এই নিবন্ধে আমরা পঞ্চম শ্রেণির দ্বাদশ অধ্যায় অর্থাৎ “মধু আনতে বাঘের মুখে
” কবিতার প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 05 Bangla Chapter 12 Question Answer
Class 5 Bangla Chapter 12 Question Answer | পঞ্চম শ্রেনীর বাংলা অধ্যায় ১২ ‘ মধু আনতে বাঘের মুখে’ প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১. জেনে নিয়ে করো :
১.১ সুন্দরবনের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, তা কোন দুটি জেলায়, মানচিত্র থেকে খুঁজে বের করো ।
উত্তর : সুন্দরবনের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, তা উত্তর চব্বিশ পরগণা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা এই দুটি জেলায় অবস্থিত ।
১.২ সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যে যে নদী বয়ে গেছে, তাদের নামগুলি লেখো ।
উত্তর : সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যে যে নদী বয়ে গেছে, তাদের নামগুলি হল বিদ্যাধরী, মাতলা, মাথাভাঙা প্রভৃতি ।
১.৩ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ অঞ্চলটি কোন সমুদ্র-উপকূলে অবস্থিত তা মানচিত্র থেকে খুঁজে বের করো ।
উত্তর : পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ অঞ্চলটি বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র-উপকূলে অবস্থিত ।
১.৪ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের বৈশিষ্ট্য শিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে লেখো ।
উত্তর : ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের বৈশিষ্ট্য হল –
১. এই বনাঞ্চলে সর্বদা চিরহরিৎ উদ্ভিদ দেখা যায় ।
২. এখানকার বেশিরভাগ উদ্ভিদে শ্বাসমূল ও ঠেসমূল দেখা যায় ।
৩. এই বনাঞ্চলের উদ্ভিদদের জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম দেখা যায় ।
৪. এখানকার উদ্ভিদের পাতা পুরু তাই তাদের জলধারণ ক্ষমতা বেশি হয়।
৫. এই বনাঞ্চলের উদ্ভিদেরা লবণাক্ত জল সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে ।
৬. এখানে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা দেখা যায় ।
৭. ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের উদ্ভিদদের মধ্যে সুন্দরী, খলসি, গেওয়া, কেওড়া, গরান, হোগলা, গোলপাতা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ।
২. গল্প থেকে তথ্য নিয়ে বাক্যগুলি পূর্ণ করো :
সুন্দরবনে মধু কাটতে গিয়েছিল ধনাই, আর্জান আর কফিল । মধু কাটতে তিনজন লোক চাই । তিনজনের কাজ হলো চাক কাটা, মৌমাছি তাড়ানো, এবং ধামা হাতে চাকের নীচে দাঁড়ানো । বাঘ ধনাই কে আক্রমণ করেছিল, কিন্তু সে নিজেই উলটে পড়ল ‘শিষের’ ভিতর । মধুর কলস পড়ল মাথার উপর । বাঘের সারা মুখে নাকে/চোখে মধু ছিটকে পড়ল ।
৩. এদের মধ্যে যে যে কাজটা করত :
ধনাই : চট মুড়ি দিয়ে গাছে উঠে কাস্তে দিয়ে চাক কাটতো ।
আর্জান : লম্বা কাঁচা বাঁশের মাথায় মশাল জ্বেলে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়াতো ।
কফিল : একটা বড়ো ধামা হাতে চাকের নীচে দাঁড়াতো যাতে চাক কাটা শুরু হলে সেগুলি মাটিতে না পড়ে ধামার মধ্যেই পড়ে ।
৪. অর্থ লেখো :
ধামা- শস্য রাখা বা মাপার জন্য তৈরি বেতের ঝুড়ি
গোঁয়ার্তুমি- একগুয়েমি জেদের ভাব
চট- পাটের সুতো থেকে তৈরি মোটা কাপড়
হাজির- উপস্থিত
ঝিরঝিরে- মৃদু ঝরঝর আওয়াজ
৫. বাক্য রচনা করো :
নাস্তা, মৌচাক, রং, স্ফূর্তি, কলস
৫. নম্বর প্রশ্নের উত্তর তোমরা নিজেরা লেখো ।
৬. কোনটি কোন ধরনের শব্দ তা শব্দঝুড়ি থেকে বেছে নিয়ে লেখো :
এক, কাটে, আর, ভুল, পথ, বিশ্বাস, গোঁয়ার, বোঝাই, গভীর, সকাল, ডাঙা, সরু, তাড়ায়, তার, চিৎকার, মারল, সে, ওদের, ছোটো, কিন্তু, ও, বেজায়, শক্তি, নিয়েছে ।
উত্তর :
বিশেষ্য- ভুল, পথ, বিশ্বাস, বোঝাই, সকাল, ডাঙা, চিৎকার, শক্তি
বিশেষণ- এক, গোঁয়ার, গভীর, সরু, ছোটো, বেজায়
সর্বনাম- তার, সে, ওদের
অব্যয়- আর, কিন্তু, ও
ক্রিয়া- কাটে, তাড়ায়, মারল
৭. নিম্নলিখিত শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :
কাঁচা-পাকা
ভর্তি-খালি/ ফাঁকা/ শূন্য
তীক্ষ্ণ-ভোঁতা
দীর্ঘ-হ্রস্ব
বোঝাই-খালি/ ফাঁকা/ শূন্য
৮. সমার্থক শব্দ লেখো :
মৌমাছি – মধুমক্ষিকা, মধুকর, শিলীমুখ, মধুলিহ, ভ্রমর, ভোমরা ।
বাঘ – ব্যাঘ্র, শের, শার্দুল, কর্বর, হিংসারু, দ্বীপী, গুহাশয় ।
ফুল – পুষ্প, কুসুম, প্রসূন, রঙ্গন, রঙ্গনা, গুল ।
বন – জঙ্গল, অরণ্য, কানন, কান্তার ।
মাটি – মৃত্তিকা, জমি, ভূতল, আশ্রয়, ভূমি, খাক ।
৯. নীচের ঝুড়িতে বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর নাম দেওয়া রয়েছে । আমাদের সুন্দরবনে এদের মধ্যে কার কার দেখা মেলে :
কুমির, গন্ডার, সিংহ, জিরাফ, ভাল্লুক, হরিণ, জেব্রা, ক্যাঙারু, জলহস্তী, লালপান্ডা, হাতি, কচ্ছপ, বুনোমহিষ, শিয়াল, কাঁকড়া, বাঁদর, সাপ, শজারু, শূকর, হায়না, ওরাংওটাং, গোরিলা, রয়াল বেঙ্গল টাইগার ।
উত্তর : আমাদের সুন্দরবনে দেখা মেলে কুমির, হরিণ, কচ্ছপ, শিয়াল, কাঁকড়া, বাঁদর, সাপ, শজারু, শূকর, হায়না, রয়াল বেঙ্গল টাইগার ।
১০.১ পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল কোথায় রয়েছে ?
উত্তর : পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনে রয়েছে ।
১০.২ সুন্দরবনের খ্যাতি ও সমাদরের দুটি কারণ লেখো ।
উত্তর : সুন্দরবনের খ্যাতি ও সমাদরের দুটি কারণ –
১. সুন্দরবনের ঐতিহ্য হল এখানকার বিরল জীববৈচিত্র্য, বিচিত্র গাছগাছালি, নৈসর্গিক দৃশ্যাবলি, নদী-খাঁড়ি-জলপথ এবং রাজকীয় বাংলার বাঘ/ রয়াল বেঙ্গল টাইগার ।
২. এছাড়া প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা ও সংক্ষরিত অবস্থায় টিকে থাকা পৃথিবীর একক-বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও অভয়ারণ্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হল সুন্দরবন ।
১০.৩ কোন কোন গাছে সাধারণত মৌচাক দেখা যায় ?
উত্তর : খলসি, গেওয়া, কেওড়া, গরান ইত্যাদি গাছে সাধারণত মৌচাক দেখা যায় ।
১১. ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো ।
উত্তর :
ক খ
মধু মৌচাক
নাস্তা জলখাবার
কাস্তে কাটারি
ডিঙি ছোটো নৌকা
শিষে ছোটো সরু খাদ
সাঁকো সেতু
১২. গল্পের ঘটনাগুলি ক্রমানুসারে সাজিয়ে লেখো :
১২.১ মনের আনন্দে একটার পর একটা মধুর চাক কেটে চলেছে ।
১২.২ আর্জান এক থাবা কাদা তুলে গোল করে পাকিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে মারল চাক লক্ষ করে ।
১২.৩ পেটপুরে নাস্তা খেয়ে বনে মধু কাটার জন্য তৈরি হল ।
১২.৪ কয়েকটা মৌমাছি ওদের দিকে তাড়া করল ।
১২.৫ ডিঙি করে অনেক দূর বনের ভিতর গিয়ে তিনজনে ডাঙায় উঠেছে ।
উত্তর :
১) ১২.৩ পেটপুরে নাস্তা খেয়ে বনে মধু কাটার জন্য তৈরি হল ।
২) ১২.৫ ডিঙি করে অনেক দূর বনের ভিতর গিয়ে তিনজনে ডাঙায় উঠেছে ।
৩) ১২.১ মনের আনন্দে একটার পর একটা মধুর চাক কেটে চলেছে ।
৪) ১২.২ আর্জান এক থাবা কাদা তুলে গোল করে পাকিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে মারল চাক লক্ষ করে ।
৫) ১২.৪ কয়েকটা মৌমাছি ওদের দিকে তাড়া করল ।
১৩.১ শিবশঙ্কর মিত্রের লেখালেখির প্রিয় বিষয় কোনটি ?
উত্তর : শিবশঙ্কর মিত্রের লেখালেখির প্রিয় বিষয় ‘সুন্দরবন’ ।
১৩.২ কোন বইয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ শিশু সাহিত্যের পুরষ্কার পান ?
উত্তর : ‘সুন্দরবন’ বইয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ শিশু সাহিত্যের পুরষ্কার পান ।
১৩.৩ সুন্দরবনকে নিয়ে লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম লেখো ।
উত্তর : সুন্দরবনকে নিয়ে লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম হল ‘বনবিবি’, ‘বিচিত্র এই সুন্দরবন’ ।
১৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৪.১ বসন্তকালে সুন্দরবনের দৃশ্যটি কেমন তা নিজের ভাষায় পাঁচটি বাক্যে লেখো
উত্তর : বসন্তকালে সুন্দরবনের দৃশ্যটি থাকে অত্যন্ত মনোরম । এই সময় সুন্দরবনে নানা গাছে নানা ফুল ধরে । গরান গাছে হলদে রঙের ছোটো ছোটো ফুল ধরে । ফুলের গন্ধে, হলুদ রঙে আর মৌমাছির গুঞ্জনে সারা বন মেতে ওঠে । এই সময় ঝিরঝিরে বসন্তের হাওয়াও বইতে থাকে ।
১৪.২ যদি তুমি কখনও সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাও, তবে কাকে কাকে সঙ্গে নেবে ? জিনিসপত্রই বা কী কী নিয়ে যাবে ?
১৪.২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর তোমরা নিজেরা লেখো ।
১৪.৩ ‘বাংলার বাঘ’ নামে কে পরিচিত ?
উত্তর : ‘বাংলার বাঘ’ নামে পরিচিত স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ।
১৪.৪ ‘বাঘাযতীন’ নামে কা পরিচিত ?
উত্তর : ‘বাঘাযতীন’ নামে কা পরিচিত বিপ্লবী নেতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ।
১৪.৫ ‘সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ’ । – এই বিষয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো ।
উত্তর : সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গেলে রয়াল বেঙ্গল টাইগার, শিয়াল, সাপ, শূকর, হায়না প্রভৃতি প্রাণীর সম্মুখে পড়ার সম্ভাবনা থাকে । সুন্দরবনের গা ঘেষে বয়ে চলা নদীর মধ্যে কুমিরও থাকে । এখানকার বেশিরভাগ গাছের শ্বাসমূল থাকায় মাটিতে খুব সাবধানে পা ফেলে চলতে হয় । মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করার সময় মৌমাছির হুল ফোটানোর সম্ভাবনা থাকে । এইসব কারণে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ ।
১৪.৬ ধনাই কীসের মন্ত্র জানে ?
উত্তর : লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে ধনাই মৌমাছিকে ভুল পথে চালোনা করার মন্ত্র জানে ।
১৪.৭ গরান গাছের ফুল দেখতে কেমন ?
উত্তর : গরান গাছের ফুল ছোটো ছোটো হলদে রঙের ।
১৪.৮ ডিঙি করে মধু সংগ্রহ করতে কে কে গিয়েছিল ?
উত্তর : লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে ডিঙি করে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছিল ধনাই, আর্জান ও কফিল ।
১৪.৯ টীকা লেখো – ‘ট্যাক্’, ‘শিষে’ ।
উত্তর :
ট্যাক্ – দুটো ছোটো নদী মিশে যখন একটা ত্রিভুজ খন্ড তৈরি করে, তখন ঐ ত্রিভুজ আকারের জমির মাথাকে ‘ট্যাক’ বলা হয় ।
শিষে – বনের মধ্যে যে সরু ছোটো ছোটো খাদ দেখা যায় তাকে শিষে বলে । শিষে সাধারণত তিন চার হাত চওড়া হয় ।
১৪.১০ মধুর চাক খুঁজে পাওয়ার পন্থাটি কী ?
উত্তর : মধুর চাক খুঁজে পাওয়ার পন্থাটি হলো, মৌমাছি ফুল থেকে মধু নিয়ে কোনদিকে ছুটে চলেছে, তা লক্ষ করা এবং তার পিছু পিছু সেদিকে যাওয়া ।
১৪.১১ কফিল ও আর্জানকে পেছনে ফিরে ডাকার সময় ধনাই কী দেখেছিল ?
উত্তর : লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে কফিল ও আর্জানকে পেছনে ফিরে ডাকার অবকাশ ধনাই পায়নি । তার আগেই বিকট হুঙ্কারে বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে তার উপর ।
১৪.১২ বাঘটা শিষের ভিতর পড়ে গেল কীভাবে ?
উত্তর : লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে বাঘটা ধনাইকে লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিলেও, লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়ে সে ধনাইকে ডিঙিয়ে গিয়ে পড়ে তবলা গাছের উপর । গাছটাতে ঠোক্কর লেগে বাঘের মাথায় আঘাত লাগে এবং সে উলটে গিয়ে ধপাস করে পড়ে শিষের ভিতর ।
১৪.১৩ ধনাই কীভাবে বাঘের হাত থেকে বেঁচে গেল ?
উত্তর : লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে বাঘটা তবলা গাছে ঠোক্কর খেয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে উলটে গিয়ে ধপাস করে পড়ে শিষের ভিতর এবং বাঘের লেজের বাড়িতে ধনাই-এর মাথায় থাকা মধুর কলস ভেঙে পড়ে বাঘের মাথার উপর । বাঘের সারা মুখে নাকে চোখে মধু ছিটকে পড়ে । মুখে মধু পড়তেই বাঘ চোখমুখ কুঁচকে ফ্যোঁৎ ফ্যোঁৎ শব্দ করতে লাগল। এইভাবে ধনাই বাঘের হাত থেকে বেঁচে গেল ।