এই নিবন্ধে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণির সপ্তম অধ্যায় “কুমোরে পোকার বাসাবাড়ি” কবিতার প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 06 Bangla Chapter 7 Question Answer
Class 6 Bangla Chapter 07 Question Answer ষষ্ঠ শ্রেনীর বাংলা অধ্যায় ০৭ ‘ কুমোরে পোকার বাসাবাড়ি’ প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১.১ গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য বাংলা ভাষায় কী ধরনের লেখালিখির জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন ?
উত্তরঃ গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ রচনার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর রচনার মূল উপাদান ছিল প্রকৃতি ও প্রাণীজগৎ।
১.২ তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্যের লেখা একটি বইয়ের নাম ‘বাংলার মাকড়সা’।
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
২.১ কুমোরে পোকার চেহারাটি কেমন ?
উত্তর : কুমোরে পোকার রং আগাগোড়া মিশমিশে কালো, রোগা লিকলিকে। মাঝখানের সরু অংশটির রং হলদে।
২.২ কুমোরে পোকা কী দিয়ে বাসা বানায়?
উত্তর: কুমোরে পোকা কাদামাটি দিয়ে বাসা বানায়।
২.৩ কোন্ অদৃশ্য স্থানে কুমোরে পোকা বাসা বাঁধছে—তা কীভাবে বোঝা যায় ?
উত্তর: কুমোরে পোকা বাসা তৈরির জন্য মাটির ডেলাকে চেপে লম্বা করে চেপে বসাবার সময় তীক্ষ্ণ স্বরে একটানা গুন গুন শব্দ করে। কোন্ অদৃশ্যস্থানে কুমোরে পোকা বাসা বাঁধছে সেটা তার তীক্ষ্ণ স্বরে একটানা গুন গুন শব্দ শুনে বোঝা যায় ।
3.8 মাকড়সা দেখলেই কুমোরে-পোকা কী করে?
উত্তর: কোনোক্রমে একবার মাকড়সা দেখতে পেলে, ছুটে গিয়ে তার ঘাড় কামড়ে ধরে। কিন্তু কামড়ে ধরলেও একবারে মেরে ফেলে না। শরীরে হুল ফুটিয়ে এক রকম বিষ ঢেলে দেয়। কোনো কোনো মাকড়সাকে পাঁচ-সাতবার পর্যন্ত হুল ফুটিয়ে দেয়। এতে মাকড়সার মৃত্যু না হলেও অসাড় হয়ে পড়ে থাকে। সেই মাকড়সাকে কুঠুরির মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় ।
৩. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণ এবং বিশেষণ শব্দগুলিকে বিশেষ্য করো :
উত্তর:
বিশেষ্য বিশেষণ
স্থান স্থানীয়
নির্মাণ নির্মিত
সঞ্চয় সঞ্জিত
লম্বা লম্বাটে
নির্বাচন নির্বাচিত
৪. নীচের বাক্যগুলি থেকে অনুসর্গ খুঁজে বের করো :
৪.১ বাসা তৈরির জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজতে বের হয়।
উত্তর: অনুসর্গ—জন্য।
৪.২ সেই স্থান থেকে নির্বাচিত স্থানে যাতায়াত করে রাস্তা চিনে নেয়।
উত্তর: অনুসর্গ—থেকে।
৪.৩ সেই স্থানে কাদামাটি চাপা দিয়ে দেখছি।
উত্তর: অনুসর্গ—দিয়ে।
৫. উপযুক্ত প্রতিশব্দ পাঠ থেকে খুঁজে লেখো :
নির্মাণ, উপোযোগী, ভর্তি, সন্ধান, ক্ষান্ত।
উত্তর : নির্মাণ → তৈরি।
উপযোগী → উপযুক্ত।
ভর্তি → পূর্ণ।
সন্ধান → খোঁজ, অনুসন্ধান।
ক্ষান্ত → নিরস্ত।
৬. তুমি প্রতিদিন পিঁপড়ে, মৌমাছি, মাকড়সা প্রভৃতি কীটপতঙ্গ তোমার চারপাশে দেখতে পাও। তাদের মধ্যে একটি পর্যবেক্ষণ করো, আর তার চেহারা, স্বভাব, বাসা বানানোর কৌশল ইত্যাদি খাতায় লেখো।
উত্তর:
কীট/পতঙ্গের নাম মৌমাছি
কোথায় দেখেছ গাছের ডালে, ঘরের চালে।
চেহারা/গায়ের রং দেহ তিন খণ্ডএ বিভক্ত, গায়ের রং কালচে হলুদ।
কীভাবে চলে উড়ে উড়ে চলে।
কী খায় ফুলের মধু খায়।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য চাক তৈরি করে বসবাস করে। স্কুল থেকে মধু সংগ্রহ করে চাকে জমা করে।
বাসাটি দেখতে কেমন এরা যে চাক তৈরি করে তাতে অজস্র ছোট কুঠুরি আছে।
কীভাবে বানায় মৌমাছিদের পেটের নিম্নভাগে অবস্থিত গ্রন্থি থেকে মোম উৎপন্ন হয়। সেই মোমের সাহায্যে এরা চাক তৈরি করে।
৭. গঠনগতভাবে কোটি কী ধরনের বাক্য লেখো :
৭.১ ইতিমধ্যে মাটি শুকিয়ে বাসা শক্ত হয়ে গেছে।
উত্তর: সরল বাক্য ।
৭.২ একবার হুল ফুটিয়ে নিরস্ত্র হয় না।
উত্তর: সরল বাক্য ।
৭.৩ কাজেই এ থেকে মনে হয় যে কুমোরে পোকা ইচ্ছামতো ডিম পাড়বার সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
উত্তর: জটিল বাক্য ।
৭.৪ ভিজা মাটির উপর বসে এবং লেজ নাচাতে নাচাতে এদিক ওদিকে ঘুরে ফিরে দেখে।
উত্তর: যৌগিক বাক্য।
৮. নীচের প্রশ্নগুলি নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৮.১ কুমোরে-পোকার বাসাবাড়িটি দেখতে কেমন ?
উত্তর: কুমোরে পোকার বাসাবাড়িটি দেখতে অনেকটা লম্বাটে ধরনের, প্রায় সওয়া ইঞ্চি লম্বা।
৮.২ কুমোরে-পোকা বাসা বানানোর প্রস্তুতি কীভাবে নেয় ?
উত্তর: কুমোরে-পোকার ডিম পাড়ার সময় হলে উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে।তারপর পঞ্চাশ গজ ব্যবধানের মধ্যে নরম কাদামাটির সন্ধান করতে থাকে। সাধারণত কাদামাটির সন্ধান পেলেই ভালো করে রাস্তা চিনে নেয়। তারপর ওই নরম কাদামাটি মুখে করে নিয়ে এসে বাসা বাঁধে। সেখান থেকে বাসা তৈরির স্থান পর্যন্ত পথটি ভালো করে চিনে নেয়।
৮.৩ কুমোরে-পোকার বাসা বানানোর প্রক্রিয়াটি নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: বাসা নির্মাণের জন্য মাটি সংগ্রহ করবার সময় উড়ে গিয়ে ভিজা মাটির উপর বসে এবং লেজ নাচাতে নাচাতে এদিক-ওদিক ঘুরেফিরে দেখে। উপযুক্ত মনে হলেই সেখান থেকে ভিজা মাটি তুলে নিয়ে চোয়ালের সাহয্যে খুব ছোট্ট এক ডেলা মাটি মটরদানার মতো গোল করে মুখে করে উড়ে যায়।মাটি খুঁড়ে তোলবার সময় অতি তীক্ষ্ণ স্বরে একটানা গুনগুন শব্দ করতে থাকে। মুখ দিয়ে চেপে চেপে মাটির ডেলাটিকে দেয়ালের গায়ে অর্ধ-চক্রাকারে বসিয়ে দেয়। মাটির ডেলাটিকে লম্বা করে চেপে বসাবার সময়ও তীক্ষ্ণস্বরে একটানা গুনগুন শব্দ করতে থাকে। মাটি তোলবার সময় কোনো পোকা তার কাছে এসে পড়লে মাটি তোলা বন্ধ রেখে তাকে ছুটে গিয়ে তাড়া করে। তারপর আবার মাটি এনে ভিতরের দিকে ফাঁকা রেখে ক্রমশ উপরের দিকে বাসা গেঁথে তুলতে থাকে। প্রায় সওয়া ইঞ্চি লম্বা হলেই গাঁথুনি শেষ করে। এরূপ একটি কুঠুরি তৈরি করতে প্রায় দু-দিন সময় লেগে যায়। ইতিমধ্যে মাটি শুকিয়ে বাসা শক্ত হয়ে যায়। কুমোরে-পোকা তখন কুঠুরির ভিতরে প্রবেশ করে মুখ থেকে একপ্রকার লালা নিঃসৃত করে তার সাহায্যে কুঠুরির ভিতরের দেয়ালে প্রলেপ মাখিয়ে দেয়।
৮.৪ ‘এইসব অসুবিধার জন্য অবশ্য বাসা নির্মাণে যথেষ্ট বিলম্ব ঘটে।’— কোন্ অসুবিধাগুলির কথা এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ?
উত্তর: প্রবন্ধে লেখক জানিয়েছেন কুমোরে পোকা কাছাকাছি কোনো স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করে বাসার একটা কুঠুরি নির্মাণ প্রায় শেষ করে এনেছে এমন সময় সেই স্থানে লেখক কাদামাটি চাপা দিয়ে বা বাসাটা সরিয়ে দিয়ে দেখেছেন। সংস্কারবশত বা বুদ্ধি করে কুমোরে পোকাটা বাসার সন্ধান না পেয়ে আবার পূর্বের জায়গায় বাসা বানানো শুরু করেছে। তাই লেখক স্বীকার করেছেন এই অসুবিধার জন্য অবশ্য বাসা নির্মাণে তার যথেষ্ট বিলম্ব ঘটেছে।
৮.৫ কুমোরে-পোকার শিকার ধরার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করো। শিকারকে সে কীভাবে সংগ্রহ করে?
উত্তর: কুমোরে পোকা বেছে বেছে এরূপ ভ্রমণকারী মাকড়সা শিকার করে থাকে। কোনোরকমে মাকড়সা একবার চোখে পড়লেই হলো, ছুটে গিয়ে তার ঘাড় কামড়ে ধরে। কিন্তু কামড়ে ধরলেও একেবারে মেরে ফেলে না। শরীরে হুল
ফুটিয়ে একরকম বিষ ঢেলে দেয়। একবার হুল ফুটিয়ে নিরস্ত হয় না। কোনো কোনো মাকড়সাকে
পাঁচ-সাতবার পর্যন্ত হুল ফুটিয়ে থাকে। এর ফলে মাকড়সাটার মৃত্যু হয় না বটে, কিন্তু একেবারে অসাড়ভাবে পড়ে থাকে। তখন কুমোরে-পোকা অসাড় মাকড়সাকে মুখে করে নবনির্মিত কুঠুরির মধ্যে উপস্থিত হয়। কুঠুরির নিম্নদেশে মাকড়সাটাকে চিত করে রেখে তার উদরদেশের এক পাশে লম্বাটে ধরনের একটি ডিম পাড়ে। ডিম পেড়েই আবার নতুন শিকারের সন্ধানে বের হয়। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে দশ-পনেরোটা মাকড়সা সংগ্রহ করে সেই কুঠুরির মধ্যে জমা করে আবার দু-তিন ডেলা মাটি এনে কুঠুরির মুখ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।
৮.৬ ‘বাসার আর কোনো খোঁজ খবর নেয় না’— কখন কুমোরে পােকা তার বাসার আর কোনো খোঁজ খবর নেয় না ?
উত্তর: কুমোরে-পোকা শিকার ধরে কুঠুরির মধ্যে রেখে সেখানে ডিম পেড়ে কুঠুরির মুখ বন্ধ করে। তারপর অন্য কুঠুরি নির্মাণ করতে শুরু করে। একটি বাসায় চার-পাঁচটি কুঠুরি নির্মাণ করে ডিম পাড়া সম্পূর্ণ হলে সে তার ইচ্ছা মতো যে-কোনো স্থানে চলে যায়। বাচ্চাদের জন্য খাদ্য সঞ্চিত রেখেই সে খালাস। তার বাসার আর কোনো খোঁজ খবর নেয় না।