এই নিবন্ধে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণির ষষ্ঠদশ অধ্যায় ” এক ভূতুড়ে কান্ড” কবিতার প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 06 Bangla Chapte 16 Question Answer
Class 6 Bangla Chapter 16 Question Answer ষষ্ঠ শ্রেনীর বাংলা অধ্যায় ১৬’ এক ভূতুড়ে কান্ড‘ প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১.১ শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম কী?
উত্তর: শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম চঞ্চল।
১.২ তাঁর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর: তাঁর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ এবং ‘হাসির টেক্কা’।
২. নীচের বাক্যগুলি কী ধরনের (সরল/ যৌগিক/জটিল) তা নির্দেশ করে।
২.১ ভূত বলে কিছু আছে?
উত্তর: সরলবাক্য।
২.২ যেখানে সন্ধে সেইখানেই সাইকেলের টায়ার ফাসে।
উত্তর: জটিল বাক্য।
২.৩ একটা পরস্মৈপদী সাইকেল হাতে পেয়ে হুডুর দিকে পাড়ি জমিয়েছিলাম, কিন্তু মাইল খানেক না যেতে যেতেই তার একটা টায়ার ফেসে গেল।
উত্তর: যৌগিক বাক্য
২.৪ আমার টর্চবাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে প্রাণপণে ঘােরাতে লাগলাম।
উত্তর: সরলবাক্য।
২.৫ যেখানটায় ড্রাইভার, থাকবার কথা সেখানে কেউ নেই।
উত্তর: জটিলবাক্য।
৩. নীচের বাক্যগুলিতে কী কী অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়েছে লেখো :
৩.১ সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে।
উত্তর : হলেই।
৩.২ কয়েক মিনিট বাদে সেখান থেকে নামলাম।
উত্তর : বাদে, থেকে।
৩.৩ তার চেয়ে বাঘের পেটের মধ্যে দিয়ে স্বর্গে যাওয়া ঢের শটকাট ।
উত্তর : মধ্যে, চেয়ে, দিয়ে।
৩.৪ আপনা থেকেই আমার মুখ দিয়েই বেরিয়ে গেলো।
উত্তর : থেকেই, দিয়েই।
৪. নীচের বাক্যগুলিকে কর্তাখণ্ড ও ক্রিয়াখণ্ডে ভাগ করো :
৪.১ আসতে আসতে গাড়িটা আমার সামনে এসে পড়ল।
উত্তর: গাড়িটা – কর্তাখণ্ড।
এসে পড়ল – ক্রিয়াখণ্ডে।
৪.২ দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভিতরে।
উত্তর: দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে – কর্তাখণ্ড।
ঢুকে পড়লাম – ক্রিয়াখণ্ডে।
৪.৩ চিরদিনই আমি আশাবাদী।
উত্তর: আমি – কর্তাখণ্ড।
আশাবাদী – ক্রিয়াখণ্ডে।
৪.৪ এগিয়ে এস বললেন ভদ্রলোক।
উত্তর: ভদ্রলোক – কর্তাখণ্ড।
বললেন – ক্রিয়াখণ্ডে।
৬.নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :
৬.১ ‘সাইবেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে!’ লেখকের গন্তব্য কোথায়? সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে কেন?
উত্তর: লেখক শিবরাম চক্রবর্তীর গন্তব্যস্থল ছিল রাঁচির হুড্রু জলপ্রপাত।
মাইল সাতেক পথ অতিক্রম করার পর লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়।পথটা ছিল জন মানবহীন আর আশেপাশের অঞ্চল জঙ্গলাকীর্ণ ছিল। আরও পাঁচ মাইল গেলে তবে একটি গ্রামের দেখা মিলবে। কিন্তু এতটা পথ তিনি কীভাবে ফিরবেন সেটা বুঝতে পারছিলেন না। ফলে সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে।
৬.২ ‘যেখান বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়‘—প্রবাদটির মর্মার্থ কী? একই ভাব বোঝাতে তুমি আরেকটি প্রবাদ উল্লেখ করো।
উত্তর: যেখানে বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়’—এই প্রবাদটির মর্মার্থ যেখানে বিপদ আসার ভয় সেখানেই বিপদ এসে যায়।
এরকম আরেকটি প্রবাদ হল—’এগুলো সর্বনাশ পিছলে নির্বংশ।’
৬.৩ ‘চিরদিনই আমি আশাবাদী’—এই আশাবাদের গুণে লেখক কীভাবে পুরস্কৃত হলেন ?
উত্তর: লেখক অত্যন্ত আশাবাদী। তাঁর আশাবাদীতার পুরস্কার তিনি যথোপযুক্তভাবেই পেলেন। প্রথমে কিছুক্ষণ কোনো যানবাহন ছিল না ঠিকই, কিন্তু পরে একটা লরি এলো। অবশ্য লরিটা দাঁড়াল না। কিন্তু তিনি একটুও হাল ছাড়লেন না। তিনিও গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। পরিশেষে তাঁর প্রার্থিত গাড়িটা এলো। তিনি গাড়িটায় উঠে পড়লেন। যদিও গাড়িতে ছিল না কোনো ড্রাইভার তবুও দিব্যি গড়গড়িয়ে গাড়ি এগিয়ে যেতে লাগল। একসময় ড্রাইভারহীন গাড়িতে তিনি ট্রেনের লেভেল ক্রসিং অর্থাৎ রাঁচির কাছেই পৌঁছে গেলেন। এইভাবে লেখক পুরস্কৃত হলেন।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর দাও :
৭.১ ‘অনর্থক কেবল টর্চটাকে আর নিজেকে টর্চার করা’–কোন্ ঘটনা প্রসঙ্গে উদ্ধৃতিটির অবতারণা? ‘টর্চ’ আর ‘টর্চার’ শব্দের প্রয়োগে যে শব্দ নিয়ে খেলা তৈরি হয়েছে, গল্প থেকে খুঁজে এমন কয়েকটি উদাহরণ দাও । তুমি নিজে এ জাতীয় কয়েকটি বাক্য লেখো।
উত্তর: লেখক একবার রাঁচির রাস্তায় সাইকেলের টায়ার খারাপ হয়ে যাওয়ায় খুব বিপদে পড়েন। তখন ফেরবার জন্য তিনি গাড়ির অপেক্ষা করতে লাগলেন। কিন্তু কোনো গাড়ির দেখা পেলেন না। এমন সময় একটা লরি দেখতে পেয়ে জোরে জোরে টর্চ ঘোরাতে লাগলেন। কিন্তু লরিটা ভূক্ষেপ না করে চলে গেল। তখন লেখক এই উদ্ধৃতিটি করেন।
গল্পে এমন উদাহরণ যথেষ্ট। যথা—১) আমার হার্ট খুব উইক। আর শুনেছি ওরা ভারি উইকেড। ২) অগত্যা, আগায়মান গাড়ির গায়ে গিয়ে পড়লাম।
কয়েকটি উদাহরণ—১) বিমল বন্ধুদের সঙ্গে বেট ফেলে খেলায় বেটার পারফমেন্স দেখাল। ২) এক কুস্তিগীর অন্য কুস্তিগীরকে ধরায় ধরাশায়ী করে দিলো।
৭.২ গল্প অনুসরণে সেই নির্জন বনপথে লেখকের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় বর্ণনা
উত্তর: লেখক রাচী থেকে ফেরার পথে তার সাইকেলের টায়ার ফেসে যাওয়ায় তিনি জঙ্গলে ঘেরা নির্জন পথে আটকে পড়েন। অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পর একটা লরির দেখা মিললেও তা থামে না, কিন্তু কিছুক্ষন পর একটি বেবি অস্টিন গাড়ি খুব ধীর গতিতে আসতে দেখা যায়। লেখক গাড়িটিকে টর্চের ঈশারা করলেও তা না থামলে লেখক জোর করে গাড়িতে উঠে পড়েন। কিন্তু চরম আতঙ্কে তিনি দেখেন যে গাড়িতে কোনও চালক নেই। এভাবেই লেখক বনের মধ্যে এক ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন।
৭.৩ ‘বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ওরকম উদার হতে পারে না।’—কোন্ উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে? লেখকের কাছে সেই ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ কতটা উদারতা নিয়ে এসেছিলো, তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: লেখক রাঁচির রাস্তায় গাড়ির জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর অনেক দূর থেকে একটা হলদে রঙের আলো দেখতে পেলেন। প্রথমে লেখক ভাবলেন বাঘ বুঝি, পরে বুঝলেন যে বাঘ নয় কারণ বাঘের দৃষ্টি অনেক ক্রুর হিংস্রতানয় কিন্তু এই হলুদ আলোটা তেমন নয় বরং যেন একটু উদারতাময়।
লেখকের দেখা সেই হলুদ ‘উদারতাময় দৃষ্টিভঙ্গি’ একটি বেবি অস্টিন গাড়ির আলো। কিন্তু সেই গাড়িটিও লেখকের প্রতি কোনো উদারতা দেখাল না। সেও চলে গেল। অর্থাৎ তার দৃষ্টিভঙ্গি মোটেই উদার ছিল না।
৭.৪. ‘এই হয়তো সশরীরে রাঁচি ফেরার শেষ সুযোগ।’— কোন্ সুযোগের কথা বলা হয়েছে? লেখক কীভাবে সেই সুযোগকে কাজে লাগালেন ?
উত্তর: লেখক অনেকক্ষণ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ির দেখা পেলেন না। প্রথমে একটা লরি এলেও তা দাঁড়াল না। অনেক পরে তিনি একটা বেবি অস্টিন দেখতে পেলেন। তিনি ভাবলেন যেমন করেই হোক গাড়িটাতে উঠতে হবে। অস্টিনটা মোটেই দাঁড়াল না। তখন লেখক ভাবলেন হয়তো রাঁচি ফেরার এটাই শেষ সুযোগ।
লেখক যখন দেখলেন অস্টিনটা তাঁর জন্য অপেক্ষা করল না, তিনি বিন্দুমাত্র ঘাবড়ালেন না, তিনি লাফিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লেন। লেখক এইভাবে তাঁর কাছে আসা সুযোগ কাজে লাগালেন।
৭.৫ ‘আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকলাম‘- লেখক কেন তাঁর কথা অসমাপ্ত রেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন।
উত্তর: জঙ্গলের রাস্তায় আটকে পড়া লেখক ধীর গতির বেবি অস্টিন গাড়ি পেয়ে জোর করে তাতে উঠে পড়লেন। গাড়িতে উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে বিস্ময়ে ভয়ে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তিনি দেখলেন ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই। ইঞ্জিন বিকল অথচ গাড়িটি ধীরে ধীরে ঠিকপথে চলছিল। এই অদ্ভুতুরে কান্ড দেখে লেখক তাঁর কথা অসমাপ্ত রেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন।
৭.৬ ‘বে–ড্রাইভার গাড়ি যেমন চলছিল তেমনি চলতে লাগল‘—’বে–ড্রাইভার গাড়ি‘ গাড়ি চলার প্রকৃত কারণটি কীভাবে গল্পে উন্মোচিত হল?
উত্তর: লেখক রাঁচির রাস্তায় বেবি অস্টিন গাড়িতে উঠে দেখলেন গাড়িতে কোনো ড্রাইভার নেই। কিন্তু হেঁটে ফেরার আলস্যে তিনি গাড়িতে চেপে বসে থাকলেন। ঘণ্টা দুয়েক গাড়িটা চলার পর লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে যখন প্রায় রেল লাইনের সামনে এসে পড়েছে তখনও যখন গাড়ি থামল না, দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় লেখক গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন। এমন সময় চশমা পরা একজন লোক মোটরের পেছন থেকে এসে লেখককে বললেন ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় তিনি আটমাইল দূর থেকে গাড়িটা ঠেলতে ঠেলতে আসছেন। লেখককে তিনি গাড়ি ঠেলার জন্য অনুরোধ করলেন। এইভাবেই ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি চলার প্রকৃত কারণ উন্মোচিত হল।
৭.৭ ‘এবারও আমার আলস্যই জয়ী হল শেষটায়।’—গল্প অনুসরণে লেখকের উৎকণ্ঠা, আলস্য ও কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত দাও ৷
উত্তর: লেখক বেবি অস্টিনটার দেখা পেয়ে খুব উৎফুল্ল হলেন, কারণ লেখকের কাছে সেই সময় একটি যানবাহন পাওয়া আবশ্যক ছিল। তিনি গাড়িতে উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলেন কারণ ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই অথচ গাড়ি চলছে। লেখক ভয়ে উৎকণ্ঠায় একেবারে ঘেমে উঠেছিলেন। তিনি ‘ভূতভূত’ আওড়ালেন কিন্তু কেউ তাঁর কথার কর্ণপাত করল না। বে-ড্রাইভার গাড়ি একইভাবে চলতে লাগল। ড্রাইভার নেই, ইঞ্জিনও চলছে না অথচ আস্তে আস্তে গাড়ি চলতে লাগল। লেখক ভাবলেন যে ঠিক পথ দিয়ে যখন গাড়ি যাচ্ছেই তখন হেঁটে যাওয়ার চেয়ে তা বেশি আরামদায়ক। লেখক একদিকে ভয়ে যেমন উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়লেন কিন্তু তিনি ছিলেন অলসপ্রিয়। আলস্য তাঁকে সহজেই কাবু করে দেয়। অন্যান্যবারের মতো এবারেও আলস্যই জয়ী হলো। তিনি গাড়ি থেকে বেরোবার কোনো চেষ্টা না করে যেমন যাচ্ছিলেন তেমনি ভুতুড়ে গাড়িকে অবলম্বন করে যেতে লাগলেন। অর্থাৎ ভূতের ভয় অপেক্ষা আলস্যতারই জয় হল।
৭.৮ শেষ পর্যন্ত লেখক সেই ‘বেবি অস্টিন’ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কেন? এরপরে তিনি কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন ?
উত্তর: ‘ভূতুড়ে’ গাড়িতে করে লেখক শেষপর্যন্ত স্টেশনের কাছে পৌঁছোলেন। লেভেল ক্রসিংয়ের মুখে পৌঁছে লেখকের হুঁশ হল যে এখুনি ট্রেন এসে পড়বে। তিনি ভাবলেন যে ভূতুড়ে গাড়ি বুঝি তাঁকে নিয়ে গাড়ি চাপা দিয়ে দেবে। তিনি ভয়ে ‘বেবি অস্টিন’ থেকে বেরিয়ে এলেন। লেখক ভাবলেন ভুতুড়ে গাড়ি বুঝি ট্রেনের তলায় গিয়ে চুরমার হয়ে যাবে। কিন্তু শেষাবধি গাড়িটা আস্ত থাকায় লেখক দারুণ অবাক হয়ে গেলেন। এমন সময় গাড়ির পিছন থেকে চশমা পরা এক ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন। তিনি জানালেন যে, তিনি আট মাইল দূর থেকে গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে আসছেন। এমন কাউকে পেলেন না যে তাঁকে সাহায্য করে। তিনি কাতর হয়ে লেখকের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। অর্থাৎ ভুতুড়ে গাড়ির ভয়ের সম্ভাবনায় তাঁর মন উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠেছিল শেষাবধি সেই ভয় হাস্যকর এক পরিস্থিতি তৈরি করল, যা অভূতপূর্ব ও মজাদারও বটে।
৮. তোমার কোনো গা-ছমছমে অভিজ্ঞতার কথা বন্ধুর কাছে একটি চিঠিতে লেখো।
উত্তর: নিজে করো।