এই নিবন্ধে আমরা সপ্তম শ্রেণির ষোড়শ অধ্যায় “দুটি গানের জন্মকথা ” প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 07 Bangla Chapter 16 Question Answer
Class 7 Bangla Chapter 16 Question Answer সপ্তম শ্রেনীর বাংলা অধ্যায় ১৬ “দুটি গানের জন্মকথা ” প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাওঃ
১.১. ভারতবর্ষের জাতীয় সংগীতটি কোন উপলক্ষ্যে প্রথম গাওয়া হয়েছিল?
উত্তরঃ ভারতের জাতীয় কংগ্রেস-এর ২৬তম বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষ্যে জাতীয় সংগীতটি প্রথম গাওয়া হয়।
১.২. ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকায় ভারতবর্ষের জাতীয় সংগীতটির কোন্ পরিচয় দেওয়া হয়েছিল?
উত্তরঃ ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকায় ভারতবর্ষের জাতীয় সংগীতটির পরিচয় দেওয়া হয়েছিল ব্রহ্মসংগীত হিসেবে।
১.৩. রবীন্দ্রনাথ ‘জনগনমন’র যে ইংরেজি নামকরণ করেন সেটি লেখো।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ‘জনগমন’র যে ইংরেজি নামকরণ করেন, সেটি হল ‘The Morning song of India’।
১.৪. ভারতবর্ষের জাতীয় মন্ত্রটি কী ? সেটি কার রচনা ?
উত্তরঃ ভারতবর্ষের জাতীয় মন্ত্রটি হল বন্দেমাতরম্। এটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনা।
১.৫. জাতীয় মন্ত্রের প্রথম চারটি পঙ্ক্তি শিক্ষকের থেকে জেনে খাতায় লেখো।
উত্তরঃ জাতীয় মন্ত্রের প্রথম চারটি পঙ্ক্তিটি হল “বন্দেমাতরম্ সুজলাং সুফলাং মলয়জ-শীতলাং শস্য-শ্যামলাং, মাতরম্।”
২. টীকা লেখোঃ
জাতীয় সংগীত, মঘোৎসব, বিশ্বভারতী, পুলিনবিহারী সেন, নীলরতন সরকার
উত্তরঃ
- জাতীয় সংগীতঃ জাতীয় সংগীত একটি দেশের সার্বিক ঐক্য এবং ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। বিশ্বের প্রত্যেক দেশের একটি জাতীয় সংগীত আছে। আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত রবীন্দ্রনাথের লেখা। অবশ্য ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫-ই আগস্টের আগে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বন্দেমাতরম্’ গানটি জাতীয় সংগীত হিসেবে ব্যবহার করা হত।
- মঘোৎসবঃ মাঘ মাসে পালিত উৎসব। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে মাঘ মাসে এই উৎসব পালিত হত। এই উৎসব উপলক্ষে প্রতিবার ঠাকুরবাড়ি সেজে উঠত। বাড়ির সদস্যরা নাচ, গান, নাটক করত। রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন লেখার এই উৎসবের কথা আছে।
- বিশ্বভারতীঃ বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের কাছে এটি আজ স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। শান্তিনিকেতনের মতো এটিও ভারত-সহ বিশ্ববাসীর কাছে অতি পবিত্র।
- পুলিনবিহারী সেনঃ দেশসেবক ও সুচিকিৎসক। খ্যাতনামা রবীন্দ্র-বিশারদও বটে। প্রবাসী পত্রিকার সম্পাদকরূপে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা হয়। বহু পুরস্কারে ভূষিত এই মানুষটি ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে মারা যান।
- নীলরতন সরকারঃ নীলরতন সরকার (Nilratan Sircar) একজন প্রবাদ প্রতিম ভারতীয় বাঙালি চিকিৎসক ও শিক্ষাবিদ যিনি বাংলার বহু শিক্ষা এবং গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানের উন্নতিকল্পে জড়িত ছিলেন। তাঁর নামেই কলকাতার এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটাল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাঙালিদের মধ্যে ডাক্তারি শিক্ষার প্রসারে নীলরতন সরকারের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। তাঁর সারাজীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে ‘নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ’ হিসেবে নামাঙ্কিত করা হয়।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখোঃ
৩.১. ‘জনগনমন’-কে জাতীয় সংগীত রূপে গ্রহণ করতে বিরোধিতা হয়েছিল কেন ? রবীন্দ্রনাথের ব্যাখ্যায় সেই বিরোধিতার অবসান কীভাবে ঘটেছিল ?
উত্তরঃ ‘জনগণমন’কে জাতীয় সংগীতরূপে গ্রহণ করতে বিরোধিতা হয়েছিল। কারণ- রবীন্দ্রবিরোধীরা মনে করতেন, এই গানটি পঞ্চম জর্জের ভারতে আগমন উপলক্ষ্যে রচিত। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ব্যাখ্যায় এই ধারণার অবসানও হয়। তিনি জানান গানটি লেখার কারণ, তাঁর এক বন্ধুর অনুরোধ। অবশ্য ওই বছর ভারত সম্রাটের আগমনের আয়োজন চলছিল। বন্ধুর অনুরোধ তাঁকে বিস্মিত করে। তিনি প্রবল প্রতিক্রিয়ায় ভারতভাগ্যবিধাতার জয় ঘোষণা করেন। আর এই বিধাতা কোনো পঞ্চম বা ষষ্ঠ জর্জ নন। তিনি জনগণের অন্তর্যামী, পথপরিচায়ক। ব্যাপারটি রবীন্দ্রনাথের রাজভক্ত বন্ধুও উপলব্ধি করেন।
৩.২. “রবীন্দ্রনাথ গানটিকে পরেও নানা উপলক্ষ্যে ব্যবহার করেছেন।”— ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের পরবর্তী সময়ে রবীন্দ্রনাথ কীভাবে এই গানটি ব্যবহার করেন ?
উত্তরঃ ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের পর রবীন্দ্রনাথ গানটিকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছেন। কখনও ব্রহ্মসংগীত হিসেবে আবার কখনও বা The morning song of India হিসেবে। গানটির সুর ও অর্থগৌরব উপলব্ধি করে থিয়োসফিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ গানটিকে প্রতিদিনের অ্যাসেম্বলি সং বা বৈতালিকরূপে চালু করে। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে জেনিভা সফরের পর রাশিয়াতে গিয়েও তিনি সেখানকার অনাথ বালক-বালিকাদের এই গানটি নিজে গেয়ে শুনিয়েছিলেন।