এই নিবন্ধে আমরা দশম শ্রেণির জীবন বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় ” অভিব্যক্তি ও অভিযোজন ” প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 10 Life Science Chapter 04 Question Answer
Class 10 Life Science Chapter 04 Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় ০৪ অভিব্যক্তি ও অভিযোজন প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১. ক্যাকটাসের কাঁটা যে অঙ্গের রূপান্তর সেটি হলো
(A) কাণ্ড
(B) মূল
(C) পাতা
(D) ফুল
উত্তর: (C) পাতা
২. আধুনিক ঘোড়ার নাম হলো—
(A) ইওহিপ্পাস
(B) মেরিচিপ্পাস
(C) ইকুয়াস
(D) মেসোহিপ্পাস
উত্তর: (C) ইকুয়াস
৩. বাষ্পমোচন হ্রাসে পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়—
(A) পদ্ম
(B) ওপানশিয়া
(C) সুন্দরী
(D) সবক’টিতে
উত্তর: (B) ওপানশিয়া
৪. শ্বাসমূল ( নিউম্যাটাফোর ) দেখা যায়-
(A) পদ্ম
(B) সুন্দরী
(C) ক্যাকটাস
(D) সবক’টিতে
উত্তর: (B) সুন্দরী
৫. মৌমাছির চক্রাকার নৃত্য সাহায্য করে—
(A) বাসস্থান সন্ধানে
(B) প্রজননের জন্য
(C) খাদ্যের সন্ধানে
(D) শত্রুর হাত থেকে বাঁচার জন্য
উত্তর: (C) খাদ্যের সন্ধানে
৬. জীবন সৃষ্টির সময় আদিম পরিবেশে নীচের কোনটি অনুপস্থিত ছিল ?
(A) CH ,
(B) NH ,
(C) CO ,
(D) O² ,
উত্তর: (D) O²
৭. পায়রার ফুসফুসের সঙ্গে যুক্ত বায়ুথলির সংখ্যা—
(A) 7
(B) 9
(C) 11
(D) 13
উত্তর: (B) 9
৮. ল্যামার্কের তত্ত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত শব্দগুচ্ছটি সঠিকভাবে নিরুপণ করো
(A) অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম
(B) প্রকরণের উৎপত্তি
(C) অর্জিত গুণের বংশানুসরণ
(D) প্রাকৃতিক নির্বাচন ।
উত্তর: (C) অর্জিত গুণের বংশানুসরণ
৯. তিমির ফ্লিপার , পাখির ডানা ও মানুষের হাত হলো—
(A) সমসংস্থ অঙ্গ
(B) সমবৃত্তীয় অঙ্গ
(C) নিষ্ক্রিয় অঙ্গ
(D) কোনোটিই নয়
উত্তর: (A) সমসংস্থ অঙ্গ
১০. কুমিরের হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠের সংখ্যা
(A) 2
(B) 3
(C) 4
(D) 13
উত্তর: (C) 4
১১. ‘ ফিলোজফিক জুলজিক ‘ গ্রন্থটির লেখক হলেন
(A) মেন্ডেল
(B) ডারউইন
(C) অ্যারিস্টটল
(D) ল্যামার্ক
উত্তর: (D) ল্যামার্ক
১২. সমসংস্থ অঙ্গ হলো—
(A) তিমির প্যাডেল , পাখির ডানা ও মানুষের হাত
(B) পতঙ্গের ডানা
(C) পাখির ডানা
(D) উপরের কোনোটিই নয়
উত্তর: (A) তিমির প্যাডেল , পাখির ডানা ও মানুষের হাত
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১. একটি জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদের উদাহরণ দাও ।
উত্তর: গিংক্গো বাইলোবা ।
২. আলুর স্ফীতকন্দ ও ফণীমনসার পর্ণকাণ্ড কী জাতীয় অঙ্গ ?
উত্তর: সমসংস্থ অঙ্গ ।
৩. মৌমাছিদের ভাষা 1967 খ্রিস্টাব্দে কোন বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেন ?
উত্তর: কার্ল ভন ফ্রিশ ।
৪. জীবাশ্ম বিষয়ক বিদ্যাকে কী বলে ?
উত্তর: প্রত্ন জীববিদ্যা বাপ্যালিওণ্টলজি ।
৫. কোশের অগ্রদূত কাকে বলা হয় ?
উত্তর: কোয়াসারভেটকে ।
৬. মৌমাছির বার্তা আদান প্রদানে কোন কোন নৃত্য সাহায্য করে ?
উত্তর: চক্রাকার নৃত্য ও ওয়াগ্টেল নৃত্য ।
৭. ‘ ব্যবহার ও অপব্যবহার ‘ কার মতবাদ ?
উত্তর: ল্যামার্কের ।
৮. উভচর প্রাণীর হৃৎপিণ্ডে কয়টি প্রকোষ্ঠ ?
উত্তর: তিনটি ।
৯. ডারউইন কোন গ্রন্থে তাঁর ‘ প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদ ’ – এর ব্যাখ্যা দেন ?
উত্তর: ‘ অন দ্য অরিজিন অব স্পেসিস বাই মিস অব ন্যাচারাল সিলেকশন ’ গ্রন্থে ।
১০. বিবর্তনের ফলে উৎপন্ন কার্যহীন অঙ্গকে কী বলে ?
উত্তর: নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলে ।
১১. জীবের উৎপত্তি সম্পর্কিত জৈবরাসায়নিক মতবাদের প্রশ্ন : প্রবক্তা কে ?
উত্তর: ওপারিন ও হ্যালডেন ।
১২. বায়োজেনি কী ?
উত্তর: আদিম কোশের উৎপত্তি ও জীবনের বিবর্তনের ঘটনা ।
১৩. প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদের প্রবক্তা কে ?
উত্তর: চার্লস ডারউইন ।
১৪. কুমিরের হৃৎপিণ্ডে প্রকোষ্ঠ সংখ্যা কত ?
উত্তর: চার প্রকোষ্ঠ ।
১৫. প্রথম উৎপন্ন নিউক্লিক অ্যাসিডটির নাম কী ?
উত্তর: RNAT
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১. উটের জলক্ষয় কমানোর দু’টি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।
উত্তর: উটের জলক্ষয় কমানোর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য – এদের চামড়া রোমযুক্ত এবং পুরু আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে । ফলে বাষ্পীভবন কম হয় । ও এরা রেচন পদার্থকে শুষ্ক ইউরিক হিসেবে দেহ থেকে ত্যাগ করে । দেহে জলের পরিমাণ কমে গেলে এরা ঘন মূত্র ত্যাগ করে এবং দেহের জল সংরক্ষণ করে ।
২. উটের RBC- এর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো ।
উত্তর: উটের RBC ( লোহিত রক্তকণিকা ) ডিম্বাকার এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত হয় । উটের ডিহাইড্রেশনের সময় অভিস্রবণীয় চাপের তারতম্য বা বেশি পরিমাণে জলগ্রহণ করলেও অভিস্রবণীয় চাপের কম বা বেশিতে RBC ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না । কারণ RBC- র পর্দার প্রসারণ ক্ষমতা অনেক বেশি ।
৩. সমসংস্থ অঙ্গ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও
উত্তর: যেসব অঙ্গ উৎপত্তি ও গঠনগতভাবে এক কিন্তু কার্যগতভাবে আলাদা তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে ।
উদাহরণ : পাখির ডানা , মানুষের হাত ।
৪. ভেনাস হৃৎপিণ্ড কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
উত্তর: মাছের তৃৎপিণ্ডে সর্বদা কার্বন ডাই – অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত প্রবাহিত হয় । তাই মাছের হৃৎপিণ্ডকে ভেনাস হৃৎপিণ্ড বলে ।
৫. জীবন্ত জীবাশ্ম কাকে বলে ?
উত্তর: যেসকল জীব বহুবছর ধরে কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই পৃথিবীতে বেঁচে আছে অথচ তাদের সমসাময়িক ও সমগোত্রীয় জীব অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে , তাদের জীবন্ত জীবাশ্ম বা লিভিং ফসিল বলে ।
উদাহরণ : পেরিপেটাস নামক সন্ধিপদ প্রাণী , সিলাকান্ধ নামক মাছ , হংসচঞ্জু নামক স্তন্যপায়ী প্রাণী ইত্যাদি হলো জীবন্ত জীবাশ্মের উদাহরণ ।
৬. জীবাশ্ম কাকে বলে ?
উত্তর: জীবের সম্পূর্ণ দেহ বা দেহের কোনো অংশ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পাললিক হ º = শিলাস্তরে চাপা পড়ে থাকার ফলে জীবের সামগ্রিক বা দেহাংশের ছাপ বা ছাঁচ সংরক্ষিত হন থাকলে তাকে জীবাশ্ম বলে ।
৭. অপসারী অভিব্যক্তি কাকে বলে ?
উত্তর: উৎপত্তি ও গঠনগতভাবে একইরকমের অঙ্গযুক্ত জীবদেহে বিভিন্ন পরিবেশে অভিযোজনের জন্য যে বিবর্তন দেখা যায় তাকে অপসারী অভিব্যক্তি বলে । উদাহরণ : ঘোড়ার অগ্রপদ , মানুষের হাত , তিমির ফ্লিপার ইত্যাদি অঙ্গের উৎপত্তি ও গঠন একই কিন্তু কাৰ্য আলাদা ৷
৮. জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি কাকে বলে ?
উত্তর: যে মন্থর অথচ গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূর্বপুরুষ অর্থাৎ উদ্ংশীয় সরল জীব থেকে নতুন ধরনের অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি বলে ।
৯. দুইটি জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদের উদাহরণ দাও ।
উত্তর: জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদ – সাইকাস , গিংক্গো বাইলোবা ।
১০. বায়োজেনেটিক সূত্র কাকে বলে ?
উত্তর: হেকেল বায়োজেনেটিক সূত্রের প্রবক্তা । তাঁর মতানুসারে প্রতিটি জীব ভ্রুণ অবস্থায় খুব অল্পসময়ের জন্য হলেও পূর্বপুরুষের আকৃতি ও গঠনকে পুনরাবৃত্তি করে , একে ‘ অনটোজেনি রিপিটস ফাইলোজেনি ‘ বা বায়োজেনেটিক সূত্র বলে ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. অভিযোজন কাকে বলে ? অভিযোজনের তিনটি গুরুত্ব লেখো ।
উত্তর: সংজ্ঞা : পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য জীবদেহের গঠনগত , শারীরবৃত্তীয় এবং আচরণগত স্থায়ী পরিবর্তন যা বিবর্তনে সাহায্য করে তাকে অভিযোজন বলে । — অভিযোজনের গুরুত্ব বা উদ্দেশ্য (১) পরিবর্তনশীল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে । (২) অভিযোজন প্রতিকূল পরিবেশকে সহজে অতিক্রম করতে সাহায্য করে । (৩) অভিযোজন জীবকে আত্মরক্ষায় সাহায্য করে ।
২. জাঙ্গল উদ্ভিদ বা জেরোফাইট কাকে বলে ? ক্যাকটাসের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।
উত্তর: জেরোফাইট : ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ যেমন ফণীমনসা , শতমূলী ইত্যাদি | শুষ্ক ও বালুকাময় পরিবেশে জন্মায় । এদের জাঙ্গল বা জেরোফাইট বলে । এদের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি হলো—
কাণ্ড : (১) কাণ্ড রসালো , সবুজ ও চ্যাপ্টা । একে পর্ণকাণ্ড বলে ( ফণীমনসা ) । খর্বাকার এবং কাষ্ঠল হয় । (২) বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য কাণ্ডের ত্বক পুরু , কিউটিকলযুক্ত ।
মূল : (১) মূল সুগঠিত , দীর্ঘ ও শাখাপ্রশাখাযুক্ত ।
পাতা : (১) বাষ্পমোচনের হার কমানোর জন্য পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত ।
৩. জীবাশ্ম কাকে বলে ? জীবাশ্মের গুরুত্ব লেখো ।
উত্তর: জীবাশ্ম : দীর্ঘকাল যাবৎ ভূগর্ভের পাললিক শিলাস্তরে চাপা পড়ে থাকা জীবের সমগ্র দেহ বা আংশিক দেহ বা ছাপকে জীবাশ্ম বলে । জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞানকে প্রত্নজীববিদ্যা বা প্যালেনটোলজি বলে ।
জীবাশ্মের গুরুত্ব – (১) জীবাশ্ম অভিব্যক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে ।
(২) জীবাশ্ম আধুনিক যুগের জীবের পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে সাহায্য করে ।
(৩) জীবাশ্ম প্রাণী বা উদ্ভিদের বয়স ও সৃষ্টির সময়কাল জানতে সাহায্য করে ।
(৪) জীবাশ্ম লুপ্ত প্রাণী ও উদ্ভিদের ভৌগোলিক বিস্তার জানতে সাহায্য করে ।
(৫) জীবাশ্ম দু’টি ভিন্ন গোষ্ঠীর প্রাণী বা উদ্ভিদের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী জীবের অধ্যয়নে এবং এক প্রকার জীব থেকে অপর প্রকার জীবের উৎপত্তির বিষয়ে ধারণা দিতে সাহায্য করে ।
৪. ল্যামার্কের মতবাদের সপক্ষে এবং বিপক্ষে একটি করে উদাহরণ দাও । ল্যামার্কবাদের সঙ্গে ডারউইনবাদের পার্থক্য লেখো ।
উত্তর: ল্যামার্কবাদের সপক্ষে উদাহরণ : ল্যামার্কের মতে বহুবছর আগে ছোটো গলাযুক্ত জিরাফের আবির্ভাব হয়েছিল । পরবর্তীকালে ঘাস ও ছোটো উদ্ভিদ হ্রাস পাওয়ার কারণে খাদ্যাভাব দেখা দেয় , ফলে জিরাফ উঁচু গাছের পাতা খাওয়ার চেষ্টা করে এবং কালক্রমে লম্বা গলা ও লম্বা পাযুক্ত জিরাফের আবির্ভাব হয় ।
ল্যামার্কের মতবাদের বিপক্ষে উদাহরণ : বিজ্ঞানী ভাইসম্যান ইঁদুরের ওপরে পরীক্ষা করে ল্যামার্কের মতবাদকে ভুল বলে যুক্তি দেন । তিনি প্রথমে একজোড়া ইঁদুর দম্পতির লেজ কেটে দেন এবং প্রজনন ঘটান । দেখা গেল অপত্যদের লেজ আছে । তিনি এইভাবে 35 জনু পর্যন্ত লেজ কাটলেন , তা সত্ত্বেও লেজবিহীন ইঁদুর সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি ।
৫. নয়া ডারউইনবাদ বলতে কী বোঝায় ? ডারউইনবাদের ত্রুটি উল্লেখ করো ।
উত্তর: ভাইসম্যান , হুগো দ্য ভ্রিস , গোল্ডস্মিথ , হ্যালডেন প্রমুখ বিজ্ঞানী ডারউইনের তত্ত্বকে বা মতবাদকে নতুন করে আণবিক জীববিদ্যা , জেনেটিক্স , বাস্তুবিদ্যা প্রভৃতির আলোকে বর্ণনা করেছেন যা নয়া ডারউইনবাদ বা আধুনিক সংশ্লেষণবাদ [ Modern Synthetic Theory ] নামে পরিচিত ।
ডারউইনবাদের ত্রুটি : (১) ডারউইন দেহকোশ ও জননকোশের প্রকরণকে পৃথক করতে পারেননি । (২) ডারউইন প্রকরণের বর্ণনা করলেও প্রকরণের উৎপত্তির কারণ বর্ণনা করেননি । (৩) ডারউইন যোগ্যতমের উদ্বর্তন বর্ণনা করলেও এর কারণ সঠিকভাবে বর্ণনা করতে পারেননি । (4) ডারউইন পরিব্যক্তি বা মিউটেশনকে ‘ প্রকৃতির খেলা ‘ বলেছিলেন ।