Class 12 Semester 3 Biology Chapter 01 MCQ Question Answer
উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর সেমিস্টার ৩ জীববিদ্যার প্রথম অধ্যায় সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন থেকে বহুবিকল্পধর্মী প্রশ্ন (MCQ) শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ে ফুলের গঠন, পরাগায়ন, নিষেক এবং ভ্রূণোৎপত্তি সম্পর্কিত নানা গুরুত্বপূর্ণ ধারণা রয়েছে। এখানে আমরা অধ্যায়ভিত্তিক MCQ প্রশ্ন ও উত্তর তুলে ধরেছি, যা শিক্ষার্থীদের বোঝাপড়া আরও সহজ করবে এবং বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফল করতে সহায়তা করবে।
1. পুষ্পাক্ষ (Thalamus) বলতে কী বোঝায়?
ব্যাখ্যা: পুষ্পাক্ষ বা থ্যালামাস হলো ফুলের গোড়ার অংশ, যেখানে দল, বৃতি, পুংকেশর ও গর্ভকেশর সংযুক্ত থাকে। এটি ফুলের অন্যান্য অঙ্গকে ধারণ করে এবং ফুলের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
2. ট্যাপেটাম কোন স্থানে লক্ষ্য করা যায়?
ব্যাখ্যা: ট্যাপেটাম হলো পরাগধানীর ভেতরের একটি স্তর। এটি বিকাশমান পরাগকণাকে পুষ্টি জোগায় এবং তাদের পরিপক্ব হতে সাহায্য করে। ট্যাপেটাম থেকে বিভিন্ন এনজাইম ও রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়।
3. নিম্নলিখিত কোনটি স্ত্রী জননতন্ত্রের অংশ?
ব্যাখ্যা: ফুলের স্ত্রী জননতন্ত্রকে গর্ভমণ্ডল বা কার্পেল বলা হয়। এর তিনটি প্রধান অংশ হলো — স্ত্রীগ্রান্থি (stigma), গর্ভদণ্ড (style) এবং গর্ভাশয় (ovary)। গর্ভাশয়ের ভেতরে ডিম্বক (ovule) থাকে, যা নিষিক্ত হয়ে বীজে পরিণত হয়। অন্যদিকে, পরাগধানী, মাইক্রোস্পোর ও পুংকেশর পুরুষ জননতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত।
4. পরাগ রেণু কোন অংশ থেকে উৎপন্ন হয়?
ব্যাখ্যা: ফুলের পুরুষ জননতন্ত্র হলো পুংকেশর, যা পুংদণ্ড (filament) ও পুংধানি (anther) নিয়ে গঠিত। পুংধানির ভেতরে থাকে একাধিক পরাগথলি (pollen sac)। এই পরাগথলির মাইক্রোস্পোর মাদার সেল থেকে মাইক্রোস্পোর বা পরাগ রেণু উৎপন্ন হয়। তাই পরাগ রেণুর উৎস হলো পরাগথলি।
5. কোন গুপ্তবীজী উদ্ভিদের মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষে ২৪ টি ক্রোমোজোম থাকলে, মাইক্রোস্পোরে কতটি ক্রোমোজোম থাকবে?
ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ একটি ডিপ্লয়েড (2n) কোষ, যেখানে 24 টি ক্রোমোজোম থাকে। মাইক্রোস্পোর গঠিত হয় মাইওসিস বিভাজনের মাধ্যমে। মাইওসিসে ক্রোমোজোম সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যায়। তাই প্রতিটি মাইক্রোস্পোরে থাকবে 24 ÷ 2 = 12 টি ক্রোমোজোম।
6. পরাগধানীর ভেতরের স্তর ট্যাপেটাম-এর প্রধান কাজ কী?
ব্যাখ্যা: ট্যাপেটাম হলো পরাগধানীর (anther) সবচেয়ে ভেতরের স্তর। এর প্রধান কাজ হলো বিকাশমান পরাগকণাকে পুষ্টি সরবরাহ করা। এছাড়াও ট্যাপেটাম বিভিন্ন এনজাইম ও পদার্থ উৎপন্ন করে, যা পরাগকণার বৃদ্ধি ও পরিপক্বতায় সহায়তা করে।
7. মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের ভেতরের স্তরটির নাম কী?
ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের প্রাচীর মোট চারটি স্তর নিয়ে গঠিত— এপিডার্মিস, এন্ডোথেসিয়াম, মধ্যস্তর এবং ট্যাপেটাম। এর মধ্যে ট্যাপেটাম হলো সবচেয়ে ভেতরের স্তর। ট্যাপেটামের প্রধান কাজ হলো বিকাশমান পরাগকণাকে পুষ্টি সরবরাহ করা এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদার্থ উৎপাদন করা।
8. মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের কেন্দ্রে কী থাকে?
ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের সবচেয়ে ভেতরের স্তর হলো ট্যাপেটাম। ট্যাপেটামের অভ্যন্তরে কেন্দ্রে থাকে রেণুধর কলা (sporogenous tissue)। এই কলার কোষগুলো থেকেই পরবর্তীতে মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ গঠিত হয় এবং মাইওসিস বিভাজনের মাধ্যমে মাইক্রোস্পোর বা পরাগকণার সৃষ্টি হয়।
9. মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের সবচেয়ে বাইরের স্তরটির নাম কী?
ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের প্রাচীর চারটি স্তর নিয়ে গঠিত— এপিডার্মিস, এন্ডোথেসিয়াম, মধ্যস্তর ও ট্যাপেটাম। এর মধ্যে এপিডার্মিস হলো সবচেয়ে বাইরের স্তর, যা সুরক্ষা প্রদান করে। অন্যদিকে ট্যাপেটাম হলো সবচেয়ে ভেতরের স্তর, যা বিকাশমান পরাগকণাকে পুষ্টি জোগায়।
10. মাইক্রোস্পোর টেট্রাড কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়?
ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ একটি ডিপ্লয়েড (2n) কোষ। এটি মাইওসিস বিভাজনের মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে চারটি হ্যাপ্লয়েড (n) মাইক্রোস্পোর তৈরি করে। এই চারটি মাইক্রোস্পোর একত্রে থাকে এবং এদেরকে বলা হয় মাইক্রোস্পোর টেট্রাড। পরবর্তীতে প্রতিটি মাইক্রোস্পোর থেকে পৃথক পরাগকণা গঠিত হয়।
11. মাইক্রোস্পোর টেট্রাড কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়?
ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ একটি ডিপ্লয়েড (2n) কোষ। এটি মিওসিস বিভাজনের মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে চারটি হ্যাপ্লয়েড (n) মাইক্রোস্পোর উৎপন্ন করে। এই চারটি একসাথে থেকে টেট্রাড গঠন করে।
অন্যদিকে, প্রতিটি মাইক্রোস্পোর পরবর্তীতে মাইটোসিসের মাধ্যমে ভেজেটেটিভ ও জেনারেটিভ কোষে বিভাজিত হয়। তাই টেট্রাড গঠনের ক্ষেত্রে সঠিক উত্তর হলো মিওসিস।
12. পরাগকণার প্রাচীরকে কী বলা হয়?
ব্যাখ্যা: পরাগকণার প্রাচীরকে স্পোরোডার্ম বলা হয়। এটি দুই স্তর বিশিষ্ট—
1. বাইরের স্তর → এক্সাইন (Exine), যা মোটা, টেকসই এবং স্পোরোপোলেনিন দ্বারা গঠিত।
2. ভেতরের স্তর → ইনটাইন (Intine), যা পাতলা ও সেলুলোজ-ভিত্তিক।
এই দুই স্তর একত্রে মিলে পরাগকণাকে সুরক্ষা প্রদান করে এবং একে বলা হয় স্পোরোডার্ম।
13. পরাগকণার বাইরের প্রাচীরটির নাম কী?
ব্যাখ্যা: পরাগকণার প্রাচীরকে স্পোরোডার্ম বলা হয়, যা দুই স্তরে বিভক্ত—
1. বাইরের স্তর → এক্সাইন (Exine), যা মোটা, শক্ত এবং স্পোরোপোলেনিন দ্বারা গঠিত।
2. ভেতরের স্তর → ইনটাইন (Intine), যা পাতলা ও সেলুলোজ এবং পেকটিন দ্বারা গঠিত।
অতএব, বাইরের প্রাচীর হলো এক্সাইন।
14. পরাগকণার বহিঃপ্রাচীরে একাধিক রন্ধ্র থাকে, যেগুলিকে কী বলা হয়?
ব্যাখ্যা: পরাগকণার বহিঃপ্রাচীরকে এক্সাইন বলা হয়। এক্সাইনে বিশেষ ধরনের রন্ধ্র বা পাতলা স্থান থাকে, যেগুলিকে **জার্মিনাল ফোরা (germinal pore)** বলা হয়। এখান থেকেই অঙ্কুরোদ্গমের সময় পরাগনলিকা (pollen tube) বের হয়। তাই একাধিক রন্ধ্রযুক্ত স্থানকে বলা হয় জার্মিনাল ফোরা।
15. নিম্নলিখিত কোনটির প্রধান কাজ হলো পচন প্রতিরোধ করা?
ব্যাখ্যা: পরাগকণার বহিঃপ্রাচীর বা এক্সাইন স্পোরোপোলেনিন নামক এক বিশেষ জৈব পদার্থ দ্বারা গঠিত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে টেকসই ও রাসায়নিকভাবে স্থিতিশীল জৈব যৌগগুলির একটি। স্পোরোপোলেনিন সহজে তাপ, অ্যাসিড বা এনজাইম দ্বারা নষ্ট হয় না। ফলে এটি পরাগকণাকে পচন ও ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।
16. এক্সাইন কোন পদার্থ দ্বারা গঠিত?
ব্যাখ্যা: পরাগকণার বহিঃপ্রাচীরকে এক্সাইন বলা হয়। এক্সাইন গঠিত হয় স্পোরোপোলেনিন নামক একটি বিশেষ জৈব পদার্থ দ্বারা। এটি অত্যন্ত শক্ত ও স্থায়ী, যা সহজে তাপ, রাসায়নিক পদার্থ বা এনজাইম দ্বারা ভাঙে না। এ কারণেই পরাগকণা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে সক্ষম হয়।
17. ইনটাইন কোন পদার্থ দ্বারা গঠিত?
ব্যাখ্যা: পরাগকণার ভেতরের প্রাচীরকে ইনটাইন বলা হয়। এটি প্রধানত সেলুলোজ এবং পেকটিন দ্বারা গঠিত। এক্সাইনের তুলনায় ইনটাইন পাতলা এবং নমনীয় হয়, যা পরাগনলিকার অঙ্কুরোদ্গমে সহায়তা করে।
18. যদি মেগাস্পোর মাতৃকোষে ১০টি ক্রোমোজোম থাকে তবে অ্যালিগ্যাম্বোরণ স্তরে কতটি ক্রোমোজোম থাকবে?
ব্যাখ্যা: মেগাস্পোর মাতৃকোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা থাকে 10 (ডিপ্লয়েড, 2n)। এটি মাইওসিস বিভাজন করলে উৎপন্ন মেগাস্পোর হয় হ্যাপ্লয়েড (n), অর্থাৎ 5টি ক্রোমোজোম বিশিষ্ট। পরবর্তী মাইটোটিক বিভাজনে এই সংখ্যা অপরিবর্তিত থেকে যায়। তাই অ্যালিগ্যাম্বোরণ স্তরে ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে 5টি, যা দেওয়া অপশনগুলির মধ্যে নেই।
19. নারকেলের শস্যাল অংশটি তরল অবস্থায় থাকে কেন?
ব্যাখ্যা: নারকেলের যে শস্যাল অংশটি তরল থাকে সেটি হলো এন্ডোস্পার্ম। নারকেলের এন্ডোস্পার্ম হলো নিউক্লিয়ার টাইপ। এখানে নিউক্লিয়াস বিভাজন (ক্যারিওকাইনেসিস) হয় কিন্তু সাইটোপ্লাজম বিভাজন (সাইটোকাইনেসিস) ঘটে না। ফলে অসংখ্য নিউক্লিয়াসযুক্ত তরল এন্ডোস্পার্ম গঠিত হয়।
20. কোনো উভলিঙ্গ ফুলে গর্ভকেশর পুংকেশরের আগে পরিপক্ব হলে তাকে কী বলে?
ব্যাখ্যা: উভলিঙ্গ ফুলে কখনও স্ত্রী অঙ্গ (গর্ভকেশর) আগে পরিপক্ব হয়, আবার কখনও পুরুষ অঙ্গ (পুংকেশর) আগে পরিপক্ব হয়।
– স্ত্রী অঙ্গ আগে পরিপক্ব হলে তাকে বলে প্রোটোগাইনি (Protogyny)।
– পুরুষ অঙ্গ আগে পরিপক্ব হলে তাকে বলে প্রোট্যান্ড্রি (Protandry)।
এটি স্ব-পরাগায়ন রোধ করে এবং পরাগায়নে বৈচিত্র্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
21. একলিঙ্গ ফুলের ক্ষেত্রে কোনটি সঠিক?
ব্যাখ্যা: একলিঙ্গ ফুলে স্ব-পরাগায়ন বা অটোগ্যামি ঘটতে পারে না, কারণ একটি ফুলে হয় শুধু পুংকেশর থাকে, নয়তো শুধু গর্ভকেশর থাকে। এ ক্ষেত্রে পরাগায়ন ঘটতে পারে দুটি উপায়ে—
১. জেইটোনোগ্যামি (Geitonogamy): একই গাছের অন্য ফুল থেকে পরাগায়ন।
২. জেনোগ্যামি (Xenogamy): অন্য গাছের ফুল থেকে পরাগায়ন।
তাই একলিঙ্গ ফুলে জেইটোনোগ্যামি ও জেনোগ্যামি উভয়ই হতে পারে।
22. আপেল বাতাসপরাগী হলেও আপেল চাষিরা বাগানে মৌমাছি সংরক্ষণ করেন কেন?
ব্যাখ্যা: আপেল প্রধানত বাতাসপরাগী হলেও সবসময় বাতাসের মাধ্যমে কার্যকর পরাগযোগ সম্ভব হয় না। আবহাওয়া প্রতিকূল হলে বা বাতাসের পরিমাণ কম থাকলে পরাগায়ন ব্যাহত হতে পারে। এ অবস্থায় মৌমাছিরা বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং ফুল থেকে ফুলে পরাগ বহন করে দেয়, ফলে সঠিকভাবে নিষেক ঘটে। এজন্য আপেল বাগানে মৌমাছি সংরক্ষণ করা হয়।
23. অনুমীলন বা ক্লিস্টোগ্যামির প্রধান সুবিধা কী?
ব্যাখ্যা: ক্লিস্টোগ্যামি বা অনুমীলন হলো স্ব-পরাগায়নের এক ধরনের প্রক্রিয়া যেখানে ফুল না ফুঁটেই পরাগায়ন ঘটে। এতে বাহ্যিক পলিনেটর (যেমন বাতাস, পতঙ্গ বা জল) প্রয়োজন হয় না। এজন্য এটি উদ্ভিদের জন্য একটি নিশ্চিত প্রজনন কৌশল। তবে এর ফলে জিনগত বৈচিত্র্য দেখা যায় না, বরং একই জিনোটাইপ বারবার রক্ষিত হয়।
24. পরাগনলির অগ্রভাগ যদি ডিম্বকের ডিম্বকরন্ধ্র ভেদ করে ভ্রূকোষলীর মধ্যে প্রবেশ করে, তাকে কী বলে?
ব্যাখ্যা: যখন পরাগনলিকা ডিম্বকের মাইক্রোপাইল বা ডিম্বকরন্ধ্র দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে, তাকে বলা হয় পোরোগ্যামি (Porogamy)।
অন্যদিকে—
– চালাজোগ্যামি: পরাগনলিকা ডিম্বকের চালাজা অংশ দিয়ে প্রবেশ করলে।
– মেসোগ্যামি: পরাগনলিকা ডিম্বকের মধ্যবর্তী অংশ দিয়ে প্রবেশ করলে।
– অটোগ্যামি: একই ফুলে স্ব-পরাগায়ন হলে।
তাই প্রদত্ত অবস্থার সঠিক নাম হলো পোরোগ্যামি।
25. ডিম্বকের মধ্যে ভ্রূণপোষক কলার ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
ব্যাখ্যা: সপুষ্পক উদ্ভিদের দ্বিগুণ নিষেক (double fertilization)-এর ফলে একটি শুক্রাণু ডিম্বককে নিষিক্ত করে জাইগোট (2n) তৈরি করে। অন্য শুক্রাণুটি দুটি মেরু নিউক্লিয়াসের (n+n) সাথে মিলে ভ্রূণপোষক কলা বা এন্ডোস্পার্ম নিউক্লিয়াস তৈরি করে। ফলে ভ্রূণপোষক কলার নিউক্লিয়াস হয় ত্রিগুণিত (3n)। এটি উদ্ভিদের ভ্রূণকে পুষ্টি জোগায়।
26. ডিম্বকের মধ্যে ভ্রূণপোষক কলার ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
ব্যাখ্যা: সপুষ্পক উদ্ভিদের দ্বিগুণ নিষেক (double fertilization)-এর ফলে একটি শুক্রাণু ডিম্বককে নিষিক্ত করে জাইগোট (2n) তৈরি করে। অন্য শুক্রাণুটি দুটি মেরু নিউক্লিয়াসের (n+n) সাথে মিলে ভ্রূণপোষক কলা বা এন্ডোস্পার্ম নিউক্লিয়াস তৈরি করে। ফলে ভ্রূণপোষক কলার নিউক্লিয়াস হয় ত্রিগুণিত (3n)। এটি উদ্ভিদের ভ্রূণকে পুষ্টি জোগায়।
27. গর্ভযন্ত্র গঠিত হয়—
ব্যাখ্যা: গর্ভযন্ত্র বা এম্ব্রিও স্যাক হলো স্ত্রী গ্যামেটোফাইট। এটি একটি কার্যকরী মেগাস্পোর থেকে মাইটোসিস বিভাজনের মাধ্যমে গঠিত হয়। পূর্ণাঙ্গ গর্ভযন্ত্রে থাকে মোট ৭টি কোষ ও ৮টি নিউক্লিয়াস—
– ১টি ডিম্বাণু
– ২টি সহযোগী কোষ (সিনারজিড)
– ৩টি প্রতিপাদ কোষ
– ২টি মেরু নিউক্লিয়াস
অতএব, গর্ভযন্ত্র গঠনে ডিম্বাণু ও সহযোগী কোষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
28. পতঙ্গপরাগী ফুলে সাধারণত কেমন ধরনের পরাগরেণু থাকে?
ব্যাখ্যা: পতঙ্গপরাগী ফুলে পরাগরেণু সাধারণত আঠালো হয়। এ কারণে সেগুলো সহজেই পতঙ্গের শরীরে লেগে যায় এবং অন্য ফুলে স্থানান্তরিত হয়ে নিষেক ঘটাতে সাহায্য করে। বিপরীতে বায়ুপারাগী ফুলের পরাগরেণু হালকা ও শুষ্ক হয় যাতে বাতাসে সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
29. একটি আদর্শ ভ্রূণথলিতে নিউক্লিয়াসের বিন্যাস সাধারণত কেমন হয়?
ব্যাখ্যা: সপুষ্পক উদ্ভিদের ভ্রূণথলি (embryo sac) সাধারণত 7টি কোষ এবং 8টি নিউক্লিয়াস নিয়ে গঠিত হয়। এদের বিন্যাস হলো—
– এক পাশে 3টি প্রতিপাদ কোষ
– মাঝখানে 2টি মেরু নিউক্লিয়াস
– অন্য পাশে 2টি সহযোগী কোষ ও 1টি ডিম্বাণু = মোট 3টি
ফলে সমগ্র বিন্যাস দাঁড়ায় 3+2+3।
30. মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের কোন স্তর বিকাশমান পরাগধানীকে পুষ্টি সরবরাহ করে?
ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের প্রাচীর মোট চারটি স্তর নিয়ে গঠিত— এপিডার্মিস, এন্ডোথেসিয়াম, মধ্যস্তর ও ট্যাপেটাম। এদের মধ্যে সবচেয়ে ভেতরের স্তর ট্যাপেটাম। এটি বিকাশমান পরাগকণাকে পুষ্টি প্রদান করে এবং বিভিন্ন এনজাইম ও পদার্থ নিঃসরণ করে, যা পরাগের পরিপক্বতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
31. গেইটোনোগ্যামির ক্ষেত্রে কী ঘটে?
ব্যাখ্যা: গেইটোনোগ্যামি হলো এমন এক ধরনের পরাগায়ন যেখানে একই গাছের ভিন্ন ভিন্ন ফুলের মধ্যে পরাগায়ন ঘটে। যদিও এটি দেখতে ক্রস-পলিনেশন বা ভিন্ন ফুলে পরাগায়নের মতো মনে হয়, আসলে জেনেটিক দিক থেকে এটি স্ব-পরাগায়নের সমতুল্য, কারণ একই গাছের জিন ব্যবহার করা হয়।
32. স্ব-পরাগায়নের একটি প্রধান সুবিধা কী হিসেবে বিবেচিত হয়?
ব্যাখ্যা: স্ব-পরাগায়নের (autogamy) ফলে ফুলকে বাহ্যিক পলিনেটরের উপর নির্ভর করতে হয় না। খুব অল্প পরিমাণ পরাগরেণু ব্যবহার করেই এটি সম্ভব হয় এবং প্রতিকূল পরিবেশেও বংশবিস্তার চালিয়ে যেতে পারে। তবে এর ফলে জিনগত বৈচিত্র্য কমে যায়।
33. একটি গুপ্তবীজী উদ্ভিদের রেণু মাতৃকোষে যদি 38টি ক্রোমোজোম থাকে, তবে উৎপন্ন গ্যামেটের ক্রোমোজোম সংখ্যা কত হবে?
ব্যাখ্যা: রেণু মাতৃকোষ (microspore mother cell) হলো একটি ডিপ্লয়েড (2n) কোষ। যদি এতে ক্রোমোজোম সংখ্যা হয় 38, তবে মাইওসিস বিভাজনের মাধ্যমে উৎপন্ন মাইক্রোস্পোর হবে হ্যাপ্লয়েড (n) অর্থাৎ ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে অর্ধেক = 38 ÷ 2 = 19। তাই গ্যামেটে ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে 19।
34. ভ্রূণথলির সহযোগী (synergid) কোষ কোন প্রকৃতির হয়?
ব্যাখ্যা: ভ্রূণথলি বা এম্ব্রিও স্যাকে দুটি সহযোগী কোষ থাকে, যাদের বলা হয় সিনারজিড। এরা ডিম্বাণুর পাশে অবস্থান করে এবং পরাগনলিকাকে ডিম্বাণুর দিকে পরিচালিত করতে সাহায্য করে। যেহেতু ভ্রূণথলি একটি হ্যাপ্লয়েড (n) মেগাস্পোর থেকে গঠিত, তাই সহযোগী কোষগুলিও হ্যাপ্লয়েড প্রকৃতির হয়।
35. সেকেন্ডারি নিউক্লিয়াস (endosperm nucleus) কীভাবে গঠিত হয়?
ব্যাখ্যা: প্রথমে দুটি মেরু নিউক্লিয়াস মিলে সেকেন্ডারি নিউক্লিয়াস তৈরি করে (2n)। পরে এর সাথে একটি পুংগ্যামেট (n) যুক্ত হয়ে এন্ডোস্পার্ম নিউক্লিয়াস (3n) গঠন করে। এই নিউক্লিয়াস থেকে ভ্রূণপোষক কলার বিকাশ ঘটে।
36. নিষেক ছাড়াই যদি কোনো ফল তৈরি হয়, তাকে কী বলা হয়?
ব্যাখ্যা: সাধারণত ফল গঠনের জন্য নিষেক প্রয়োজন। তবে কিছু ক্ষেত্রে নিষেক ছাড়াই ফল তৈরি হতে পারে, একে বলে পার্থেনোকার্পি (Parthenocarpy)। এই ধরনের ফলে সাধারণত বীজ থাকে না। উদাহরণ: কলা, আনারস, বীজবিহীন পেঁপে ইত্যাদি।
অন্যদিকে—
– এপোমিক্সিস হলো বীজ গঠন যা নিষেক ছাড়াই হয়।
– পলিএমব্রিওনি হলো একাধিক ভ্রূণের সৃষ্টি।
– হাইব্রিড ভিগর হলো সংকরায়নের পর বংশধরের অধিক শক্তি বা বৃদ্ধি।
37. চালতার ভোজ্য অংশ কোনটি?
ব্যাখ্যা: চালতা (Dillenia indica)-এর ভোজ্য অংশ হলো বৃতি (sepal)। সাধারণত ফলের ভেতরের বীজ খাওয়া যায় না, বরং মোটা ও রসালো বৃন্ত বা বৃতি অংশই ভক্ষণযোগ্য হয়। এটি অম্ল স্বাদের জন্য পরিচিত এবং আচার বা তরকারিতে ব্যবহৃত হয়।
38. কোন বীজে স্কিউটেলাম (scutellum) পাওয়া যায়?
ব্যাখ্যা: স্কিউটেলাম হলো একবীজপত্রী (monocot) বীজের বিশেষ গঠন। এটি বীজের ভ্রূণের একটি অংশ এবং ভ্রূণকে পুষ্টি সরবরাহে সাহায্য করে। ভুট্টা, গম, ধান ইত্যাদি একবীজপত্রী উদ্ভিদের বীজে স্কিউটেলাম পাওয়া যায়। অন্যদিকে, আম, মটর ও আপেল দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ, যেখানে স্কিউটেলাম থাকে না।
39. নিচের কোনটি ইতর-পরাগায়নের সাথে সম্পর্কিত নয়?
ব্যাখ্যা: ইতর-পরাগায়ন (cross-pollination) ঘটাতে কিছু বিশেষ প্রক্রিয়া সহায়তা করে— যেমন প্রোট্যান্ড্রি (পুংকেশর আগে পরিপক্ব হওয়া), প্রোটোগাইনি (গর্ভকেশর আগে পরিপক্ব হওয়া) এবং হারকোগ্যামি (শারীরিক প্রতিবন্ধকতা স্ব-পরাগায়ন রোধ করে)। ক্লিস্টোগ্যামি হলো ফুল না ফুঁটেই স্ব-পরাগায়ন হওয়া, যা আসলে অটোগ্যামির (self-pollination) একটি রূপ। তাই এটি ইতর-পরাগায়নের সাথে সম্পর্কিত নয়।
40. বহুভ্রূণজাত ফলের (Polyembryony) উদাহরণ কোনটি?
ব্যাখ্যা: বহুভ্রূণজাত (Polyembryony) হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি বীজের মধ্যে একাধিক ভ্রূণ তৈরি হয়। এটি সাধারণত **লেবুজাতীয় উদ্ভিদে** দেখা যায়। এই প্রক্রিয়ার ফলে একাধিক অঙ্কুরোদ্গম হতে পারে।
অন্যদিকে—
– আমে একটি মাত্র ভ্রূণ থাকে।
– নারকেলে তরল এন্ডোস্পার্ম ভোজ্য অংশ হলেও বহুভ্রূণজাত হয় না।
– আনারসে বহু ফল একত্রে গঠিত হয় (সংবদ্ধ ফল), কিন্তু সেটি Polyembryony নয়।
41. সপুষ্পক উদ্ভিদের দ্বিনিষেক প্রক্রিয়ায় কী ঘটে?
ব্যাখ্যা: সপুষ্পক উদ্ভিদে দ্বিনিষেক (Double Fertilization) একটি বিশেষ প্রক্রিয়া। এখানে—
– প্রথম পুংগ্যামেট ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়ে জাইগোট (2n) তৈরি করে।
– দ্বিতীয় পুংগ্যামেট দুটি মেরু নিউক্লিয়াসের সাথে মিলে এন্ডোস্পার্ম নিউক্লিয়াস (3n) তৈরি করে।
এটি কেবলমাত্র সপুষ্পক উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য, অন্য কোনো উদ্ভিদগোষ্ঠীতে এভাবে দ্বিনিষেক হয় না।
42. বিবৃতি 1: পার্থেনোকার্পিক ফলে সাধারণত বীজ থাকে না, তাই একে কৃষিতে উপযোগী ধরা হয়।
বিবৃতি 2: বৃদ্ধিকারী হরমোনের প্রয়োগে কৃত্রিমভাবে অনেক বীজবিহীন ফল উৎপাদন করা যায়।
উপরের দুই বিবৃতির মধ্যে কোনটি সঠিক?
ব্যাখ্যা: পার্থেনোকার্পি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে নিষেক ছাড়াই ফল তৈরি হয় এবং সাধারণত এগুলো বীজবিহীন হয়। কৃষিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বীজবিহীন ফল ভোক্তাদের কাছে বেশি আকর্ষণীয়। আবার, অক্সিন, জিবারেলিন ইত্যাদি বৃদ্ধিকারী হরমোন কৃত্রিমভাবে প্রয়োগ করলে বীজবিহীন ফল গঠন করানো যায়। তাই বিবৃতি 2 সত্য এবং সেটিই বিবৃতি 1-এর কারণ।
43. উক্তি (A): পরাগরেণুর বহিরাবরণ স্পোরোপোলেনিন দ্বারা তৈরি হওয়ায় তা দীর্ঘকাল অক্ষত থাকে।
যুক্তি (R): স্পোরোপোলেনিন অত্যন্ত জটিল ও রাসায়নিকভাবে অবিনশ্বর প্রকৃতির, যা সাধারণ কোনো এনজাইম দ্বারা ভাঙা যায় না।
নিচের কোনটি সঠিক?
ব্যাখ্যা: পরাগরেণুর বহিরাবরণ (exine) স্পোরোপোলেনিন দিয়ে গঠিত, যা পৃথিবীর অন্যতম টেকসই জৈব যৌগ। এটি সাধারণ এনজাইম, অ্যাসিড বা ক্ষার দ্বারা ভাঙা যায় না। এজন্য পরাগরেণু জীবাশ্ম অবস্থাতেও অক্ষত পাওয়া যায়। তাই উক্তি এবং যুক্তি উভয়ই সঠিক, এবং যুক্তিটি উক্তির যথার্থ ব্যাখ্যা।
44. মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের প্রাচীরের বিভিন্ন স্তর সঠিক ক্রমে সাজাও।

ব্যাখ্যা: মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের প্রাচীর চারটি স্তর নিয়ে গঠিত—
1. এপিডার্মিস (বাহ্যিক স্তর)
2. এন্ডোথেসিয়াম (দ্বিতীয় স্তর, পরাগরেণু মুক্তিতে সাহায্য করে)
3. ট্যাপেটাম (ভিতরের স্তর, বিকাশমান পরাগকে পুষ্টি জোগায়)
4. স্পোরোজেনাস টিস্যু (সবচেয়ে ভেতরের অংশ, যেখান থেকে মাইক্রোস্পোর বা পরাগকণা তৈরি হয়)
এটাই সঠিক ক্রম।
45. নিচের মিলগুলো সঠিকভাবে সাজাও।
| Column I | Column II |
|---|---|
| i. গেইটোনোগ্যামি | a. একই গাছের ভিন্ন ফুলে পরাগায়ন |
| ii. ক্লিস্টোগ্যামি | b. অপূর্ণ প্রস্ফুটিত ফুলে স্ব-পরাগায়ন |
| iii. জেনোগ্যামি | c. ভিন্ন গাছের ফুলে পরাগায়ন |
| iv. অটোগ্যামি | d. একই ফুলে স্ব-পরাগায়ন |
ব্যাখ্যা:
– গেইটোনোগ্যামি → একই গাছের ভিন্ন ভিন্ন ফুলে পরাগায়ন।
– ক্লিস্টোগ্যামি → অপূর্ণ প্রস্ফুটিত (বন্ধ) ফুলে স্ব-পরাগায়ন।
– জেনোগ্যামি → ভিন্ন গাছের ফুলে পরাগায়ন।
– অটোগ্যামি → একই ফুলের ভেতরে স্ব-পরাগায়ন।
তাই সঠিক ক্রম হলো: i→a, ii→d, iii→b, iv→c
46. একটি গর্ভাশয়ে যদি 10টি ডিম্বক থাকে, তবে সবগুলোকে নিষিক্ত করতে ন্যূনতম কতটি পরাগরেণু প্রয়োজন?
ব্যাখ্যা: প্রতিটি ডিম্বক নিষিক্ত হওয়ার জন্য একটি করে কার্যকরী পুংগ্যামেট প্রয়োজন। একটি পরাগরেণু অঙ্কুরিত হয়ে দুটি পুরুষ গ্যামেট তৈরি করে— এর মধ্যে একটি ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়ে জাইগোট গঠন করে। সুতরাং 10টি ডিম্বক নিষিক্ত করতে ন্যূনতম 10টি পরাগরেণু প্রয়োজন।
47. গুপ্তবীজী উদ্ভিদের পুংগ্যামেট কোন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়?
ব্যাখ্যা: প্রথমে রেণুমাতৃকোষ মিয়োসিস বিভাজনের মাধ্যমে মাইক্রোস্পোর (n) তৈরি করে। পরে প্রতিটি মাইক্রোস্পোর অঙ্কুরিত হয়ে দুটি কোষে বিভক্ত হয়— একটিকে ভেজেটেটিভ কোষ ও অন্যটি জননকোষ বলে। এই জননকোষ মাইটোটিক বিভাজনের মাধ্যমে দুটি পুংগ্যামেট (sperm cell) উৎপন্ন করে। তাই পুংগ্যামেট গঠনের প্রকৃত ধাপ হলো জননকোষের মাইটোটিক বিভাজন।
48. ট্যাপেটাম কোষের বিশেষ বৈশিষ্ট্য কী?
ব্যাখ্যা: ট্যাপেটাম হলো মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের সবচেয়ে ভেতরের স্তর, যা বিকাশমান পরাগকণাকে পুষ্টি জোগায়। ট্যাপেটামের কোষগুলো সাধারণত polyploid, dense cytoplasm যুক্ত এবং প্রায়শই একাধিক নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট হয়। এদের বিপাকীয় ক্রিয়া খুব সক্রিয় থাকে।
49. পরাগরেণুর আকৃতি ও আকার সম্পর্কে নিচের কোনটি সঠিক?
ব্যাখ্যা: অধিকাংশ সপুষ্পক উদ্ভিদের পরাগরেণু গোলাকার বা ডিম্বাকার হয়। এদের গড় ব্যাস প্রায় 25–30 মাইক্রোমিটার (µm)। তবে উদ্ভিদভেদে আকার ও আকৃতির কিছুটা তারতম্য হতে পারে। এটি উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাসে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
50. নিচের কোন গঠনটি উদ্ভিদে উদ্দীপক (উৎপাদক) পদার্থ তৈরিতে সক্ষম?
ব্যাখ্যা: ট্যাপেটাম হলো মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়ামের সবচেয়ে ভেতরের স্তর। এ স্তরটি পুষ্টি সরবরাহের পাশাপাশি হরমোন, এনজাইম এবং ইউবিসি (Ubisch bodies) উৎপন্ন করে। এগুলো পরাগরেণুর প্রাচীর গঠনে এবং বিকাশে সাহায্য করে। তাই ট্যাপেটামকে উদ্দীপক পদার্থ উৎপাদক স্তর বলা হয়।
51. ফিলিফর্ম অ্যাপারেটাস কোন গঠনে দেখা যায়?
ব্যাখ্যা: ভ্রূণথলির মাইক্রোপাইল প্রান্তে অবস্থিত দুটি সহকারী কোষের (synergids) প্রাচীরে আঙুলের মতো বৃদ্ধি থাকে, যাকে ফিলিফর্ম অ্যাপারেটাস বলা হয়। এটি পুষ্টি পরিবহন ও পরাগনালীকে দিক নির্দেশনা দেওয়ার কাজে সহায়তা করে।
52. অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী আগাছা পার্থেনিয়াম (Carrot grass) ভারতে প্রথম কোন ফসলের পরাগের সাথে মিশে পাওয়া গিয়েছিল?
ব্যাখ্যা: পার্থেনিয়াম বা Carrot grass একটি অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী আগাছা। ভারতে প্রথম এটি গমের পরাগের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় শনাক্ত করা হয়। এটি পরাগ-অ্যালার্জির একটি প্রধান উৎস এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
53. একটি ব্যক্তবীজী (Gymnosperm) উদ্ভিদের কান্ডের কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা 32 হলে, সেই উদ্ভিদের সস্যের (endosperm) কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা কত হবে?
ব্যাখ্যা:
– কান্ডের কোষ diploid (2n) → 2n = 32 হলে, n = 16।
– ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের সস্য বা এন্ডোস্পার্ম haploid (n) প্রকৃতির হয়, কারণ এটি দ্বিনিষেক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় না; বরং সরাসরি স্ত্রী গ্যামেটোফাইটের অংশ থেকে তৈরি হয়।
– তাই এন্ডোস্পার্মে ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে n = 16
মনে রাখবে:
– আবৃতবীজী (Angiosperm)-এ endosperm triploid (3n)।
– ব্যক্তবীজী (Gymnosperm)-এ endosperm haploid (n)।
54. ফুলের একলিঙ্গতা কোন ধরণের পরাগায়নকে বাধা দেয়?
ব্যাখ্যা:
– একলিঙ্গ ফুলে (Unisexual flower) কেবলমাত্র পুরুষ বা স্ত্রী অংশ থাকে।
– তাই এখানে অটোগ্যামি (স্ব-পরাগায়ন) সম্ভব নয়, কারণ একই ফুলে উভয় লিঙ্গ নেই।
– কিন্তু একই গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল থাকলে (Monoecious case) গেইটোনোগ্যামি (geitonogamy) হতে পারে।
– আর ভিন্ন গাছে হলে জেনোগ্যামি (xenogamy) ঘটে।
তাই একলিঙ্গতা শুধুমাত্র অটোগ্যামিকে বাধা দেয়, গেইটোনোগ্যামি নয়।
55. পরাগরেণুর অঙ্কুরোদ্গম এবং পরাগনলির বৃদ্ধি সাধনে কোন পদার্থটি প্রধান ভূমিকা পালন করে?
ব্যাখ্যা:
– পরাগরেণুর অঙ্কুরোদ্গম (germination) এবং পরাগনলির দ্রুত বৃদ্ধি সাধনে বোরন (Boron) অপরিহার্য।
– বোরন ফুলের পরাগরেণুতে শর্করা পরিবহন ও কোষপ্রাচীরের শক্তকরণে সাহায্য করে।
– বোরনের অভাবে পরাগনলির বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং নিষেক সম্পূর্ণ হয় না।
তাই সঠিক উত্তর হলো: বোরন
56. যখন কোনো উভলিঙ্গ ফুলে একইসঙ্গে গর্ভকেশর ও পুংকেশর পরিপক্ব হয়, তখন সেই পরাগায়নকে কী বলা হয়?
ব্যাখ্যা:
– Homogamy (হোমোগ্যামি): একই ফুলে গর্ভকেশর ও পুংকেশর একই সময়ে পরিপক্ব হয়, ফলে স্ব-পরাগায়ন (autogamy) সহজে সম্ভব হয়।
– Herkogamy (হার্কোগ্যামি): স্ব-পরাগায়ন রোধের জন্য ফুলে গঠনগত প্রতিবন্ধকতা থাকে।
– Autogamy (অটোগ্যামি): একই ফুলে স্ব-পরাগায়ন ঘটে।
– Xenogamy (জেনোগ্যামি): ভিন্ন গাছের ফুলের মধ্যে পরাগায়ন হয়।
তাই সঠিক উত্তর হলো: হোমোগ্যামি
57. ক্লিস্টোগ্যামি হলো এক ধরনের স্ব-পরাগায়ন, যা কোন অবস্থায় ঘটে?
ব্যাখ্যা:
– ক্লিস্টোগ্যামি (Cleistogamy): এমন স্ব-পরাগায়ন যেখানে ফুল প্রস্ফুটিত হয় না, অর্থাৎ ফুল বদ্ধ অবস্থায় থেকেই পরাগায়ন ঘটে।
– এর ফলে বাইরের কোনো পরাগবাহকের প্রয়োজন হয় না।
– এই প্রক্রিয়ায় সর্বদা স্ব-পরাগায়ন (autogamy) নিশ্চিত হয়।
– উদাহরণ: অরোহা।
তাই সঠিক উত্তর হলো: বদ্ধ ফুলে
58. কচুরিপানা ও ওয়াটার লিলি ফুলের পরাগায়নে নিচের কোন বাহকটির কোনো ভূমিকা থাকে না?
ব্যাখ্যা:
– কচুরিপানা (Eichhornia) ও ওয়াটার লিলি (Nymphaea) জলজ উদ্ভিদ হলেও এদের পরাগায়ন মূলত পতঙ্গ বা বায়ুর মাধ্যমে হয়।
– এদের ক্ষেত্রে জল বাহক হিসেবে কাজ করে না।
– উদাহরণস্বরূপ, Vallisneria-তে জলীয় পরাগায়ন (hydrophily) দেখা যায়, কিন্তু কচুরিপানা বা ওয়াটার লিলি-তে নয়।
তাই সঠিক উত্তর হলো: শুধুমাত্র জল
59. উদ্ভিদের পরাগরেণুগুলি একত্রে পলিনিয়াম গঠন করে, যা কীটপতঙ্গ ছাড়া স্থানান্তরিত হয় না— কোন উদ্ভিদে এটি দেখা যায়?
ব্যাখ্যা:
– পলিনিয়াম (Pollinium): অনেক সময় উদ্ভিদের পরাগকণা একত্রে জড়ো হয়ে গুচ্ছ তৈরি করে। এই বিশেষ গুচ্ছকেই পলিনিয়াম বলে।
– এটি মূলত অ্যাসক্লেপিয়াডেসি (Asclepiadaceae) ও অর্কিডেসি (Orchidaceae) পরিবারের উদ্ভিদে দেখা যায়।
– উদাহরণ: আকন্দ (Calotropis) ও অর্কিড।
– পলিনিয়াম খুব ভারী হওয়ায় এটি বায়ু দ্বারা ছড়ায় না, বরং কীটপতঙ্গ (insects) এর মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়।
তাই সঠিক উত্তর হলো: আকন্দ
60. 16টি মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ থেকে মোট কতগুলি পুংগ্যামেট উৎপন্ন হবে?
ব্যাখ্যা:
– প্রতিটি মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ মিয়োসিস বিভাজনের মাধ্যমে 4টি মাইক্রোস্পোর (পরাগকণা) তৈরি করে।
– তাই 16টি মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ থেকে উৎপন্ন মাইক্রোস্পোরের সংখ্যা = 16 × 4 = 64।
– প্রতিটি মাইক্রোস্পোর থেকে 2টি পুংগ্যামেট (স্পার্ম নিউক্লিয়াস) তৈরি হয়।
– সুতরাং মোট পুংগ্যামেট সংখ্যা হবে = 64 × 2 = 128
তাই সঠিক উত্তর হলো 128
61. যদি কোনো গুপ্তবীজী উদ্ভিদের পরাগরেণুর ক্রোমোজোম সংখ্যা ১৮ হয়, তবে নির্ণীত নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যা কত হবে?
ব্যাখ্যা:
– পরাগরেণু হ্যাপ্লয়েড (n), এখানে n = 18
– নির্ণীত নিউক্লিয়াস (Definitive Nucleus) গঠিত হয় দুটি হ্যাপ্লয়েড পোলার নিউক্লিয়াস (n+n) এর মিলনে।
– তাই এটি ডিপ্লয়েড (2n)
– হিসাব: 2 × 18 = 36
সুতরাং সঠিক উত্তর হলো 36
62. বীজপ্রত্রধিকাণ্ড (epicotyl) গঠিত হয়—
ব্যাখ্যা:
বীজপ্রঅধিকাণ্ড (epicotyl) হলো ভ্রূণের সেই অংশ যা কোটিলেডনের উপরের দিকে থাকে। এটি গঠিত হয় কাণ্ডের অগ্রভাগ এবং ভ্রূণমুকুল দ্বারা।
তাই সঠিক উত্তর: কাণ্ডের অগ্রভাগ ও ভ্রূণমুকুল।
63. বীজপ্রত্রাবকাণ্ড (hypocotyl) গঠিত হয়—
ব্যাখ্যা:
বীজপ্রঅবকাণ্ড (hypocotyl) হলো ভ্রূণের সেই অংশ যা কোটিলেডনের নিচে থাকে এবং মূলের অগ্রভাগ থেকে গঠিত হয়। এটি ভবিষ্যতে মূলতন্ত্রের অংশের সাথে যুক্ত থাকে।
তাই সঠিক উত্তর: মূলের অগ্রভাগ।
64. নন রেকারেন্ট অ্যাপোমিক্সিস হলে—
ব্যাখ্যা:
নন রেকারেন্ট অ্যাপোমিক্সিসে ডিম্বাণু মিয়োসিসের মাধ্যমে হ্যাপ্লয়েড হয়, কিন্তু নিষেক ছাড়াই সেটি থেকে সরাসরি হ্যাপ্লয়েড ভ্রণ গঠিত হয়।
তাই সঠিক উত্তর: হ্যাপ্লয়েড ডিম্বাণু থেকে সরাসরি ভ্রণ সৃষ্টি।
65. নিচের কোনটির বীজে সস্য, পেরিস্পার্ম ও ক্যারাঙ্কল দেখা যায়?
ব্যাখ্যা:
রেড়ির (Castor bean) বীজে বিশেষভাবে তিনটি গঠন পাওয়া যায়—
– সস্য (Endosperm)
– পেরিস্পার্ম (Nucellus-এর অবশিষ্টাংশ)
– ক্যারাঙ্কল (মাইক্রোপাইল অঞ্চলের অঙ্গসংস্থান)
তাই সঠিক উত্তর হলো রেড়ি।
66. চিত্রটির মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে (NCERT অনুযায়ী)

ব্যাখ্যা:
– Vallisneria তে স্ত্রী ফুল পানির উপরিভাগে উঠে আসে এবং পুরুষ ফুল বিচ্ছিন্ন হয়ে ভেসে গিয়ে স্ত্রী ফুলকে পরাগিত করে। এটি জলপরাগযোগ (epihydrophily) এর একটি উদাহরণ।
– Zostera তে পরাগরেণু সরাসরি জলে ভেসে স্ত্রী ফুলে পৌঁছে যায় (true hydrophily)।
– Water hyacinth ও Water lily আসলে পোকামাকড় দ্বারা পরাগিত হয় (entomophily), বাতাস দ্বারা নয়।
তাই চিত্রটির সঠিক উত্তর হলো Vallisneria তে জলের মাধ্যমে পরাগযোগ।
68. চিত্রে প্রদর্শিত উদ্ভিদটি কীভাবে পরাগযোগ করে?

চিত্রে প্রদর্শিত A ও B হলো— 
ব্যাখ্যা:
– স্ট্রবেরি একটি যৌগিক ফল (aggregate accessory fruit), যেখানে ভোজ্য লাল অংশটি প্রকৃতপক্ষে ফুলের বর্ধিত পুষ্পাক্ষ (receptacle)। এটিই চিত্রে A দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে।
– স্ট্রবেরির গায়ে যে ছোট ছোট বীজসদৃশ দানা দেখা যায়, সেগুলি প্রকৃত অর্থে স্ট্রবেরি ফলের অংশ। এদেরকে অ্যাকিন (achene) বলে এবং প্রতিটি অ্যাকিনের ভিতরে একটি করে বীজ থাকে। এটিই চিত্রে B দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে।
– তাই, সঠিক উত্তর হলো: A পুষ্পাক্ষ এবং B অ্যাকিন
