এই নিবন্ধে আমরা দশম শ্রেণির জীবন বিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় ” জীবনের প্রবাহমানতা ” প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 10 Life Science Chapter 02 Question Answer
Class 10 Life Science Chapter 02 Question Answer | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় ০২ জীবনের প্রবমানতা প্রশ্ন উত্তর
Table of Contents
১. প্লাজমোডিয়ামের জনন পদ্ধতি হলো
(A) দ্বিবিভাজন
(B) বহুবিভাজন
(C) কোরকোগম
(D) খণ্ডীভবন
উত্তরঃ (B) বহুবিভাজন
২. DNA- এর গঠনগত একক হলো—
(A) নিউক্লিওসাইড
(B) নিউক্লিওটাইড
(C) নিউক্লিওলাস
(D) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (B) নিউক্লিওটাইড
৩. কোশ বিভাজনের যে দশায় নিউক্লিয় পর্দা বিলুপ্ত হয় সেটি হলো–
(A) প্রোফেজ
(B) মেটাফেজ
(C) অ্যানাফেজ
(D) টেলোফেজ
উত্তরঃ (A) প্রোফেজ
৪. অ্যামাইটোসিস কোশ বিভাজনের সঠিক বৈশিষ্ট্যটি শনাক্ত করো
(A) যৌন জননকারী জীবের জনন মাতৃকোশে ঘটে
(B) এটিকে পরোক্ষ বিভাজন বলা হয় ।
(C) ক্রোমোজোম ও বেমতত্ত্ব গঠিত হয় না
(D) ক্রোমোজোম ও বেমতত্ত্ব গঠিত হয় না ।
উত্তরঃ (D) ক্রোমোজোম ও বেমতত্ত্ব গঠিত হয় না ।
৫. সঠিক জোড়টি নির্বাচন করো এবং লেখো
(A) বহুবিভাজন- হাইড্রা
(B) খন্ডীভবন স্পাইরোগাইরা
(C) পুনরুৎপাদন ফার্ন
(D) কোরকোগম প্ল্যানেরিয়া ।
উত্তরঃ (B) খন্ডীভবন স্পাইরোগাইরা
৬. মিয়োসিসের তাৎপর্য সংক্রান্ত নীচের কোন বক্তব্যটি সঠিক তা সঠিকভাবে নিরূপণ করো –
(A) দেহের সার্বিক বৃদ্ধি ও পরিস্ফুটন ঘটায়
(B) জীবের জনন অঙ্গের ও ভ্রুণের বৃদ্ধি ঘটায়
(C) বংশগত প্রকরণবাহী হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপাদন করে
(D) কোনো কোনো প্রাণীর দেহে কোনো অঙ্গহানি ঘটলে সেটি পুনরুৎপাদন করে ।
উত্তরঃ (C) বংশগত প্রকরণবাহী হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপাদন করে
৭. কোশচক্রের যে দশায় DNA অণুর সংশ্লেষ ঘটে সেটি হলো-
( a ) G ,
( b ) S
( c) G2,
( d ) M
উত্তরঃ ( b ) S
৮. নীচের কোন উদ্ভিদ অধবায়ব কাণ্ডের সাহায্যে জনন সম্পন্ন করে ?
(A) কচুরিপানা
(B) আদা
(C) পাথরকুচি
(D) জবা
উত্তরঃ (A) কচুরিপানা
৯. সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুসারে ক্রোমোজোম প্রধানত
(A) দুই প্রকার
(B) তিন প্রকার
(C) চার প্রকার
(D) কোনো প্রকারভেদ নেই ।
উত্তরঃ (C) চার প্রকার
১০. মানবদেহে বৃদ্ধির 12 থেকে 20 বছর বয়স পর্যন্ত দশাকে বলা হয় –
(A) শৈশব দশা
(B) বয়ঃসন্ধি দশা
(C) পরিণত দশা
(D) বার্ধক্য দশা ৷
উত্তরঃ (B) বয়ঃসন্ধি দশা
১১. যে নাইট্রোজেন বেসটি DNA- তে থাকে না কিন্তু RNA- তে থাকে সেটি হলো—
( a ) অ্যাডেনিন
( b ) গুয়ানিন
( c ) থাইমিন
( d ) ইউরাসিল
উত্তরঃ ( d ) ইউরাসিল
১২. যৌন জননের একক হলো—
(A) রেণু
(B) গ্যামেট
(C) শুক্রাশয়
(D) ডিম্বাশয়
উত্তরঃ (B) গ্যামেট
১৩. নীচের কোন প্রাণীর কোরকোগম দেখা যায় ? (A) হাইড্রা /
(B) অ্যামিবা
(C) চ্যাপ্টা কৃমি
(D) প্যারামেসিয়াম
উত্তরঃ (A) হাইড্রা
১৪. প্রতিটি ক্রোমোজোমে ক্রোমাটিডের সংখ্যা হলো—
(A) 2
(B) 4
(C) 6
(D) 8
উত্তরঃ (A) 2
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১. ইন্টারকাইনেসিস দশা কোথায় দেখা যায় ?
উত্তরঃ মিয়োসিস -1 ও মিয়োসিস- II- এর মধ্য পর্যায়ে ।
২. কোন প্রকার কোশ বিভাজনে বেম বা স্পিন্ডিল গঠিত হয় না ?
উত্তরঃ অ্যামাইটোসিস কোশ বিভাজনে বেম গঠিত হয় না ।
৩. ক্রোমোজোমের শেষ প্রান্তকে কী বলে ?
উত্তরঃ টেলোমিয়ার ।
৪. মুলের সাহায্যে প্রাকৃতিক অঙ্গজ জননের একটি উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ রাঙা আলু বা লাল ।
৫. যৌন জননের একককে কী বলে ?
উত্তরঃ গ্যামেট ।
৬. কোন প্রকার কোশ বিভাজনে ক্রোমোজোমের সংখ্যা হ্রাস ঘটে ?
উত্তরঃ মিয়োসিস কোশ বিভাজন ।
৭. মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণকারী ক্রোমোজোমকে কী বলে ?
উত্তরঃ অটোজোম ।
৮. DNA- এর দ্বিতন্ত্রী নকশা কে আবিষ্কার করেন ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী ওয়াটসন ও ক্রিক ।
৯. একটি অর্ধবায়বীয় কাণ্ডের উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ কচুরিপানা ।
১০. কোন প্রকার জনন পদ্ধতি প্রকরণ সৃষ্টি করে এবং বিবর্তনে সাহায্য করে ?
উত্তরঃ যৌনজনন ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১. অপুংজনি বা পার্থেনোজেনেসিস কী ? উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ নিষেক ছাড়াই অনিষিক্ত ডিম্বাণু থেকে অপত্য জীব সৃষ্টিকে অপুংজনি বা পার্থেনোজেনেসিস বলে । উদাহরণ স্পাইরোগাইরা , বোলতা , মৌমাছি ইত্যাদি ।
২. জনুক্রম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ জীবের জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড দশা বা অযৌন ও যৌন জনন দশা বা স্পোরোফাইট ও গ্যামেটোফাইট দশার চক্রাবর্ত আবর্তনকে জনুক্রম বলে । উদাহরণ : উদ্ভিদ – মস , ফার্ন ইত্যাদি । প্রাণী— প্যারামেসিয়াম , মনোসিস্ট ইত্যাদি ।
৩. সেন্ট্রোমিয়ার কাকে বলে ।
উত্তরঃ ক্রোমোজোমের মুখ্য খাঁজে অবস্থিত যে গোলাকার গঠনটি দু’টি ক্রোমাটিডকে যুক্ত করে রাখে তাকে সেন্ট্রোমিয়ার বলে ।
৪. ক্রোমোজোমের দু’টি কাজ লেখো ।
উত্তরঃ ক্রোমোজোমে বংশগত পদার্থ অর্থাৎ জিন অবস্থান করে । ও ক্রোমোজোম কোশের সমস্ত শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে ।
৫. ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ কাকে বলে ?
উত্তরঃ কোনো জীবের বৈশিষ্ট্যাবলির বাহ্যিক প্রকাশকে ওই জীবের ফিনোটাইপ এবং জিন সংযুক্তির দ্বারা নির্ধারিত বৈশিষ্ট্যকে তার জিনোটাইপ বলে ।
৬. অ্যালিল বা অ্যালিলোমর্ফ কী ?
উত্তরঃ সমসংস্থ ক্রোমোজোমের নির্দিষ্ট বিন্দুতে অবস্থিত বিপরীতধর্মী জিনজোড়াকে একে অপরের অ্যালিল বলে । যেমন— লম্বা বেঁটে , সাদা – কালো ইত্যাদি ।
৭. DNA- এর দু’টি কাজ লেখো ।
উত্তরঃ বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে । ORNA ও প্রোটিন সংশ্লেষ করে । প্রশ্ন অঙ্গজ জননের সংজ্ঞা দাও । যে জনন পদ্ধতিতে জীব তার দেহের কোনো অংশ বা অঙ্গ থেকে নিজ আকৃতিবিশিষ্ট অপত্য জীব সৃষ্টি করে তাকে অঙ্গজ জনন বলে ।
৮. অযৌন জননের একটি সুবিধা ও একটি অসুবিধা লেখো ।
উত্তরঃ সুবিধা — কম সময়ে বেশি জীব সৃষ্টি হয় । ও অপত্য জীব জনিতৃ জীবের
অসুবিধা – নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে না । ও পরিবেশের পরিবর্তন হলে অভিযোজনে সক্ষম হয় না ।
৯. ক্রোমোজোমের সংজ্ঞা দাও ।
উত্তরঃ ইউক্যারিওটিক কোশের নিউক্লিয় জালক থেকে সৃষ্ট , নিউক্লিয় প্রোটিন দ্বারা গঠিত , স্বপ্রজননশীল যে সূত্রাকার অংশ জিন বহন করে ও বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলির বিস্তার ঘটায় এবং জীবের পরিব্যক্তি , প্রকরণ ও বিবর্তনে সাহায্য করে তাকে ক্রোমোজোম বলে ।
১০. কোশচক্র কাকে বলে ? কোশচক্রের দশাগুলির নাম লেখো ।
উত্তরঃ কোশচক্র : একটি কোশের একবার বিভাজন শুরু থেকে পরবর্তী বিভাজন | শুরু পর্যন্ত যে ঘটনাগুলি ঘটে তার পর্যায়ক্রমিক আবর্তনকে কোশচক্র বলে । কোশচক্রের দশাগুলি হলো— G ,, S , G , ও M দশা ।
১১. হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমোজোম সেটকে বা n সংখ্যক ক্রোমোজোমকে হ্যাপ্লয়েড বলে এবং দ্বিগুণ সংখ্যক বা 2n সংখ্যক ক্রোমোজোমকে ডিপ্লয়েড সেট বলে । উদাহরণ : মানুষের গ্যামেট হ্যাপ্লয়েড প্রকৃতির ও দেহকোশ ডিপ্লয়েড প্রকৃতির ।
১২. জনন কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে পদ্ধতিতে জীব নিজ আকৃতি বিশিষ্ট অপত্য জীব সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখে এবং সংখ্যার বৃদ্ধি করে তাকে জনন বলে ।
১৩. বয়ঃসন্ধিকাল কাকে বলে ?
উত্তরঃ ১২-২০ বছর পর্যন্ত সময়কালকে বয়ঃসন্ধিকাল বলে । এইসময় ছেলে ও মেয়েদের গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় ও যৌন হরমোন ক্ষরণ হয় ।
১৪. মাইক্রোপ্রোপাগেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে পদ্ধতিতে উদ্ভিদের কোশ , কলা বা অঙ্গ প্রভৃতির ক্ষুদ্রতম অংশ কর্ষণ করে অল্প সময়ে একইরকমের উদ্ভিদের বংশবিস্তার ঘটানো হয় তাকে মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ বলে ।
১৫. ক্রসিং ওভার কাকে বলে ?
উত্তরঃ মিয়োসিসের -1 এর প্রোফেজ 1 – এর প্যাকাইটিন উপদশায় সমসংস্থ ক্রোমোজোমদ্বয়ের নন – সিস্টার ক্রোমাটিড দু’টির মধ্যে কায়াজমা ( X- এর মতো গঠন ) গঠিত হয় এবং ক্রোমোজোমের দেহাংশের বিনিময় সম্পন্ন হয় । একে ক্রসিং ওভার বলে ।
১৬. RNA কত প্রকার ও কী কী ? এর কাজ কী ?
উত্তরঃ তিন প্রকারের , যথা— r RNA ( রাইবোজোমাল RNA ) , RNA ( ট্রান্সফার RNA ) , mRNA ( মেসেঞ্জার RNA ) ।
– কাজ প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বংশগত বস্তু হিসেবে কাজ করে ।
১৭. মাইক্রোটিবিউলস কী ? এর কাজ কী ?
উত্তরঃ উদ্ভিদ ও প্রাণীকোশের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত সুক্ষ্ম নালিকাগুলিকে মাইক্রোটিবিউলস বলে।
কাজ : জল , আয়ন পরিবহণ করে । ওকোশ বিভাজনের সময় বেমতত্ত্ব ও অ্যাস্টার গঠন করে ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. মাইটোসিস কোশ বিভাজনের অ্যানাফেজ ও টেলোফেজ দশার বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ অ্যানাফেজ দশার বৈশিষ্ট্য— (i) এটি ক্যারিওকাইনেসিস বা নিউক্লিয়াসের বিভাজনের তৃতীয় দশা । (ii) এই দশায় ক্রোমোজোমগুলি বিভক্ত হয়ে দু’টি ক্রোমাটিড গঠন করে এবং নতুন সেন্ট্রোমিয়ারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অপত্য ক্রোমোজোম গঠন করে । (iii)ক্রোমোজোমগুলির অর্ধেক উত্তর মেরু ও অর্ধেক দক্ষিণ মেরুর দিকে গমন করে । এটি বেমতত্তুর সংকোচনের ফলে সম্পন্ন হয় । (iv) এই দশায় ক্রোমোজোমগুলি V ( মেটাসেন্ট্রিক ) , ‘ L ‘ ( সাব – মেটাসেন্ট্রিক ) , ‘ J ‘ ( অ্যাক্সোসেন্ট্রিক ) ও ‘ I ‘ ( টেলোসেন্ট্রিক ) আকৃতির মতো দেখায় ৷
টেলোফেজ দশার বৈশিষ্ট্য — (i) ক্রোমোজোমগুলি উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছায় । (ii) ক্রোমোজোমের কুণ্ডলী খুলে যায় , জলগ্রহণ করে এবং নিউক্লিয় জালক গঠন করে ।(iii) নিউক্লিয় পর্দা ও নিউক্লিওলাসের আবির্ভাব হয় । (iv) এই দশার শেষে দু’টি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয় ।
২. মিয়োসিস কোশ বিভাজন কাকে বলে ? এটি কোথায় সম্পন্ন হয় ? এর তাৎপর্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ যে কোশ বিভাজন পদ্ধতিতে জনন মাতৃকোশের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম পরপর দুইবার প্রথমে হ্রাসবিভাজন ও পরে সমবিভাজন ) বিভাজিত হয়ে অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমোজোমযুক্ত চারটি অপত্য কোশ উৎপন্ন করে তাকে মিয়োসিস কোশ বিভাজন বলে । এটি জনন মাতৃকোশে সম্পন্ন হয় । যেমন— মস , ফার্ন ইত্যাদি উদ্ভিদের রেণু মাতৃকোশে , উন্নত উদ্ভিদের পরাগধানী ও ডিম্বাশয়ে প্রাণীদের শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়ে।
মিয়োসিসের তাৎপর্য :
(i) ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক রাখা – মিয়োসিস কোশ বিভাজনে হ্যাপ্লয়েড সংখ্যক ক্রোমোজোেমযুক্ত গ্যামেট উৎপন্ন হয় । হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট মিলিত হয়ে ডিপ্লয়েড কোশ সৃষ্টি হয় । ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস না পেলে গাণিতিক হারে বৃদ্ধি পেত । তাই ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক রাখতে মিয়োসিস সাহায্য করে ।
(ii) জিনের পুনর্বিন্যাস – মিয়োসিস কোশ বিভাজনে ক্রসিং ওভার সম্পন্ন হওয়ায় ক্রোমোজোমের দেহাংশের বিনিময় ঘটে । ফলে জিনের পুনর্বিন্যাস হয় ।
(iii) জিনগত ভেদ সৃষ্টি – ক্রসিং ওভারের ফলে জিনের পুনর্বিন্যাস সম্পন্ন হওয়ায় প্রজাতির মধ্যে জিনগত ভেদ দেখা যায় ৷
(iv) জনুক্রম নিয়ন্ত্রণ – মিয়োসিস কোশ বিভাজন সম্পন্ন হওয়ায় জীবদেহে হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড দশার আবর্তন ঘটে । তাই এটি জনুক্রম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৩. সাইটোকাইনেসিস কাকে বলে ? উদ্ভিদ ও প্রাণীকোশের সাইটোকাইনেসিস বর্ণনা করো ।
উত্তরঃ নিউক্লিয়াসের বিভাজনের পর সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস বলে ।
- উদ্ভিদকোশে সাইটোকাইনেসিস : উদ্ভিদকোশে কোশপাত বা সেলপ্লেট গঠনের মাধ্যমে সাইটোকাইনেসিস সম্পন্ন হয় । টেলোফেজ দশার শেষের দিকে মাইক্রোফিলামেন্ট নামক তত্ত্বগুচ্ছ বিষুব অঞ্চলে জমা হয় এবং একটি প্রাচীরের মতো গঠন তৈরি করে যা ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট নামে পরিচিত । এর সঙ্গে গলগিবডি ভেসিকেল যুক্ত হয়ে কোশপাত গঠন করে । কোশপাতের উভয় পাশে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ সম্ভিত হয়ে কোশপ্রাচীর গঠন করে । ফলে কোশের সাইটোপ্লাজম দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে দুইটি অপত্য কোশের সৃষ্টি হয় ।
- প্রাণীকোশের সাইটোকাইনেসিস : প্রাণীকোশে খাঁজ গঠনের মাধ্যমে বা ক্লিভেজ পদ্ধতিতে সাইটোকাইনেসিস হয় । টেলোফেজ দশায় কোশের মধ্যবর্তী স্থানে দুইপাশের কোশপর্দা সংকুচিত হয়ে খাঁজ তৈরি করে । এই খাজ একে অপরের দিকে এগিয়ে আসে এবং পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয় । ফলে কোশের সাইটোপ্লাজম দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এবং দু’টি অপত্য কোশ সৃষ্টি হয় ।
৪. পরাগযোগ কাকে বলে ? স্বপরাগযোগ ও ইতর পরাগযোগের সুবিধা ও অসুবিধা লেখো ।
উত্তরঃ পরাগযোগ : যে প্রক্রিয়ায় ফুলের পরাগরেণু একই ফুলে বা একই গাছের অন্য ফুলে বা একটি প্রজাতির অন্য গাছের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয় , তাকে পরাগযোগ ( Pollination ) বলে । এটি দুই প্রকার—
- স্বপরাগযোগ : কোনো ফুলের পরাগরেণু সেই ফুলে বা সেই গাছের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হলে তাকে স্বপরাগযোগ বলে ।
- সুবিধা — (i) বাহকের দরকার হয় না । ii) অপত্য জীবে নতুন বৈশিষ্ট্য উৎপন্ন হয় না , সুবিধা একই বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে ।
- অসুবিধা — (i) উন্নত প্রজাতি সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে না ।
- ইতর পরাগযোগ : কোনো ফুলের পরাগরেণু একই প্রজাতির অন্য গাছের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হলে তাকে ইতর পরাগযোগ বলে ।
- সুবিধা – (i) অপত্যে নতুন বৈশিষ্ট্য উৎপন্ন হয় । (ii) অপত্যের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হয় ।
- অসুবিধা – (i) বাহকের উপর নির্ভরশীল বলে পরাগযোগ অনিশ্চিত হয় । (ii) রেণুর অপচয় হয়।