এই নিবন্ধে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণির নবম অধ্যায় ” ফাঁকি ” কবিতার প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 06 Bangla Chapter 13 Question Answer
Class 6 Bangla Chapter 13 Question Answer ষষ্ঠ শ্রেনীর বাংলা অধ্যায় ১৩ ‘ ফাঁকি ‘ প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১.১ রাজকিশোর পট্টনায়ক কোন্ ভাষার লেখক?
উত্তর: রাজকিশোর পট্টনায়ক ওড়িয়া ভাষার লেখক।
২.২ তাঁর লেখা দুটি গল্পের বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর: তাঁর লেখা দুটি গল্পের বই হল — (ক) তুঠ পাথর
(খ) সিন্দুর গার।
২. সন্ধিবিচ্ছেদ করো :
সন্দেহ, আষ্টেক, প্রত্যেক, সম্পূর্ণ, নিরপরাধ, দুর্বল।
উত্তর: সন্দেহ = সম্ + দেহ।
নিরপরাধ = নিঃ + অপরাধ।
আষ্টেক = অষ্ট + এক।
দুর্বল = দুঃ + বল।
প্রত্যেক = প্রতি + এক।
সম্পূর্ণ = সম + পূর্ণ।
৩. প্রতিশব্দ লিখে তা দিয়ে বাক্য রচনা করো :
বাড়ি, ছেলে, রাস্তা, পাথর, গাছ, বন্ধু, নদী ।
উত্তর: বাড়ি — গৃহ : আমার গৃহের চার পাশে ফুলের বাগানে ভরপুর।
ছেলে — সন্তান : কুসন্তান যদিও হয়, কুমাতা কখনো নয়।
রাস্তা — পথ : পথিক পথ ধরে হেঁটে চলেছে।
পাথর — শিলা : শিলনোড়ার প্রচলন উঠেই গেছে প্রায়।
গাছ — বৃক্ষ : বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়।
বন্ধু — সাথি : আমি আমার সাথিদের সাথে ডুয়ার্স যাব।
নদী — তটিনী : এই তটিনীর নিজের মতোই বয়ে চলেছে।
৪. নীচের বাক্যগুলি থেকে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়া বেছে নিয়ে লেখো :
৪.১ এটুকু জমি খালি রাখা যাক্।
উত্তর: রাখা যাক – সমাপিকা ক্রিয়া।
৪.২ আগে গাছ লাগাব ।
উত্তর: লাগাব – সমাপিকা ক্রিয়া।
৪.৩ কোঁদল লাগবে, বাইরের কোঁদল এসে ঘরে ঢুকবে।
উত্তর: এসে – অসমাপিকা ক্রিয়া, ঢুকবে – সমাপিকা ক্রিয়া।
8.8 মায়ে-পোয়ে ঘরের ভিতরে চলে গেল, বিশেষ আলোচনার জন্য।
উত্তর: চলে গেল – সমাপিকা ক্রিয়া।
৪.৫ সকালে গোপাল আর গোপালের মা উঠে প্রথমেই আমগাছ দেখতে, গাছ নেতিয়ে পড়েনি তো?
উত্তর: দেখতে – অসমাপিকা ক্রিয়া, গেল – সমাপিকা ক্রিয়া।
৫. সকর্মক ও অকর্মক ক্রিয়া চিহ্নিত করো :
৫.১ বাবা আমগাছ নিয়ে পাঁচিলের কাছে লাগাচ্ছেন।
উত্তর: লাগাচ্ছেন – সকর্মক ক্রিয়া।
৫.২ খুব হয়েছে, মা আর ছেলের একই রকম বুদ্ধি।
উত্তর: হয়েছে – অকর্মক ক্রিয়া।
৫.৩ আপন চেষ্টাতেই গাছটি বেড়েছে।
উত্তর: বেড়েছে – অকর্মক ক্রিয়া।
৫.৪ জল দেওয়া হলো।
উত্তর: দেওয়া হলো – সকর্মক ক্রিয়া।
৬. গল্প থেকে বেছে নিয়ে পাঁচটি অনুসর্গ লেখো। সেই অনুসর্গগুলি যোগে স্বাধীন বাক্য রচনা করো।
উত্তর: পাঁচটি অনুসর্গ : হতে, জন্য, অপেক্ষা, থেকে, দিয়ে।
হতে: দূর হতে আমি তারে সাধিব।
জন্য: উপহারটা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
অপেক্ষা: রুমি অপেক্ষা ঋতু বেশি বুঝদার।
থেকে: বাবার থেকে টাকা নিয়ে ফুচকা খেলাম।
দিয়ে: আজ দশ টাকা দিয়ে একটি পেন্সিল কিনলাম।
৭. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণ এবং বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো :
জাহাজ, গাছ, পোষ, ঝড়, পশ্চিম।
উত্তর :
বিশেষ্য বিশেষণ
জাহাজ জাহাজি
গাছ গেছো
ঝড় ঝোড়ো
পোষ্য পোষ
বনস্পতি মহিরুহ
৮. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখো :
৮.১ কটক কোন নদীর তীরে অবস্থিত? ওড়িশার আরও একটি নদীর নাম লেখো।
উত্তর: কটক মহানদীর তীরে অবস্থিত। ওড়িশার অপর একটি নদী বৈতরণী।
৮.২ গোপালের বাবা প্রথমে কেন বাগানে ফুলগাছ লাগাতে চাননি ?
উত্তর: তিনি কলমি আমগাছ বসাতে চান। তাছাড়া এটা ছিল বেলে মাটি, রোজ প্রচুর জল দিতে হবে বলে ফুল গাছ লাগাতে চাননি।
৮.৩ আমগাছে কেন ঠেকো দিতে হয়েছিল?
উত্তর: বোমা পড়বার ভয়ে সরকারী লোকেরা গাছের গোড়ার দিক ঘেঁসে ট্রেঞ্চ খুঁড়ে চলে যায়। ফলে গাছটি হেলে গেলে ঠেকো দিতে হয়েছিল।
৮.৪ গাছটিকে উইয়ে খেয়ে ফেলল কীভাবে?
উত্তর: গাছটির গোড়ার দিকে উইয়ে ধরে ছিল কেউ খেয়াল করেনি। পিঁপড়ে উই খেয়ে নষ্ট করে। পিঁপড়ে ঔষুধ দিয়ে মারা হয়েছিল তাই মনের আনন্দে উই পোকা গাছ খেয়ে ফেলেছিল।
৮.৫ গল্প অনুসারে কটকের খবরের কাগজে আমগাছটিকে নিয়ে কী সংবাদ বেরিয়েছিল?
উত্তর: গল্প অনুযায়ী কটকের খবরের কাগজে বের হয়েছিল- কটকে অর্ধরাত্রে ভীষণ ঝড় বৃষ্টিতে শহরের ভিতরে পুরী ঘাটে আমগাছ উপড়ে পড়েছে।
৯. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৯.১ ‘একটু জমি খালি রাখা যাক’—প্রস্তাবটি কে দিয়েছিলেন? কেন তিনি এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন?
উত্তর: রাজকিশোর পট্টনায়ক রচিত ফাঁকি গল্পে উল্লিখিত গোপালের বাবা অর্থাৎ পরিবারের কর্তা এই প্রস্তাব নিয়েছিলেন। গোপাল চেয়েছিল বাড়িটা হোক একেবারে রাস্তার ধারে কিন্তু তার বাবা ফাঁকা শুকনো জমিতে বাড়ি করতে রাজি ছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন সামনের দিকে কিছুটা ফাঁকা রেখে বাড়ি করতে। তাই তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
৯.২ ‘গোপাল মুখ তুলে সন্দিগ্ধভাবে বাবার মুখের দিকে তাকাল’—তার এই সন্দেহের কারণ কী?
উত্তর: তার সন্দেহের কারণ বাবা যে কলমি গাছ তৈরী করেছেন তা সত্যিই ভাল জাতের কিনা। গাছ কেমন হবে? এই সব সন্দেহ তার মনে উদয় হওয়ায় সে সন্দিগ্ধভাবে বাবার মুখের দিকে তাকাল।
৯.৩ ‘তুই করবি বাগান!’—-বাবা কেন এমন মন্তব্য করেন ?
উত্তর: ফুলের বাগান না আমগাছ বসবে এই নিয়ে বাবা ছেলে বিরোধ বাধলে, ছেলে বলেছিল ফুলের বাগান করবে। বেলেমাটিতে রোজ সে জল ঢালবে। অথচ সে নিজেই এক বালতি জল তুলে স্নান করে না। তাই বাবা ব্যঙ্গ করে এই কথাগুলি বলেছিলেন।
৯.৪ ‘গাছটাকে আর দু’হাত ভিতরে লাগালে কত ভালো হতো।’— কোন গাছ? কেন বক্তার এমন মনে হয়েছে?
উত্তর: রাজকিশোর পট্টনায়ক রচিত, জ্যোতিরিন্দ্রমোহন জোয়ারদার অনূদিত ফাঁকি গল্পে উল্লিখিত আম গাছটির কথা বলা হয়েছে।
আমগাছ খুব বড় হয়ে চারিদিকে ডালপালা মেলে। তা নিয়ে প্রতিবেশীদের সাথে দ্বন্দ্ব হতে পারে। আম হলে বাইরের ডাল থেকে সব আম পাড়ার লোকেরা পেড়ে নেবে। এইসব ভেবে তার মনে হয়েছে গাছটি আরো দুই হাত ভেতরের দিকে পুঁতলে ভাল হতো।
৯.৫ আমগাছটি কীভাবে গোপালবাবুর বাড়ির নিশানা হয়ে উঠেছিল?
উত্তর: গোপালবাবুদের আমগাছটি খুব বড় হয়েছিল। ওই এলাকায় অতো বড় আম গাছ ছিল না। তার আম ছিল বড়ই সুস্বাদু। গোপালবাবু যখন বাড়ীর ঠিকানা দিতেন তখন বলতেন, কাঠজোড়ি নদীর ধার বরাবর পুরী ঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পশ্চিমে যেখানে পাঁচিলের মধ্যে আম গাছ দেখবেন সেইখানেই আমাদের বাড়ী। এইভাবে বলতে বলতে একদিন আমগাছটিই বাড়ীর নিশানা হয়ে উঠেছিল।
৯.৬ গাছটি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছিল বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: গাছ নানাভাবে তাদের সাহায্য করেছিল। ছায়া দিয়ে, বাতাস দিয়ে, ফল, পাতা সবকিছু দিয়ে সাহায্য করেছিল। এটি বাচ্ছাদের দোলনা চড়ার স্থান। খেলার স্থান হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা এই আমগাছটি গোপালবাবুর বাড়ীর পরিচয়বাহী হয়ে উঠেছিল।
৯.৭ আমগাছটিকে ঘিরে বাড়ির সকলের অনুভূতির প্রকাশ গল্পে কীভাবে লক্ষ্য করা যায়?
উত্তর: প্রথম দিকে আমগাছ বসানো নিয়ে বিরোধ থাকলেও, ধীরে ধীরে আমগাছটি বাড়ীর লোকের খুব কাছের হয়ে ওঠে। গাছের পাশ দিয়ে ট্রেঞ্চ খুঁড়লে গাছটির গোড়া যদি আলগা হয়ে যায়, তাই ভেবে ঠেকো লাগানো হয়, গাছ যাতে পশুরা খেয়ে না ফেলে তার জন্য কঞ্চি দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়। বোমা পড়লে গাছটি ক্ষতি হয়ে যাবে—এই চিন্তায় বাড়ির লোকের ঘুম নেই। কুয়াশা এলে কি হবে, সব বোল নষ্ট হয়ে যাবে। ঝড় এলে চিন্তা হত, যদি গাছটির কোন ক্ষতি হয়ে যায়। এইভাবে গল্প জুড়ে নানা অনুভূতির প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়।
৯.৮ ‘সেই দিন থেকে গাছ হেলে পড়েছে পুবদিকে।’—কোন দিনের কথা বলা হয়েছে? গাছটি হেলে পড়ার কারণ কী?
উত্তর: বোমার হাত থেকে লোকদের বাঁচাবার জন্য সরকারের লোকেরা ট্রেঞ্চ খোঁড়ার দিনটাকে বলা হয়েছে। সরকারের লোকেরা ট্রেঞ্চ খোঁড়ার জন্য গাছের প্রায় গোড়া পর্যন্ত গর্ত খোঁড়ার ফলে গাছের অনেক শিকড় কেটে যায়। ফলে গাছটি পূর্ব দিকে হেলে পড়ে।
৯.৯ ‘ঠিক বন্ধুর মতই গাছ সব কথা লুকিয়ে রেখেছে।’—গাছটি কীভাবে গোপালের বন্ধু হয়ে উঠেছিল ? কোন্ সব কথা সে লুকিয়ে রেখেছিল?
উত্তর: গোপাল যে গাছটি বসাতে চায়নি একদিন সেই গাছ তার বন্ধু হয়ে উঠল। গোপাল গাছের গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করে, তার পরিচর্চা করে। সব দিকে নজর রাখে। প্রয়োজন হলে কাউকে ফুল পাতা দিতেও সে নারাজ, যাতে না গাছের ক্ষতি হয়। ঝড় এলে, বোমা পড়ার কথা শুনলে, কুয়াশা এলে তার চিন্তা হয়। এই আম গাছকেই সে তার পরিচয় বানিয়ে ফেলে। সবাই ঠিকানা দেয়, এই আমগাছটিকে উল্লেখ করে। গাছটির প্রতি তার মায়া মমতা খুব বেশী। বাইরের লোকের অসুবিধা হবে বলে গোপাল গাছের সরু ডালগুলো ছেঁটে দেয়। ডালগুলো যাতে কেউ দেখতে না পায় তার জন্য ফেলে দিয়ে আসে। গাছটি পাতার আড়ালে তার ক্ষতচিহ্ন ঢেকে ফেলে ঠিক বন্ধুর মতো গাছ সব কথা লুকিয়ে রাখে।
৯.১০ বিভিন্ন ঋতুতে আমগাছটির যে ছবি গল্পে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো।
উত্তর: বিভিন্ন ঋতুতে আমগাছটি বিভিন্ন রূপে ধরা দিয়েছে। গ্রীষ্মে প্রচুর হাওয়া ডালের ছায়া দিয়ে সবাইকে শান্তি দিয়েছে। শীতের কচিপাতা বের হয়ে সবাইকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাতার যোগান দিয়েছে। গাছের বিভিন্ন ডালে বোল এসেছে মৌমাছি, প্রজাপতির, ভ্রমরের আনাগোনা বাড়ত। সব মিলিয়ে দারুণ পরিবেশ তৈরী হত, প্রবল গরমে সুমিষ্ট কাঁচা আম যোগান দিয়ে সকলকে খুশী রাখত। প্রবল ঝড়ের হাত থেকে বাড়ী-ঘর রক্ষা করত। এইভাবে বিভিন্ন ঋতুতে সে একটা মস্ত স্থান দখল করত।
৯.১১ গাছটি কীভাবে পরিবারের সকলকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল ?
উত্তর: গাছটিকে পরিবারের সবাই খুব ভালোবাসত। সে ছিল পরিবারের সদস্যের মতন। সকলের সাথে বুড়ো হচ্ছিল। তার একেবারে গোড়ায় উই ধরেছিল। কেউ খেয়াল করেনি। অথচ একটু পিঁপড়ে হলে ওষুধ দেওয়া হত। একদিন প্রবল ঝড়ে ভীষণ লড়াই করে পরিবারের সকলকে বাঁচিয়ে সে নিজে লুটিয়ে পড়ল মাটিতে, আর উঠল না। এইভাবে সে সকলকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল।