ- প্রচলিত ইতিহাস বলতে বোঝায় –
প্রথমত, রাজার যুদ্ধজয়, দেশশাসন, রাজস্ব আদায় ও সংবিধানিক কাজকর্মের ইতিহাসই ছিল প্রচলিত ইতিহাসচর্চার মূল বিষয়।
দ্বিতীয়ত, বিশ শতকের গোড়া থেকে এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় সমাজ ও অর্থনীতির অন্য বিষয়গুলিও যুক্ত হতে শুরু করে।
তৃতীয়ত, এই ধরনের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ঐতিহাসিকরা হলেন লর্ড মেকলে, টমাস কার্লাইল প্রমুখ।

7. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গুলি চিহ্নিত করো।
উত্তরঃ- আধুনিক ইতিহাস চর্চার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি হল – যুক্তিবাদী, আপেক্ষিকতাবাদী, দৃষ্টবাদী, মার্কসবাদী, প্রত্যক্ষবাদীর দৃষ্টিভঙ্গি। এছাড়াও রয়েছে অ্যানাল গোষ্ঠীর মতবাদ, জাতীয়তাবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, নিম্নবর্গীয় মতবাদ এবং সামগ্রিক সমাজ বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি।

8. ঐতিহাসিকের কাজ কি?
উত্তরঃ- ঐতিহাসিকের কাজ হল –
প্রথমত, তত্ত্ব অনুসন্ধান উপস্থাপন ও তা বিশ্লেষণ।
দ্বিতীয়ত, ঐতিহাসিক লিওপোল্ড ভন র‍্যাঙ্কের মতে, যেমনভাবে ঘটনা ঘটেছিল ঠিক সেভাবেই তুলে রাখা হল ঐতিহাসিকের কাজ।
তৃতীয়ত, ঐতিহাসিক লর্ড অ্যাকটনের মতে, ঐতিহাসিকের দেওয়া তথ্যের ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ ছাড়া ইতিহাস অর্থহীন।

9. আধুনিক ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- অষ্টাদশ শতক থেকে শুরু করে বিংশ শতকে শেষ পর্যন্ত সমকালের ইতিহাস চর্চা আধুনিক ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত।
প্রথমত, যুক্তিবাদ, প্রগতিবাদ, রোমান্টিক ভাবধারা ও বৈজ্ঞানিক ভাবধারা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে এই ইতিহাসচর্চা।
দ্বিতীয়ত, বিজ্ঞানসম্মত, প্রতিষ্ঠানিক ও পেশাজীবী ইতিহাসচর্চা হল আধুনিক ইতিহাসচর্চার মূল বৈশিষ্ট্য।

10. ‘ইতিহাস তত্ত্ব’ কি?
উত্তরঃ- ইতিহাস রচনার পদ্ধতি ও ইতিহাস বিষয়ে অনুসন্ধানের কলাকৌশল ইতিহাস তত্ত্ব নামে পরিচিত। ইতিহাস তত্ত্বের কয়েকটি দিক হল – ইতিহাস তত্ত্ব, রোমান ইতিহাস তত্ত্ব, খ্রিস্টান ইতিহাস তত্ত্ব, মধ্যযুগীয় ইতিহাস তত্ত্ব, রেনেসাঁ ইতিহাস তত্ত্ব ও আধুনিক ইতিহাস তত্ত্ব।

11. ঐতিহাসিক তত্ত্ব কি?
উত্তরঃ- মানব সমাজের বিভিন্ন ঘটনার সমসাময়িক দলিল দস্তাবেজ বা অন্যান্য লিখিত ও প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের মধ্যে নিহিত থাকে। একজন ঐতিহাসিক বা গবেষক এই সমস্ত উপাদান থেকে সঠিক তথ্য নির্বাচন করে ইতিহাস রচনা করে। এইসব আকার সূত্র ঐতিহাসিক তথ্য নামে পরিচিত।

12. ইতিহাস কি?
উত্তরঃ- মানব সমাজের অতীত কাহিনী ইতিহাস নামে পরিচিত এর বিভিন্ন দিক হল –
প্রথমত, এর মূল বিষয় হল সময়, মানুষ ও সমাজ অর্থাৎ মানুষ ও তার সমাজের ক্রম বিবর্তনের ধারাবাহিক বর্ণনাই হল ইতিহাস।
দ্বিতীয়ত, অতীতের রাজনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কার্যকর্মও ইতিহাসের অন্তর্গত।
তৃতীয়ত, ঐতিহাসিক ও হেরোডোটাস ও থুকিডিডিস যথাক্রমে ‘ইতিহাসের জনক’ ও ‘বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাসের জনক’ নামে পরিচিত।

13. নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠান ও তার মুখপত্রের নাম কি?
উত্তরঃ- নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চার প্রতিষ্ঠানটি হল ‘দ্য সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’(1976খ্রিস্টাব্দে)। এটির মুখপত্র হল ‘সোশ্যাল সাইন্স হিস্ট্রি’।

14. ইংল্যান্ডের ক্রিকেট খেলার উদ্ভবকে কিভাবে চিহ্নিত করবে?
উত্তরঃ- আজ থেকে প্রায় 500 বছর আগে ইংল্যান্ডে ‘স্টিক অ্যান্ড বল’ নামক খেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার উদ্ভব ঘটেছে।
প্রথমত, প্রাক-শিল্প বিপ্লব পর্বের এই খেলায় হাতে তৈরি কাঠের ব্যাট ও স্ট্যাম্প বেল’ বল ব্যবহার করা হতো এবং আঠারো শতকে এই খেলা একটি পরিণত খেলার চরিত্র লাভ করে।
দ্বিতীয়ত, 1747 খ্রিস্টাব্দে প্রথম ক্রিকেটের নিয়মবিধি রচিত হয়। 1860 এর দশকে ইংল্যান্ডের হাম্বেলডন-এ প্রথম ক্রিকেট ক্লাব গঠিত হয় এবং 1780-র দশকে শুরু হল ‘ক্রিকেটের অভিভাবক’ রূপে পরিচিত মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব(MCC)।

15. খেলার ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- আধুনিক সভ্যতায় অবসর বিনোদন ও শারীরিক দক্ষতা প্রদর্শনের একটি বিশেষ মাধ্যম হল খেলা বা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
প্রথমত, বিশ দশকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, টেনিস, গলফ, দাবা, রাগবি প্রভৃতি খেলার উদ্ভব, বিবর্তন প্রসার ও প্রভাব সম্পর্কে চর্চা শুরু হয় যা খেলার ইতিহাস নামে পরিচিত।
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন জে.এ.ম্যাসান, রিচার্ড হোল্ড, গ্রান্ট জারভিস, মাইকেল ম্যাক কিনলে, আশিস নন্দি, রামচন্দ্র গুহ, বরিয়া মজুমদার।

16. ইতিহাসচর্চা কি সত্যিই নিখুঁত ও বাস্তবসম্মত?
উত্তরঃ- ইতিহাস চর্চা কতটা নিখুঁত ও বিজ্ঞানসম্মত এই বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জার্মান লেখক মনে করেন ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিককে এক সারিতে বসানো যাওয়া যায় না। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে, ঐতিহাসিক তার নিজস্ব ধ্যান ধারণার উপর ভিত্তি করে ইতিহাস লেখেন। সমস্ত ঐতিহাসিক তার সমসাময়িক কালের চিন্তাভাবনা দ্বারা প্রভাবিত হয়। ই.এইচ.কার অনুরূপভাবে মনে করেন ঐতিহাসিক তার নিজের সময়ের আয়নায় অতীত ঘটনাক্রম কে বাছাই করে।

17. ভারতের রন্ধনশৈলী কি?
উত্তরঃ- ভারতে মূলত চার ধরনের রন্ধনশৈলী রয়েছে।
প্রথমত, উত্তর ভারতীয় রন্ধনশৈলী(বেনারস, কাশ্মীর, দিল্লি, পাঞ্জাব ও রাজস্থান)
দ্বিতীয়ত, দক্ষিণ ভারতীয় রন্ধনশৈলী (অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল ও তামিলনাড়ু)
তৃতীয়ত, পূর্ব ভারতীয় রন্ধনশৈলী (বাংলা ও অসম)
চতুর্থ্‌ত, পশ্চিম ভারতীয় রন্ধনশৈলী (মহারাষ্ট্র, মালব ও গুজরাট)

18. ভারতের উপনিবেশিক শাসনপর্বে ভারতের খাদ্যাভ্যাসে কী পরিবর্তন হয়?
উত্তরঃ- উপনিবেশিক শাসন পর্বে ভারতের খাদ্যাভ্যাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলি হল –
প্রথমত, ভারতীয়রা ডাল,ভা্‌ সবজি রুটি ও আমিষ খাবারের পাশাপাশি পাশ্চাত্য খাবারের প্রতিও আকৃষ্ট হয়।
দ্বিতীয়ত, বিদেশী খাবারের প্রতি এই আকর্ষণ শহরে বসবাসকারী ইংরেজি শিক্ষিত উচ্চবিত্ত শ্রেণীর একাংশের মধ্যে সীমিত ছিল।
তৃতীয়ত, এরা শাসক-ইংরেজদের ভোজসভায় উপস্থিত হয়ে এদেশীয় সামাজিক বিধিনিষেধ ভেঙে নিষিদ্ধ মাংস, চা, কফি,সিগারেট ও মদ্যপান করত।

19. খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস চর্চা বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য ও খাদ্যভ্যাসে সম্পর্কিত তথ্যাবলী আলোচনাই খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত।
প্রথম্‌ত, এর মূল বিষয় হল দেশি ও বিদেশী খাবার গ্রহণ বা বর্জন দেশজ উপনিবেশিক খাদ্যসংস্কৃতির মধ্যে সংঘাত, স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসে, বিভিন্ন ধরনের খাবার উদ্ভব ও তার বিবর্তন আলোচনা।
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষক হলেন টমাস উইলসন, বব অ্যাসলে, বেন টেলর, জেফ্রে পিলজার, হরিপদ ভৌমিক, তপন রায়চৌধুরী, শরিফউদ্দিন আহমেদ, কে.টি.আচয়।

20. পোলো খেলার সূচনা ও বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তরঃ- পোলো খেলার উদ্ভব হয় ইংল্যান্ডে। ঘোড়ার পিঠের চেপে পোলো স্টিকের সাহায্যে হল বলকে নিয়ন্ত্রণ করে বিপক্ষ দলকে পরাজিত করায় এই খেলার রীতি। ভারতে ইংরেজ শাসক ও সৈন্যদের মাধ্যমেই পোলো খেলার প্রসার ঘটেছিল।

21. মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব বিখ্যাত কেন?
উত্তরঃ- 1889 খ্রিস্টাব্দে ফুটবল খেলার একটি প্রতিষ্ঠান বা ক্লাব রূপে গড়ে ওঠে ‘মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব’। এই ক্লাব বিখ্যাত কারণ –

প্রথমত, 1911 খ্রিস্টাব্দে আই.এফ.এ শিল প্রতিযোগিতার বুটপড়া ইংরেজ খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে মোহনবাগান ক্লাবের খেলোয়াড়রা জয় লাভ করে।
দ্বিতীয়ত, এই ঘটনা ইংরেজবিরোধী জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি করে সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটেছিল।

22. কাকে এবং কেন ভারতীয় ফুটবলের জনক বলা হয়?
উত্তরঃ- নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীকে ভারতীয় ফুটবলের জনক বলা হয়। কারণ –
i) তিনি কিশোর বয়সেই ফুটবলার রূপে এবং পরবর্তীকালে ‘বয়েজ ক্লাব’, ‘ফ্রেন্ডস ক্লাব’, ‘ওয়েলিংটন ক্লাব’ প্রভৃতি সংগঠক রূপে বাংলা ফুটবল খেলার ক্ষেত্রে এক নবজাগরণ আনেন।
ii) দেশবাসীকে ফুটবল খেলার মাধ্যমে শারীরিকভাবে শক্তপোক্ত করে তুলে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছিলেন।
iii) তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেই দুখিরাম মজুমদার, মন্মন গাঙ্গুলী,কালীচরণ মিত্তির ও হরিদাস শীল প্রমুখ ফুটবল খেলাকে জনপ্রিয় চেষ্টা করে।

23. ভারতে কিভাবে হকি খেলার সূচনা হয়?
উত্তরঃ- ভারতের মূলত ইংরেজ সৈন্যবাহিনীর হাত ধরেই হকি খেলার প্রসার ঘটে এবং কলকাতায় ভারতের প্রথম হকি ক্লাব প্রতিষ্ঠা হয়। বিশ শতকে 1928 খ্রিস্টাব্দে অলিম্পিক গেমসে ভারত প্রথম অংশগ্রহণ করে এবং শেষ পর্যন্ত ফাইনাল খেলায় হল্যান্ডের কাছে ভারত 3-0 গলে পরাজিত হয়। ধ্যানচাঁদ ছিলেন ভারতের একজন বিখ্যাত হকি খেলোয়াড়।

24. ভারতে কিভাবে ক্রিকেট খেলার সূচনা হয়?
উত্তরঃ- 1721 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজদের হাত ধরেই ভারতের ক্রিকেট খেলার সূচনা হলেও তা ভারতস্থ ইংরেজ সামরিক বাহিনী ও শ্বেতাঙ্গদের ক্লাব বা জিমখানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীকালে আঠারো শতকের শেষে ভারতে প্রথম ক্রিকেট ক্লাব রূপে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব’ এবং 1848 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে পারসিদের ওরিয়েন্টাল ক্রিকেট ক্লাব।
দ্বিতীয়ত, ভারতে হিন্দু, পারশি,মুসলিম ও খ্রিস্টান দলের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলানো হত।

25. ক্রিকেট খেলার প্রাথমিক পর্বের কয়েকটি দিক উল্লেখ কর।
উত্তরঃ- ক্রিকেট খেলার গোড়ার দিকের কয়েকটি বিষয় হল –
i) নির্দিষ্ট মাপের বল ও ব্যাট এবং 22 গজের পিচ ও উইকেট ব্যবহৃত হত।
ii) খেলার মাঠের আকৃতি ডিম্বাকৃতি হলেও এর দৈর্ঘ্য বা আয়তনের কোন নির্দিষ্ট মাপ ছিল না।
iii) প্রথমদিকে এই খেলার সময়সীমা নির্দিষ্ট না থাকলেও পরের তিনদিনের টেস্ট বা নির্দিষ্ট ওভারের কয়েক দিনের ম্যাচ শুরু হয়।

26. ঢাকাই খাবার কি?
উত্তরঃ- সুলতানি ও মুঘল শাসনকালে বাংলার প্রচলিত খাদ্যাভাসে(ভাত,ডাল ও নিরামিষ খাবার) পরিবর্তন এসেছিল। পুরাতন ঢাকা এলাকায় অযোধ্যার নবাবী খাবারের(কাবাব,নান, কাচ্চি ও পাক্কি বিরিয়ানি, হালিম, মাটন, ভূনি খিচুড়ি) প্রচলন ঘটে, এর পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সরষের তেল,ঘি ও বিভিন্ন মসলা সহযোগে বিভিন্নধর্মী তরকারি ও ইলিশ, পাবদা, রুই, চিতল, ভেটকি মাছের বিভিন্ন পদ প্রচলিত ছিল এই বৈচিত্র খাবার ঢাকায় খাবার নামে পরিচিত।

27. সত্যজিৎ রায় বিখ্যাত কেন?
উত্তরঃ- সত্যজিৎ রায় বিখ্যাত ছিলেন কারণ –
i) সত্যজিৎ রায় ছিলেন একাধারে চিত্রশিল্পী, সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক ও বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অস্কার পুরস্কার প্রাপক।
ii) বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বাগ্রগ্রহণ কারণ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনী অবলম্বনে তিনি “পথের পাঁচালী” নামক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। যা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বীকৃতি ও প্রশংসা লাভ করে।
iii) তার অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল “গুপী গাইন বাঘা বাইন”, “অপুর সংসার”, “শাখা প্রশাখা”, “নায়ক”, “আগন্তুক”।

28. বাংলা চলচ্চিত্রের আদিপর্বের ইতিহাস বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ- 1896 খ্রিস্টাব্দে ভারতের সিনেমা বা চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি বাংলা ভাষাতেও চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথম বাংলা ছবি “বিল্বমঙ্গল” ছিল নির্বাক ছবি, কিন্তু 1931 খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পাই “জামাইষষ্ঠী” নামক সবাক ছবি। পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিককুমার ঘটক, মৃণাল সেনের হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্র পরিণত হয়ে ওঠে এবং সত্যজিৎ রায়ের “পথের পাঁচালী” দেশ ও আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি লাভ করে।

29. ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রাথমিক ইতিহাস কিভাবে চিহ্নিত করবে?
উত্তরঃ- উপনিবেশিক শাসনপর্বে ভারতে 1896 খ্রিস্টাব্দে হরিশচন্দ্র সখারাম ভাতাওয়াডেকর ‘দ্য রেস্টলারস’ নামক একটি সচল ও নির্বাক ছবি নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে ধুন্দিরাজ গোবিন্দ ফালকে তৈরি করেন “রাজা হরিশচন্দ্র” নামক চলচ্চিত্র। তবে “আলম আরা” চলচ্চিত্রটি ছিল ভারতের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। ভারতের হীরালাল সেন প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন এবং ওই উদ্দেশ্য ও উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি’।

30. চলচ্চিত্রের ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- উনিশ শতকে দ্বিতীয়ার্ধে উন্নত ক্যামেরার মাধ্যমে সচল ছবি তোলার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন ঘটে এবং অগাস্ট লুমিয়ের ও লুই লুমিয়ের নামক দুই ভাইয়ের হাত ধরে প্যারিসে প্রথম চলচ্চিত্রের উদ্ভব ঘটে।
প্রথমত, প্রথমদিকে কোন ঘটনা বা গল্পকে কেন্দ্র করে তৈরি এই সচল ছবি ছিল নির্বাক, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিশ শতকের গোড়ায় আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের সবাক ও সচল ছবি তৈরি হয়, যার চলচ্চিত্র নামে পরিচিত।
দ্বিতীয়ত, চলচ্চিত্রের উদ্ভব ও বিবর্তন সম্পর্কে বিশেষভাবে জড়িত ছিলেন ফিলিপ বি জারিল্লি, চার্লস রাসেল ডে, সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিককুমার ঘটক, গিরিশ কারনাড, আদুর গোপালকৃষ্ণান প্রমুখ।

31. নৃত্যশিল্পের ইতিহাসের কয়েকটি দিক চিহ্নিত কর।
উত্তরঃ- নৃত্যকলাচর্চার উদ্ভব,বিবর্তন ও তার প্রভাব সংক্রান্ত ইতিহাসচর্চা নৃত্যশিল্পের ইতিহাস নামে পরিচিত। এর কয়েকটি দিক হল –
i) ছন্দ বা গানের তালে তালে মানবশরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সঞ্চালনই হল নৃত্য।
ii) শাস্ত্রীয় ও ধর্মীয় নৃত্যের পাশাপাশি ভাবাবেগ প্রকাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের নৃত্য(মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিপ হপ নৃত্য, চীনের ইয়াংকো নৃত্য, ভারতের কত্থক, ফ্রান্স ও রাশিয়ার ব্যালে নৃত্য) রয়েছে।
iii) এই ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তারা হলেন ক্যারল ওয়েলস, ফিলিপ বি জারিল্লি, জ্যাকব বুর্খাহার্ট, চার্জস রাসেল ডে, তপতী গুহঠাকুরতা।

32. শিল্পচর্চার ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- মানুষ যখন কোন শিল্প মাধ্যম, যথা – (সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র) – কে বেছে নিয়ে তার সুকুমার বৃত্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটায় তখন তা শিল্পচর্চা নামে পরিচিত। তাই –
i) শিল্পচর্চার উদ্ভব, বিবর্তন ও প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করায় শিল্পচর্চার ইতিহাস নামে পরিচিত।
ii) এই ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন – ক্যারল ওয়েলস, ফিলিপ বি জারিল্লি, জ্যাকব বুর্খাহার্ট, নীহাররঞ্জন রায়, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়, অশোক মিত্র, হিতেশরঞ্জন সান্যাল, তপতী গুহঠাকুরতা।

33. পোশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাস কি?
উত্তরঃ- পোশাক পরিচ্ছদের উদ্ভব ও তার বিবর্তনকে চিহ্নিত করা এবং পোশাক কিভাবে কৃতিত্ব ও অভিজাত্যের মাপকাঠি হয়ে উঠেছিল তা ব্যাখ্যা করাই হলো পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস। এই ইতিহাসের দিকগুলি হল –
প্রথমত, ভৌগোলিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক অভিরুচি, সামাজিক রীতি কিভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রেও প্রভাবিত তা চিহ্নিত করা এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য।
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন – ম্যাথিউস সোয়ার্জ, কার্ল কোহলার, এম্মা টারলো, এল টেলর, পিটার ম্যাকনিল, রবার্ট রস, মলয় রায়।

34. ‘দ্য সেকেন্ড সেক্স’ – গ্রন্থটির রচয়িতা কে? গ্রন্থটির আলোচ্য বিষয় কি?
উত্তরঃ- ‘দ্য সেকেন্ড সেক্স’ – গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন সিমোন দ্য বোভোয়ার। এই গ্রন্থটির আলোচ্য বিষয় হল –
প্রথমত, পিতৃতান্ত্রিক সভ্যতায় নারীর বঞ্চনা ও অধিকারহীন অবস্থানের ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, পুরুষ কখনো নারীকে মানুষ হয়ে উঠতে দেয়নি তাই নারী যতদিন নারী হয়েই থাকবে ততদিন প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারবে না।
তৃতীয়ত, তিনি বলেছেন, ‘কেউ নারী হয়ে জন্ম নেয় না, বরং হয়ে ওঠে’।

35. নারী ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তরঃ- নারী ইতিহাসচর্চার উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব হল –
i) সভ্যতার ইতিহাসে রাজনৈতিক, অর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে।
ii) লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ ও নারী পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই ইতিহাসচর্চা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।
iii) ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে প্রচলিত ইতিহাসের সংশোধন করতে চেয়ে নারী-ইতিহাস এক বিকল্প ইতিহাসচর্চার সন্ধান দিয়েছে।

36. নারী ইতিহাস কি?
উত্তরঃ- প্রচলিত পুরুষকেন্দ্রিক ইতিহাসের সংশোধন ঘটিয়ে সমাজ ও সভ্যতা ইতিহাসে নারীর অবদান ও ভূমিকার পুনর্মূল্যায়ন সংক্রান্ত ইতিহাস চর্চায় হল নারী-ইতিহাস। এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য হল –
প্রথমত, প্রথমদিকে প্রভাবশালী নারীদের সম্পর্কে ইতিহাস চর্চা করা হলেও বর্তমানে সাধারণ নারীরা এর অন্তর্গত।
দ্বিতীয়ত, সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নারীর ভূমিকা ও অংশগ্রহণকে চিহ্নিত করাই এই ইতিহাসের প্রধানতম দিক।
তৃতীয়ত, নারী-ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন – মেরি ওলস্টনস্ক্রাফট, সিমোন দ্য বোভোয়ার, জি লার্নের, বারবারা কান, স্টিভেন মিনজ, লুই এ টিল্লি, জেরাল্ডিন ফরবেশ, শমিতা সেন, নীরা দেশাই।

37. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাাবিদ্যার ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিকাশ ও বিবর্তন প্রযুক্তির উদ্ভব ও তার অগ্রগতি এবং চিকিৎসাবিদ্যার বিবর্তন সম্পর্কিত ইতিহাসচর্চা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস নামে পরিচিত। এই ইতিহাসের মূল কথা হল –
প্রথমত, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যা কিভাবে মানবসমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে তার অগ্রগতির পরিমাপ করা।
দ্বিতীয়ত, আদিম সভ্যতা থেকে আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার উত্তরণই হল এই ইতিহাসচর্চার পরিধি, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন – টমাস কুন, সি ডি ড্যামপিয়ার, আই.গোল্ডস্টাইন, জে ডি বারনাল, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডেভিড আরনল্ড, এস জি ব্রাস, দীপকুমার, আর্নস্ট মেয়র।

38. ভারতের সংগঠিত দুটি পরিবেশ আন্দোলনের নাম লেখ।
উত্তরঃ- ভারতে অনুষ্ঠিত দুটি পরিবেশ আন্দোলন হল –
i) 1960 -এর দশকে উত্তরপ্রদেশের আদিবাসী নারী-পুরুষ সরলা বেন ও সুন্দরলাল বহুগুনার নেতৃত্বে অরণ্য সংরক্ষণ আন্দোলন গড়ে ওঠে যা ‘চিপকো আন্দোলন’ নামে পরিচিত।
ii) উত্তরখন্ডের গড়োয়াল জেলায় ভাগীরথী ও ভীলাঙ্গনা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত তেহেরি শহরকে জনমুক্ত করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সুন্দরলাল বহুগুনার নেতৃত্বে এর বিরুদ্ধে পরিবেশ রক্ষার যে আন্দোলন গড়ে ওঠে তা ‘তেহারি গড়োয়াল আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

39. পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কি?
উত্তরঃ- পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব হল –
i) মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে পরিবেশের ভূমিকা চিহ্নিত করে পরিবেশ সচেতনতা ও পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করা।
ii) পরিবেশ সংকট ও তার প্রকৃতি, পরিবেশ বিপর্যয় ও তার ভয়াবহতা, বাসস্থানের সুস্বাস্থ্য, অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও তার প্রয়োগের ব্যবস্থা করা।
iii) পরিবেশের ইতিহাসের সঙ্গে ইতিহাসের অন্য দিকগুলির সম্পর্ক নির্ধারণ।

40. পরিবেশের ইতিহাস কি?
উত্তরঃ- পরিবেশের অর্থাৎ প্রকৃতি জগতের সঙ্গে মানবসমাজের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ইতিহাসই হল পরিবেশের ইতিহাস। এই ইতিহাসের বিভিন্ন দিক গুলি হল –
i) সুপ্রাচীন কালে মানুষের আবির্ভাব হয়। পশুশিকারি জীবন থেকে আধুনিক মানবসভ্যতার উত্তরণের পিছনে পরিবেশের ভূমিকা ও অবদানকে চিহ্নিত করায় এই ইতিহাসের মূল বৈশিষ্ট্য।
ii) 1960 থেকে 1970 -দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংক্রান্ত আলোচনা থেকেই পরিবেশের ইতিহাস চর্চা শুরু হয়েছে। এই ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন – র‍্যাচেল কারসন, ডেভিড আরনল্ড, রামচন্দ্র গুহ, মাধব গ্যাডগিল, রিচার্ড গ্রোভ, স্যামুয়েল পি হাইজ, অ্যান্ড্রু সি ইসেনবার্গ, আলফ্রেড ডব্লিউ ক্রুশ।

41. সামরিক ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ- প্রাচীনকাল থেকে সংঘর্ষের মাধ্যমে ইতিহাসের গতি বেয়ে চলেছে। যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, যুদ্ধাস্ত্রের বিবর্তন, সামরিক বাহিনীর প্রকৃতি, সমরকুশলতা, যুদ্ধের প্রকৃতি ও প্রভাবকে তুলে ধরা হল সামরিক ইতিহাস। এই প্রসঙ্গে –
প্রথমত, পেলোপনিসিয় যুদ্ধ, রামায়ণ ও মহাভারতের যুদ্ধ সহ প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানের সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ঠান্ডা যুদ্ধের এই ইতিহাসচর্চায় স্থান পেয়েছে।
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসের গবেষকরা হলেন – শেলফোর্ড বিডওয়েল, জন টেরাইন, রিচাড কন, যাদুনাথ সরকার, সুরেন্দ্রনাথ সেন, এ জে পি টেলর, বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়, কৌশিক রায়।

42. শহরের ইতিহাস কি?
উত্তরঃ- শহরের উদ্ভব,বিকাশ,বিস্তার ও অবক্ষয় সম্পর্কিত তথ্যের চর্চা হল শহরের ইতিহাস। এই ইতিহাসের দিক গুলি হল –
প্রথমত, শহরের বাসিন্দা ও তাদের সমাজবিন্যাস এবং তাদের কার্যকলাপসহ শহরের অর্থ-রাজনৈতিক, সামাজিক-সংস্কৃতিক গুরুত্বকে চিহ্নিত করা।
দ্বিতীয়ত, 1920 -র দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শহরের ইতিহাস চর্চার সূচনা হয়। শহরের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ঐতিহাসিকরা হলেন – স্টিফেন থার্নস্টর্ম, এডুইন বারোজ, মাইক ওয়ালেস, কলিন জোনস, রোনাল্ড টেলর, ক্রিস্টিন ডাবিন, নারায়নী গুপ্ত, রীনা ওল্ডেনবার্গ।

43. ইতিহাসচর্চার স্থানীয় ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব কি?
উত্তরঃ- স্থানীয় ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব হল –
i) এই ইতিহাসের মাধ্যমে অনালোকিত বিশেষ বিশেষ স্থানের পারিবারিক ও লোকপরম্পরার ইতিহাস, শিল্প স্থাপত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস জানা সম্ভব হয়।
ii) স্থানীয় ইতিহাস যেহেতু একটি অঞ্চলের যেমন গ্রামের বা শহরের ইতিহাস তাই এই ইতিহাসের পরিসর সীমিত কিন্তু বৃহত্তর জাতীয় ইতিহাস স্থানিক ইতিহাসের ওপরেও প্রভাব ফেলে।

44. স্থানীয় ইতিহাস বলতে কী বোঝায়? স্থানীয় ইতিহাসের প্রয়োগিক বৈশিষ্ট্য কি?
উত্তরঃ- ভৌগলিকভাবে স্থানীয় প্রেক্ষিতে স্থানীয় সম্প্রদায়, ব্যাক্তি বা বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ইতিহাসই হল স্থানীয় ইতিহাস। এই ইতিহাস বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
i) স্থানীয় জনশ্রুতি মিথ বা অতিকথন, মৌখিক পরম্পরাকে ভিত্তি করে স্থানীয় ইতিহাস রচনা করা হয় এবং বিভিন্ন স্থানীয় ইতিহাসের সম্বন্ধে দেশের ইতিহাস গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।
ii) এই ধরনের ইতিহাসের ঐতিহাসিকরা হলেন – ডেভিড লুডেন, সতীশচন্দ্র মিত্র, কালিকলম সার্ব্বভৌম, নীহাররঞ্জন রায়, জি এস সরদেশাই, মুন্সি সোহনলাল, নিখিলনাথ রায়, যোগেশচন্দ্র বসু প্রমুখ।

45. নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান কি ছিল?
উত্তরঃ- নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ,
প্রথমত, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমে ইউরোপীয় রীতিতে ছবি আঁকতেন, কিন্তু এই রীতির পরিবর্তে চিত্রশিল্পে দেশীয় ঐতিহ্য প্রবর্তন করে বেঙ্গল বা ওরিয়েন্টাল আর্টের ভিত্তি স্থাপন করেন।
দ্বিতীয়ত, প্রাচীন ভারতের অজন্তা চিত্রকলা এবং মুঘল, রাজপুর চিত্রশৈলীর মিশ্রণ ঘটিয়ে তিনি এক নতুন ঘরানার চিত্ররীতির উদ্ভব ঘটান।
তৃতীয়ত, তিনি ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ ওরিয়েন্টাল আর্ট’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং দৃশ্যশিল্পের ইতিহাস নিয়ে ‘বাঘেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী’ নামক একটি গ্রন্থ ও রচনা করেন।

46. ভারতে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার প্রবর্তন কিভাবে হয়?
উত্তরঃ- ভারতে রেলপথের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামরিক প্রয়োজনে টেলিগ্রাফের বিস্তার ঘটে। 1851 খ্রিস্টাব্দে ভারতে প্রথমে কয়েক মাইলজুড়ে টেলিগ্রাফের বিস্তার ঘটলেও 1856 খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে 46 টি টেলিগ্রাফ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং 4,250 মাই এলাকা টেলিগ্রাফ যোগাযোগের আওতায় আসে।

47. ভারতে রেলপথ ব্যবস্থার প্রবর্তন কিভাবে হয়?
উত্তরঃ- মূলত অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্যে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে রেলপথের ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। প্রথমে মহারাষ্ট্রের বোম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত ছিল এর ব্যাপ্তি। পরবর্তীকালে ‘গ্যারান্টি প্রথা’র মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন স্থানে রেলপথের বিকাশ ঘটে।

48. উনিশ শতকে ভারতে পারসি ও বাঙালিবাবুদের পোশাক কেমন ছিল?
উত্তরঃ- উনিশ শতকে ক্রমশ ভারতে পাশ্চাত্যরীতির পোশা-পরিচ্ছদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং এক্ষেত্রে প্রথমে পারসি ও পরে বাঙালি বাবুদের পোশাক পরিচ্ছদে পরিবর্তন আসে। পারশিরা ঢোলা ফুল প্যান্ট ও কলারবিহীন লম্বা কোট পরত। আবার বাঙালিবাবুরা ধুতির ওপর কোট, মাথায় টুপি ও পায়ে বুট জুতো ব্যবহার করত।

49. পোশাক-পরিচ্ছদের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধির ধারণাটি কী?
উত্তরঃ- আঠারো ও উনিশ শতকে ইউরোপের কয়েকটি দেশে প্রচুর কাপড় দিয়ে মেয়েদের পোশাক তৈরি হলেও অত্যন্ত আটোসাট সেই পোশাক স্বাচ্ছন্দ্যের বদলে অস্বস্তি তৈরি করত এইসব পোশাক মেয়েদের অসুস্থতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই শরীরের পক্ষে আরামদায়ক এবং হাঁটাচলা সুবিধার্থে পোশাক পরিচ্ছদের রীতিতেও পরিবর্তন আসে।

50. যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত ও বার্তা বিনিময়ের জন্য জল, স্থল বা আকাশ পথে ব্যবহৃত যানবাহন এবং ডাকব্যবস্থা ইন্টারনেট প্রভৃতি ক্ষেত্রের বিবর্তন সংক্রান্ত আলোচনাকেই বলা হয় যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস। এই ইতিহাসচর্চায় –
প্রথমত, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের ওপর যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভাবকে চিহ্নিত করা হয়।
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন – জন আর্মস্ট্রং, কলিন ডিভাল, অ্যানড্রু স্কট, ট্মাস জেল্লের, ডেভিড ব্রানডন, উইলিয়াম আর নেস্ট, সুশীল কুমার মুনসি, নীতিন সিনহা।

51. মহাফেজখানা কি?
উত্তরঃ- সরকারি নথিপত্র সংরক্ষণ কেন্দ্র মহাফেজখানা বা লেখ্যগার বা আর্কাইভস নামে পরিচিত। সাধারণ ও গোপন নথিপত্র থাকে। স্বাধীনতার পর কেন্দ্রীয় সরকারের নথি সংরক্ষণাগার রূপে দিল্লিতে গড়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় মহাফেজ খানা এবং রাজ্যস্তরের রাজ্য মহাফেজখানা। ভারতের স্বদেশী আন্দোলন, অসহযো্‌ আইন অমান্য ও ভারতছাড়ো আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্দোলনের প্রাথমিক উপাদান মহাফেজখানায় রয়েছে।

52. আধুনিক ভারত ইতিহাসচর্চার প্রধান উপাদান গুলি কি কি?
উত্তরঃ- আধুনিক ভারত ইতিহাসচর্চার প্রধান উপাদান গুলি হল –
প্রথমত, সরকারি নথিপত্র অর্থাৎ পুলিশ, গোয়েন্দ্‌ সরকারি অফিসার বা আধিকারিকদের প্রতিবেদন, বিবর্‌ চিঠিপত্র এগুলি হল ইতিহাস চর্চার প্রাথমিক উপাদান বা সূত্র।
দ্বিতীয়ত, গণ উপাদান গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, চিঠি পত্র, সাময়িক পত্র ও সংবাদপত্র।
তৃতীয়ত, ফটোগ্রাফি, মুখের কথা, চলচ্চিত্র, মানচিত্র, রেফারেন্স বই, দৃশ্যশিল্প ও ব্যক্তিগত ডায়রি ও ভারত ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

53. সরকারি নথিপত্র থেকে কিভাবে ইতিহাস রচনা করা যায় ?
উত্তরঃ- সরকারি নথিপত্র ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ –
প্রথমত, সরকারি নথিপত্র থেকে বিদ্রোহ ও বিদ্রোহের লক্ষ্য বা বৈপ্লবিক কার্যকলাপ ও তার উদ্দেশ্য বা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সংগ্রামের কথা জানা যায়।
দ্বিতীয়ত, নথি থেকে শিক্ষার প্রসার, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা এবং এইসব বিষয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানা যায়।
তবে সরকারি নথিপত্রগুলি যেহেতু সরকার ও প্রশাসকের দৃষ্টিভঙ্গিতে লেখা তাই এগুলি ব্যবহারের সময় সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

54. আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা কি?
উত্তরঃ- আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা হল ব্যক্তির জীবন ও স্মৃতিমূলক সাহিত্য। ব্যাখ্যা করে বলা যায় –
প্রথমত, এখানে লেখক তাঁর জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এবং সমসাময়িক দেশকালের স্মৃতি রোমন্থন করে গ্রন্থাগারে প্রকাশ করেন।
দ্বিতীয়ত, এ প্রসঙ্গে বিপিনচন্দ্র পালের ‘সত্তর বৎসর’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবনস্মৃতি’ ও সরলা দেবী চৌধুরানীর ‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামক আত্মজীবনের কথা বলা যায়।

55. সরকারি নথিপত্র ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বনের কারণ কি?
উত্তরঃ- সরকারি নথিপত্র ব্যবহারকালে সতর্কতা অবলম্বনের কারণগুলি হল –
প্রথমত, এগুলি মূলত সাম্রাজ্যবাদী ও প্রশাসকের দৃষ্টিভঙ্গিতে রচিত হওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ঘটনা সঠিক ভাষ্য পাওয়া যায় না।
দ্বিতীয়ত, সরকারি রিপোর্ট একপেশে হওয়ায় সমসাময়িক সাহিত্য, সংবাদপত্র প্রভৃতি থেকে সত্য যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন।

56. ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কি ?
উত্তরঃ- ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব গুলি হল –
i) সংবাদপত্র কিভাবে জনমত গঠনে সাহায্য করে তা জানা যায়।
ii) ব্রিটিশ সরকারের জন্য বিরোধী নীতির সমালোচনার বিভিন্ন দিক ফুটে ওঠে।
iii) উনিশ শতক ও বিশ শতকে ভারতের জাতীয়তাবাদের অদ্ভব, প্রচার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা জানা যায়।
iv) উনিশ শতকে এদেশের সমাজ ও ধর্মের ক্ষেত্রে যে-সমস্ত কুসংস্কার ছিল তার বিরুদ্ধে সমাজ সংস্কার ও ধর্ম সংস্কাররা কিভাবে স্বেচ্চার হয়েছিল তা জানা যায়।
দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায়, সতীদাহ প্রথার বিরোধিতায় ‘দিগদর্শন’ নীল বিদ্রোহের সাপেক্ষে জনমত গঠনে ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ ব্রিটিশ সরকারের জনবিরোধী নীতির সমালোচনার ক্ষেত্রে ‘সোমপ্রকাশ’ বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় ‘বয়কট’ আন্দোলন প্রসারে ‘সন্ধ্যা’ পত্রিকার বিশেষ ভূমিকা ছিল।

57. স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনীকে কিভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান রূপে ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ- আধুনিক ইতিহাসচর্চার উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন ব্যক্তির আত্মজীবনী, কারণ –
প্রথমত, এ ধরনের রচনায় সমাজে নানান স্তরের মানুষের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ থাকে, যেগুলি তারা ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন এবং এই ঘটনাগুলির মাধ্যমে সমকালের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ধরা থাকে।
দ্বিতীয়ত, এগুলি থেকে সেই সময়কার সমাজ, রাজনীতি,অর্থনীতি প্রকৃতি সম্পর্কে নানান তথ্য ও ধারণা পাওয়া যায় এবং এ কারণেই এগুলি পরোক্ষ বিষয় নয় তা প্রত্যক্ষ বিষয়।
তৃতীয়ত, তবে আত্মজীবনী মানেই ইতিহাসের উপাদান নয়, কারণ এগুলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন পড়ে। যা ইতিহাসের উপাদান হয়ে ওঠার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

58. ব্রিটিশ সরকার কেন ‘সোমপ্রকাশ’ সংবাদপত্রের প্রকাশ বন্ধ করে দেয়?
উত্তরঃ- ব্রিটিশ সরকার ‘সোমপ্রকাশ’ সংবাদপত্রের প্রকাশ বন্ধ করে দেয় কারণ –
প্রথমত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিকল্পনায় প্রকাশিত ‘সোমপ্রকাশ’ নামক সংবাদপত্র(যদিও প্রথমদিকে এটি ছিল সাময়িক পত্র) ছিল নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশক।
দ্বিতীয়ত, এই পত্রিকায় সেই সময়ের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বিচারবিভাগ ও সামাজিক বিষয়ে নির্ভীক আলোচনা থাকতো।
তৃতীয়ত, কাবুলে ব্রিটিশ সরকারের নীতিও সমালোচিত হয়েছিল এবং সেই কারণেই দেশীয় সংবাদপত্র আইনের মাধ্যমে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

59. ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা কিভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হয়ে ওঠে? অথবা ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা থেকে কি ধরনের ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়?
উত্তরঃ- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিকল্পনায় সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক দ্বারকনাথ বিদ্যাভূষণ কর্তৃক প্রবর্তিত ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা আধুনিক ভারতের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ –
প্রথমত, এই পত্রিকায় সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, রাজনীতি প্রভৃতি বিভিন্নধর্মী বিষয় প্রকাশিত হত।
দ্বিতীয়ত, কৃষকদের স্বার্থরক্ষা ও চেতনার প্রসারে, নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে,বিধবা বিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে লিখিত প্রবন্ধগুলি থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপাদান পাওয়া যায়।
তৃতীয়ত, এই পত্রিকায় ব্রিটিশ সরকারের নীতিগুলির সমালোচনার মাধ্যমে স্বদেশীকতার প্রচার করা হত।

60. বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর’ থেকে কিভাবে সাহিত্য শাসনের ধারণা পাওয়া যায়?
উত্তরঃ- বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর থেকে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের কলকাতায় সামাজিক ও রাজনৈতিক মতাদর্শের উদ্ভবের ইতিহাস জানা যায়। বিপিনচন্দ্র তার এই আত্মজীবনীর ‘ছাত্রাবাস ও জনরাজ্যে’ অংশে দেখিয়েছেন কলকাতায় মেসগুলিতে তখন ছাত্ররা গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে মেস-ম্যানেজার নির্বাচন করে দায়বদ্ধতার সঙ্গে নিজেদের মেস-জীবন পরিচালনা করত। এভাবে গড়ে ওঠা গণতান্ত্রিক ধারণা থেকেই ভারতে স্বায়ত্বশাসনের ধারণার ইতিহাসের উপাদান পাওয়া যায়।

61. সাময়িক ও সংবাদপত্রের ধারণার উল্লেখ কর।
উত্তরঃ- যেসব পত্র-পত্রিকা সময় নির্দিষ্ট ব্যবধানে(প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি 15 দিন অন্তর বা প্রতিমাসে বা প্রতি তিন মাস অন্তর) প্রকাশিত হয় যা সাময়িকপত্র নামে পরিচিত। 1818 খ্রিস্টাব্দে জে.মার্শম্যানের সম্পাদনায় দিগদর্শন প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সাময়িকপত্রের সূচনা ঘটে। অন্যদিকে দৈনিক খবরাখবর নিয়ে প্রকাশিত পত্রিকা সংবাদপত্র নামে পরিচিত। যেমন – গঙ্গা কিশোর ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘বেঙ্গল গেজেট’ ছিল বাংলা ভাষায় বাঙালি পরিচালিত প্রথম সংবাদপত্র।

62. ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা গুলি কি?
উত্তরঃ- ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা গুলি হল –
i) ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তত্ত্বের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না, কারণ সব সময় এই সমস্ত তত্ত্বের তথ্যসূত্র থাকে না।
ii) কোন বিষয়ের আকরগ্রন্থ বা মূল নথিপত্র পাঠ করে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে যতটা নিশ্চিত হওয়া যায় ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তত্ত্বে ততটা নিশ্চিত হওয়া যায় না।

63. ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা গুলি কি?
উত্তরঃ- ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে বা আধুনিক ইতিহাসচর্চার ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল –
i) ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, গবেষণাকেন্দ্রের জার্নাল, মহাফেজখানা ও মিউজিয়ামের সংগৃহীত নথিপত্র ও গবেষণাগ্রন্থ থেকে তথ্য পাওয়া যায়।
ii) একই বিষয়ে অল্প সময়ে, অল্প খরচে, অল্প পরিশ্রমে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
iii) অধ্যাপক বা গবেষণার নির্দেশকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষক তার উত্তর খুঁজে পান এবং তার পক্ষে দ্রুত গবেষণা বা পাঠপ্রস্তুতি করা সম্ভব হয়।

64. আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদানরূপে ফটোগ্রাফের সীমাবদ্ধতা কি ?
উত্তরঃ- আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদানরূপে ফটোগ্রাফের সীমাবদ্ধতা গুলি হল –
i) ফটোগ্রাফের বিষয়টি আলোকচিত্র শিল্পীর দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা বা ছবির সামগ্রিকতা প্রকাশ পায় না।
ii) ছবির মাধ্যমে ইতিহাসের সঠিক চিত্র পাওয়া যায় না।
iii) বর্তমানে কম্পিউটারে ফটো-এডিটিং কৌশলের মাধ্যমে ফটোগ্রাফে নানারকম বিকৃতি বা পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।

65. ‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামক আত্মজীবনী থেকে উনিশ শতকের বাংলার সামাজিক ইতিহাস কিভাবে জানা যায়?
উত্তরঃ- সরলাদেবী চৌধুরানীর ‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামক আত্মজীবনী থেকে –
i) উনিশ ও বিশ শতকের বাংলার অভিজাত পরিবারের কায়দাকানুন এবং দুধ মা, ধাইমার মাধ্যমে সন্তান প্রতিপালন ব্যবস্থা প্রভৃতির কথা জানা যায়।
ii) সমাজে নারীর আচার-ব্যবহার কেমন ছিল সে সম্পর্কেও জানা যায়।
iii) নারী শিক্ষার কথা, বাঙালি সংস্কৃতির ও সাহেবি সাংস্কৃতির কথা এবং ব্রাহ্মধর্ম ও ব্রাহ্মসমাজের কথাও রয়েছে এই গ্রন্থে।

66. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবনস্মৃতি’ কীভাবে ব্যাক্তি ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে উপাদান সরবরাহ করে?
উত্তরঃ- ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যাক্তিজীবনের আধার রচিত হয়েছিল, কারন –
i) এই গ্রন্থ থেকে রবীন্দ্রনাথের ছোটোবেলার ‘শিক্ষারম্ভ’ ও তাঁর সাহিত্যচর্চা এবং ঠাকুরবাড়ির স্বাদেশিকতা, নীতিচর্চার কথা জানা যায়।
ii) ব্রহ্ম আন্দোলন সহ ধর্মসংস্কার ও জাতীয়তাবাদের বিকাশের কথাও জানা যায় এই গ্রন্থে।
iii) এই গ্রন্থ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভারতের বাইরে ভ্রমণের কথা এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলির আর্থসামাজিক ও সংস্কৃতির কথা জানা যায়।

67. ‘জীবনস্মৃতি’ থেকে উনিশ শতকের বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাসের কী কী উপাদান পাওয়া যায়?
উত্তরঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী ‘জীবনস্মৃতি’ থেকে –
i) উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ঔপনিবেশিক শিক্ষার কথা জানা যায়।
ii) এই গ্রন্থের ‘শিক্ষারম্ভ’ প্রকৃতি অধ্যায়ের বর্ণনা থেকে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ও নর্মাল স্কুলের শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্কে জানা যায়।
iii) ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে বদ্ধ এবং প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কবিহীন ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কথা জানা যায়।

68. ‘জীবনের ঝরাপাতা’ গ্রন্থটিতে কার জীবন ফুটে উঠেছে? তার সম্পর্কে কি জানো?
উত্তরঃ- ‘জীবনের ঝরাপাতা’ গ্রন্থটিতে সরলাদেবী চৌধুরানীর জীবন ফুটে উঠেছে।
সরলাদেবী চৌধুরানী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাগনি ও একজন জাতীয়তাবাদী নেত্রী। তিনি দেশপ্রেম ও স্বদেশিকতার, জাগরণের জন্য ‘বীরাষ্টমী ব্রত’, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘প্রতাপাদিত্য উৎসব’ ও ‘উদয়াদিত্য উৎসব’ সংগঠিত করেছিলেন।

69. ফটোগ্রাফ কিভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান হয়ে উঠেছে?
উত্তরঃ- ফটোগ্রাফগুলি ভারতের আধুনিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কারণ –
প্রথমত, আধুনিক ভারতের ইতিহাসে 1850-এর দশক থেকে ভারতে বিদ্রোহ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, আর্থসামাজিক ক্ষেত্র-সহ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন দিককে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ধরে রাখা শুরু হয়।
দ্বিতীয়ত, আবার বিশ শতকে মহাত্মা, গান্ধী সুভাষ বসুর আন্দোলনসহ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন এবং দেশভাগের যন্ত্রণার মুহূর্তকেও ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ধরে রাখা হয়েছে।
তৃতীয়ত, ফটোগ্রাফগুলিতে ব্যাক্তিদের পোশাক, দাঁড়ানোর ভঙ্গি, মনোভাব বিশ্লেষণ করে ব্যক্তি ও ব্যক্তিবর্গের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান জানা যায়।

70. জহরলাল নেহেরুর চিঠিপত্র কিভাবে দেশীয় রাজ্যগুলির ইতিহাস রচনায় উপাদান সরবরাহ করে?
উত্তরঃ- কন্যা ইন্দিরাকে লেখা জওহরলাল নেহেরুর চিঠি থেকে আধুনিক ভারতের দেশীয় রাজ্যগুলির ইতিহাস জানা যায়। যেমন –
i) তিনি এই গ্রন্থের দেশীয় প্রজাদের অর্থে দেশীয় রাজাদেরকে বিলাসব্যসন ও ??????????খিন গাড়ি চড়ার সমালোচনা করেছেন।
ii) প্রজাদের অন্নকষ্ট, শিক্ষা ও চিকিৎসার অভাবের কথাও জানা যায় এই গ্রন্থ থেকে।
iii) দেশীয় রাজ্যের কৃষকসহ ভারতীয় কৃষকদের উৎপাদিত তুলো চলে যেতে ইংল্যান্ডে এবং তা থেকে উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য ভারতে আসত যা ছিল সময় ও অর্থের অপচয়।

71. আধুনিক ইতিহাসচর্চায় ইন্টারনেট ব্যবহারের দুটি সুবিধা লেখ।
উত্তরঃ- উত্তরঃ- ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে বা আধুনিক ইতিহাসচর্চার ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল –
i) ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, গবেষণাকেন্দ্রের জার্নাল, মহাফেজখানা ও মিউজিয়ামের সংগৃহীত নথিপত্র ও গবেষণাগ্রন্থ থেকে তথ্য পাওয়া যায়।
ii) একই বিষয়ে অল্প সময়ে, অল্প খরচে, অল্প পরিশ্রমে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
iii) অধ্যাপক বা গবেষণার নির্দেশকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষক তার উত্তর খুঁজে পান এবং তার পক্ষে দ্রুত গবেষণা বা পাঠপ্রস্তুতি করা সম্ভব হয়।

72. সাবল্টার্ন স্টাডিজ কী?

উত্তরঃ- 1982 খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ গুহ নিম্নবর্গের ইতিহাস রচনা পদ্ধতির কথা তুলে ধরেন যা সাবল্টার্ন স্টাডিজ নামে পরিচিত। এই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিক গুলি হল –
i) প্রচলিত ইতিহাসচর্চায় সমাজের উচ্চবর্গের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হত; কিন্তু এই ইতিহাসচর্চায় নিম্নবর্গ অর্থাৎ কৃষক, শ্রমিক, শহুরে জনতা, আদিবাসী এবং সমাজের নিম্নস্তরের মানুষ বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় আন্দোলনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ii) নিম্নবর্গের ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জ্ঞান পাণ্ডে, স্টিফেন হেনিংহাম, দীপেশ চক্রবর্তী, গৌতম ভদ্র, শাহিদ আমিন প্রমুখ।

Class 10 History Chapter 01 Short Question Answer | মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় 01 – ইতিহাসের ধারণা – এর 72 টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তর

Shares:

Related Posts

Class 10

Class 10 History Chapter 01 Question Answer MCQs | ইতিহাসের ধারনা | বহু বিকল্পধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – ইতিহাসের ধারনা (প্রথম অধ্যায়) | প্রশ্ন ও উত্তর MCQ | Class 10 History Chapter 01 Question Answer মাধ্যমিক ইতিহাস – ইতিহাসের ধারনা (প্রথম অধ্যায়) | প্রশ্ন ও
class-10-geography-chapter-03
Class 10

Class 10 Geography Chapter 03 Question Answer দশম শ্রেনীর ভূগোল অধ্যায় ০৩ “নদী হিমবাহ ও বায়ুর কাজ” অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

এই নিবন্ধে আমরা দশম শ্রেণির ভূগোল তৃতীয় অধ্যায় "নদী হিমবাহ ও বায়ুর কাজ” অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 10 Geography Chapter 03 Question Answer Class 10 Geography Chapter
Madhyamik-Geography-Question-Paper-PDF-2023-মাধ্যমিক-ভূগোল-প্রশ্নপত্র-PDF-2023
Class 10

Madhyamik Geography Question Paper PDF 2023 | মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্নপত্র PDF 2023

Madhyamik Geography Question Paper PDF 2023 | মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্নপত্র PDF 2023 এই নিবন্ধে আমরা জানবো 2023 সালের মাধ্যমিকের ভূগোল প্রশ্নগুলি সম্পর্কে। আশা করি তোমরা যারা এই বছর মাধ্যমিক ভূগোল
class-10-history-chapter-04-mcq-answer
Class 10

Class 10 History Chapter 04 MCQ Answer | মাধ্যমিক ইতিহাস অধ্যায় ০৪ – সংঘব্ধতার গোড়ার প্রশ্ন ও উত্তর

এই নিবন্ধে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় অর্থাৎ ইপ্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ এর বেশ কিছু সত্য অথবা মিথ্যা প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 10 History Chapter 04 MCQ