এই নিবন্ধে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণির নবম অধ্যায় ” মরশুমের দিনে ” কবিতার প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 06 Bangla Chapter 9 Question Answer
Class 6 Bangla Chapter 09 Question Answer ষষ্ঠ শ্রেনীর বাংলা অধ্যায় ০৯ ‘ মরশুমের দিনে ‘ প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১.১ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থটির নাম কী ?
উত্তর: সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থটির নাম ‘পদাতিক’।
১.২ তাঁর লেখা একটি গদ্যের বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর: সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের একটি গদ্যের বই-এর নাম ‘ঢোল গোবিন্দের আত্মদর্শন’।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১ ধান শব্দটি কোন্ শব্দ থেকে এসেছে?
উত্তর: ‘ধান’ শব্দটি ‘ধন’ শব্দ থেকে এসেছে।
২.২ ‘অগ্রহায়ণ’ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর: ‘অগ্র’ মানে ‘আগে’ আর ‘হায়ন’ মানে ‘বছর’। সুতরাং অগ্রহায়ণ মানে বছরের আরম্ভ।
২.৩ এদেশের সমস্ত পালা-পার্বণ, আনন্দ-উৎসব — এসবের মূলে কী রয়েছে?
উত্তর: এদেশের সমস্ত পালা-পার্বণ, আনন্দ-উৎসবের মূলে আছে চাষবাস বা কৃষিকাজ।
২.৪ বসুধারা ব্রত কোন্ ঋতুতে হয় ?
উত্তর: বসুধারা ব্রত গ্রীষ্ম ঋতুতে হয়।
২.৫ মেঘকে নামাবার জন্য মেয়েরা দল বেঁধে ছড়া করে তাকে কী কী নামে ডাকে?
উত্তর: মেঘকে নামাবার জন্য মেয়েরা দল বেঁধে ছড়া করে তাকে যেসব নামে ডাকে- ধুলোট মেঘা, কালো মেঘা, তুলোট মেঘা, ফুলতোলা মেঘা, আড়িয়া মেঘা, হাড়িয়া মেঘা, কুড়িয়া মেঘা।
৩. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণ এবং বিশেষণ শব্দগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করাে : মফসসল, বৎসর, খর, ব্রত, বিস্তর, পর্বত, ঝড়।
উত্তর:
বিশেষ্য বিশেষণ
মফল মফসসলীয়
বৎসর বাৎসরিক
বিস্তারিত বিস্তার
খরতা খর
ঝড় ঝড়ো
পর্বত পার্বত্য
ব্রত ব্রতী
৪. নীচের বাক্যগুলি গঠনগতভাবে কোটি কী ধরনের লেখো (সরল/ যৌগিক/ জটিল) :
8.১ গ্রামের যাত্রীরা নেমে নেমে যাবে মাঝরাস্তায়।
উত্তর: সরল বাক্য ।
৪.২ যেখানে ঘাসের চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না, হঠাৎ চোখে পড়বে সেখানে যেন কে সবুজ জাজিম পেতে রেখেছে।
উত্তর: জটিল বাক্য।
৪.৩ আয় বৃষ্টি ঝেপে, ধান দেব মেপে।
উত্তর: যৌগিক বাক্য ।
8.8 খড় কিংবা টিনের চাল।
উত্তর: যৌগিক বাক্য ।
৫. নীচের বাক্যগুলি থেকে শব্দ বিভক্তি এবং অনুসর্গ খুঁজে নিয়ে লেখাে :
৫.১ কেউ এসেছিল দোকানের জন্য মাল তুলতে।
উত্তর: দোকানের জন্য—অনুসর্গ—“জন্য।
৫.২ বৃষ্টির ঝমঝম শব্দে অন্য সমস্ত আওয়াজ ডুবে যায়।
উত্তর: শব্দবিভক্তি— শব্দে-‘এ’ বিভক্তি।
৫.৩ সন্ধে নাগাদ উলু দিয়ে ব্রত শেষ হয়।
উত্তর: শব্দবিভক্তি— সন্ধে ‘এ’। অনুসর্গ-‘দিয়ে’।
৫.৪ ছেলেরা হই হই করে ছােটে আমবাগানে।
উত্তর: শব্দ বিভক্তি—আমবাগানে-‘এ’।
৬.পাঠ থেকে নিম্নলিখিত শব্দগুলির সমার্থক শব্দ খুঁজে লেখো : অম্বর, ধরা, মৃত্তিকা, প্রান্তর, তটিনী।
উত্তর: অম্বর—আকাশ।
ধরা—পৃথিবী।
মৃত্তিকা—মাটি।
প্রান্তর —মাঠ।
তটিনী —নদী।
৭. নীচের সমোচ্চারিত/প্রায়-সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ লেখো।
উত্তর: ধোয়া—ধৌত করা/ধোঁয়া—ধূম।
জলে—জলের মধ্যে/জ্বলে—প্রজ্বলিত হয়।
বাধা—বিপদ/বাঁধা— আটকানো।
গায়ে—শরীরে/গাঁয়ে — গ্রামে।
ঝরে—খসে পড়ে/ঝড়ে ঝড়বৃষ্টিতে।
৮. শুদ্ধ বানানটিতে / চিহ্ন দাও :
৮.১ মুহূর্ত/মূহুর্ত/মুহূর্ত।
উত্তর: মুহূর্ত।
৮.২ অগ্রহায়ন/অগ্রহায়ন/অগ্রহায়ণ।
উত্তর: অগ্রহায়ণ।
৮.৩ বিলক্ষণ/বিলক্ষন/বিলখ্যন।
উত্তর: বিলক্ষণ।
৮.৪ মরিচিকা/মরীচিকা/মরীচীকা।
উত্তর : মরীচিকা ।
৯. বেলা, ডাল, সারা, চাল—এই শব্দগুলিকে দুটি পৃথক অর্থে ব্যবহার করে দুটি করে বাক্য লেখো।
উত্তর:
১। বেলা (সময় অর্থে) – অনেক বেলা হয়ে গেলো, এখনো কাজ সারা হলো না।
বেলা (সৈকত অর্থে)— সমুদ্রের বেলাভূমিতে হাঁটা অত্যন্ত মনােরম।
২। ডাল (গাছের শাখা অর্থে)— গাছের উঁচু ডালে একটি পাখি বসে আছে।
ডাল (দানাশস্য অর্থে)— মুসুর ডালে প্রােটিনের পরিমাণ বেশি থাকে।
৩। সারা (সম্পন্ন অর্থে)— বর্ষার দিনে সকাল সকাল কাজ সারা উচিত।
সারা (সমস্ত অর্থে) – সারা সকাল ছেলেটা দৌড়ে বেড়ালো ।
৪। চাল (খাদ্য বিশেষ অর্থে)—ধান থেকে চাল হয়।
চাল (বাড়ির ছাউনি অর্থে)— আগে গ্রামে টালির চালের বাড়ি অনেক দেখা যেত।
১০. টীকা লেখাে : মরীচিকা, বসুধারা, ব্ৰত, মেঘরানির কুলাে, ভাদুলি।
উত্তরঃ
মরীচিকা: দিনেরবেলা মরুভূমিতে দূর থেকে দেখলে যেন মনে হয় ওখানে জল আছে। সূর্যের আলাে পড়ে বালি চকচক করলে জল ভেবে ভুল হয়। যতই এগিয়ে যাওয়া যায় ওই জলস্থান দূরে সরে চলে যায়। কখনও ওর নাগাল পাওয়া যায় না। মরুভূমিতে ওই জলের ভ্রান্ত ধারণাকে মরীচিকা বলা হয়।
বসুধারা ব্রত: আকাশের কাছে জল চেয়ে বসুন্ধরা ব্রত করা হয়। গ্রীষ্মকালে মাঠঘাট, নদনদী খালবিল শুকিয়ে যায়। জলের জন্য হাহাকার দেখা যায়। সূর্যরশ্মিতে তখন যেন আগুন ঝরে পড়ে। লোকে ছায়া খোঁজে। তখন আকাশের কাছে জল চেয়ে বসুধরা ব্রত করে।
মেঘরানির কুলাে: বৃষ্টির অভাব দেখা দিলে ‘মেঘরানির কুলাে’ নামাবার প্রথা আছে। কুলাে, জল ঘট নিয়ে চাষি ঘরের অল্পবয়সি মেয়েরা দলে দলে পাড়ায় বেরিয়ে পড়ে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে গান গায়। বাড়ি বাড়ি গান গেয়ে তারা চাল, তেল, সিঁদুর পায়, কখনও দু চারটে পয়সা আর পান সুপারি পায়। দল বেঁধে তারা গায়।
ভাদুলি: বর্ষার শেষাশেষি মেয়েরা করে ভাদুলি ব্রত। মাটিতে আঁকে আল্পনা ; সাতসমুদ্র তেরাে নদী, নদীর চড়া, কাটার পূর্বত, বন, তেল, বাঘ, মােষ, কাক, বক, তালগাছে বাবুইয়ের বাসা। এ ব্রত সেই দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন এদেশে সওদাগররা সাতডিঙা ভাসিয়ে সমুদ্রে বাণিজ্যে যেত। ব্রতের ছড়ায় আজও সে ছবি ধরা আছে।
১১, নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১১.১ বাস– ডিপোয় অপেক্ষামান যাত্রীদের ছবি কীভাবে পাঠাংশে ধরা পড়েছে?
উত্তর: বাস-ডিপোয় বাস দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রীরা বাসের ভিতরে নিজের নিজের জায়গায় হাতের জিনিস রেখে অনেকেই বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। চায়ের দোকানে বসে থাকা ড্রাইভারের দিকে নজর রেখে যাত্রীর দল কাছে পিঠে ঘুরতে থাকে।তারা গরমের সময় হাওয়া খায় ও শীতের সময় রোদ পোহায়।
১১.২ গ্রামের সঙ্গে শহরের যে এখনও নাড়ির টান’–এই নাড়ির টানের প্রসঙ্গ রচনাংশে কীভাবে এসেছে ?
উত্তর: মাঠে ফসল উঠলে বাসে ভিড় হয়। লােকে মেয়ে দেখতে, পুজো দিতে এখানে সেখানে যায়। জিনিস কিনতে, সিনেমা দেখতে, মামলার তদবির-তদারকি করতে শহরে যায়। উকিল-মােক্তার, বামুন-পুরুত, দরজি-দোকানি দুটো পয়সার মুখ দেখে। এইভাবেই গ্রামের সঙ্গে শহরের নাড়ির টানের প্রসঙ্গ এসেছে।
১১.৩ ‘ধানের সবচেয়ে বড়ো বন্ধু বৃষ্টি’—বৃষ্টির সময়ে ধানক্ষেতের ছবিটি কেমন? অন্য যে যে সময়ে ধান চাষ হয়ে থাকে, তা লেখো।
উত্তর: বৃষ্টির সময় ধানক্ষেত জলে ভরে যায়। জমিতে লাঙ্গল দেওয়ার পর ধানের চারা রোয়া হয়। চারাগাছগুলি বৃষ্টিতে আরও বড়ো হয়। অঝোর বৃষ্টির ধারা কাঁচা ধানগাছে পড়ে এক অপূর্ব চিত্র তৈরি করে। বাতাসে সবুজ ধানগাছগুলো মাথা দুলিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে।
বর্ষা ছাড়াও বৈশাখ মাসে এবং শীতকালেও ধানের চাষ হয়।
১১.৪ আগে বছর আরম্ভ হতে অগ্রহায়ণে’–এর সম্ভাব্য কারণ কী?
উত্তর: আগে বছর আরম্ভ হত অগ্রহায়ণে।কারন অগ্র মানে প্রথম হায়ণ মানে বছর। অগ্রহায়ণ মানে বছরের গোড়া। হায়ণ কথাটার আর এক মানে ফসল। মানুষ বছরের শুরুতে সৌভাগ্য কামনা করত বলে বছর অগ্রহায়ণ মাসে শুরু হত।
১১.৫ ‘এদেশের যত পালা-পার্বণ, উৎসব-আনন্দ, সবকিছুরই মূলে রয়েছে চাষবাস।’— বাংলার উৎসব-খাদ্য-সংস্কৃতির সঙ্গে চাষবাস কতটা জড়িত বলে তুমি মনে করাে ?
উত্তর: বাংলা কৃষিপ্রধান দেশ। অধিকাংশ বাঙালি পরিবার কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। কৃষিজাত ফসল বিক্রি করে তারা তাদের প্রয়ােজনীয় সামগ্রী কেনে। তাদের জীবিকা নির্বাহ মূলত কৃষিজ ফসল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। তাদের খাদ্য-সংস্কৃতির ধারা অর্থের উপর নির্ভরশীল। তাই বাংলার যত পালা-পার্বণ, উৎসব-আনন্দ, সবকিছুর মূলে রয়েছে চাষবাস।
১১.৬ শহর ছাড়ালেই দু-পাশে দেখা যাবে’—শহরের চিত্রটি কেমন? তা ছাড়িয়ে গেলে কোন্ দৃশ্য দেখা যাবে?
উত্তর: শহরে দেখা যাবে পাকা রাস্তা, ঘনঘন পাকা বাড়ি, সুসজ্জিত বহু দোকানপাট, নানারকম গাড়িঘোড়া, হাসপাতাল, সিনেমা, বাজার, অফিস-আদালত প্রভৃতি। গাছপালা নাই বললেই চলে।
শহর ছাড়ালেই দুপাশে দেখা যাবে মাথার ওপর দরাজ আকাশ। বাস রাস্তার দুধারে বট-পাকুড় শাল-সেগুনের গাছ। তার ডালে দৃষ্টি মাঝে মাঝে আটকে যাবে। কালো কুচকুচে বাঁধানো রাস্তা। মাঝে মাঝে বাঁক নিয়ে সোজা সামনে চলে গেছে। লোকালয় ছাড়ালেই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। বড়ো গ্রামে কিছু কিছু পাকা বাড়ি দেখা যায়। ছোটো গ্রামের বাড়িগুলি মাটির—খড়, বা টালির ছাউনি। একেক ঋতুতে প্রকৃতির এক এক রূপ।
১১.৭ এই রাস্তার ওপরই এক ভারি মজার দৃশ্য দেখা যায়’—মজার দৃশ্যটি কেমন, তা নিজের ভাষায় লেখ৷
উত্তর: গরমকালে চারিদিকে যখন প্রচণ্ড দাবদাহে রাস্তা তেঁতে ওঠে। রাস্তার ওপর দিয়ে বাস চলার সময় দূরে তাকিয়ে মনে হয় যেন জল চিকচিক করছে। আর সেই জল উলটো হয়ে পড়েছে দু-পাশের গাছের ছায়া বা সামনের গাড়ির ছায়া। কাছে এগিয়ে গেলে কোথাও জল বা গাছের ছায়া দেখা যাবে না। তা ঠিক মরুভূমির মরীচিকার মত যা ধরাছোঁয়ার বাইরে।।
১১.৮ ‘ব্রতের ভিতর দিয়ে মনে পড়ে যায় সেই আপনজনদের কথা, যারা দূরে আছে’—শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নিয়ে এমনই কিছু ব্ৰত’র ছড়া খাতায় সংগ্রহ করাে।
উত্তর: নিজে করাে।
১১.৯ বিভিন্ন ঋতু বিষয়ক প্রচলিত ছড়া আর ছবি সাজিয়ে নিজেরা লিখে বিদ্যালয়ে একটি দেয়াল পত্রিকা তৈরি করাে।
উত্তর: নিজে করাে।
১১.১০ ‘ধান কাটার পর একেবারে আলাদা দৃশ্য’—এই দৃশ্যে কোন্ ঋতুর ছবি ফুটে উঠেছে ? সেই ঋতু সম্পর্কে কয়েকটি বাক্যে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করাে।
উত্তর: এই দৃশ্যে গ্রীষ্ম ঋতুর ছবি ফুটে উঠেছে।
বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাস গ্রীষ্ম ঋতু। গ্রীষ্মকালে সূর্যের তাপ প্রচন্ড বাড়ে। সবুজ গাছপালা শুকিয়ে আসে। মাঠ-ঘাট রুক্ষ। মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডােবা সব শুকিয়ে যায়।চারিদিকে জলের জন্য হাহাকার পড়ে যায়। মানুষ, জীবজন্তু গরমে হাসফাস করতে থাকে। মাঝে মাঝে আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরে পড়ে। গাছপালা সব ঝলসে যায়। লােকজন ছায়া খুঁজে বেড়ায়। লােকের পায়ে চলা রাস্তা যাবে বট-অশ্বথের তলা দিয়ে, আম-কাঁঠালের ছায়ার ভিতর দিয়ে। প্রকৃতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। গ্রীষ্মকালে মাঝে মাঝে কালবৈশাখীর ঝড় দেখা দেয়। তখন সামান্য বৃষ্টি হয় ও গরম কিছুটা কমে। গ্রীষ্মকালে নববর্ষ, রবীন্দ্র জয়ন্তী, জামাইষষ্ঠী প্রভৃতি মানুষের মনে আনন্দ এনে দেয়।