এই নিবন্ধে আমরা মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান এর সপ্তম অধ্যায় অর্থাৎ পরমাণুর নিউক্লিয়াস এর বেশ কিছু অতি সংক্ষিপ্ত, সংক্ষিপ্ত, দীর্ঘ প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবো। Class 10 Physical Science Chapter 7 MCQ Answer |
Class 10 Physical Science Chapter 07 MCQ Answer | মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান অধ্যায় ০৭ – পরমাণুর নিউক্লিয়াস প্রশ্ন ও উত্তর
Table of Contents
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলি
1. নিম্নলিখিত আইসোটোপগুলির মধ্যে কোন্টি তেজস্ক্রিয়?
[A] 12 C
[B] 14C
[C] 160
[D] 23Na
উত্তর: [B] 14C
2. কোনো একটি নিউক্লিয়াস দুঃস্থিত হয়, যখন তার মধ্যে-
[A] নিউট্রন সংখ্যা প্রোটন সংখ্যার তুলনায় বেশি হয়।
[B] প্রোটন সংখ্যা নিউট্রন সংখ্যার তুলনায় বেশি হয়।
[C] প্রোটন সংখ্যা নিউট্রন সংখ্যার সমান হয়।
[D] সুস্থিত আইসোটোপের সাপেক্ষে নিউট্রন ও প্রোটন সংখ্যার সঠিক ভারসাম্যের অভাব থাকে।
উত্তর: [D] সুস্থিত আইসোটোপের সাপেক্ষে নিউট্রন ও প্রোটন সংখ্যার সঠিক ভারসাম্যের অভাব থাকে।
3. γ রশ্মির ভেদন ক্ষমতা ẞ রশ্মির-
[A] সমান
[B] 10 গুণ
[C] 100 গুণ
[D] 10000 গুণ
উত্তর: [C] 100 গুণ
4. পিচব্লেন্ড থেকে আবিষ্কৃত তেজস্ক্রিয় মৌল দুটি হল-
[A] Po, Ra
[B] Po, Th
[C] Th, Ra
[D] Rn, Ra
উত্তর:[A] Po, Ra
5. পারমাণবিক বোমার ভিত্তি হল-
[A] প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা
[B] নিউক্লিয় বিভাজন
[C] নিউক্লিয় সংযোজন
[D] কোনোটিই নয়
উত্তর:[B] নিউক্লিয় বিভাজন
6. নিউক্লিয় বিক্রিয়া ঘটানোর যন্ত্রটি হল-
[A] ব্রিডার চুল্লি
[B] সাইক্লোটোন
[C] নিউক্লিয় চুল্লি
[D] তাপকেন্দ্রীয় বিগলন
উত্তর:[B] সাইক্লোটোন
7. প্রদত্ত কণাগুলির মধ্যে কোল্টিন্টর আধান ঋণাত্মক?
[A] অ্যান্টিপ্রোটন
[B] নিউট্রিনো
[C] নিউট্রন
[D] পজিট্রন
উত্তর:[A] অ্যান্টিপ্রোটন
৪. নীচের নিউক্লিয়াসগুলির মধ্যে দুঃস্থিত নিউক্লিয়াস হল-
[A] 94 Be
[B] 147 N
[C] 84 Be
[D] 168 0
উত্তর: [C] 84 Be
9. যে নিউক্লিয়াসগুলি অনুরূপ নয় কিন্তু যাদের মধ্যে সমসংখ্যক নিউক্লিয়ন বর্তমান, তারা হল-
[A] আইসোটোপ
[B] আইসোবার
[C] আইসোটোন
[D] আইসোস্টার
উত্তর:[B] আইসোবার
10. কোনো জীবাশ্মের বয়স নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়?
[A] 60Co
[B] 131I
[C] 32 P
[D] 14 C
উত্তর:[D] 14 C
11. হার্টের রোগ নির্ণয়ের জন্য কোন্ তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার হয়-
[A] 146C
[B] 2411Na
[C] 3215P
[D] 157 N
উত্তর:[B] 2411Na
12. সূর্যের শক্তির মূল উৎস হল-
[A] নিউক্লিয় সংযোজন ও নিউক্লীয় বিয়োজন
[B] নিউক্লিয় বিভাজন
[C] নিউক্লিয় সংযোজন
[D] কোনোটিই নয়
উত্তর:[C] নিউক্লিয় সংযোজন
13. তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন-
[A] রাদার ফোর্ড
[B] মাদাম কুরি
[C] পিয়ের কুরি
[D] বেকারেল
উত্তর:[D] বেকারেল
14. একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থকে বায়ুশূন্য পাত্রে রাখা হল। ওই পদার্থটির প্রতি সেকেন্ডে বিভাজন হার-
[A] বৃদ্ধি পাবে
[B] হ্রাস পাবে
[C] অপরিবর্তিত থাকবে
[D] তেজস্ক্রিয় পদার্থ গ্যাসীয় হলে বিভাজনের হার বৃদ্ধি পাবে
উত্তর:[C] অপরিবর্তিত থাকবে
15. α রশ্মি ẞ রশ্মি ও γ রশ্মির মধ্যে কোনন্টির বেগ আলোর গতিবেগের সমান?
[A] রশ্মি
[B] ẞ রশ্ম
[C] γ রশ্মি
[D] কোনোটিই নয়
উত্তর:[C] γ রশ্মি
16. নিম্নলিখিত কোন আকরিক পরীক্ষা করে কুরি দম্পতি প্রথম তেজস্ক্রিয়তা সম্পর্কিত গবেষণা শুরু করেন?
[A] উইলিমাইট
[B] পিচব্লেন্ড
[C] সিডারাইট
[D] অ্যাজুরাইট
উত্তর:[B] পিচব্লেন্ড
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
শূন্যস্থান পূরণ করো:
1. সর্বাপেক্ষা তীব্র জারণধর্মী মৌল হল——।
2. পটাসিয়াম একটি তীব্র—– ধাতু।
3. একটি সন্ধিগত মৌলর উদাহরণ হল—–।
4. থাইরয়েড চিকিৎসায় তেজস্ক্রিয়—– ব্যবহার হয়।
5. তেজস্ক্রিয়তার S. I. একক হল——।
উত্তর: (1)ফ্লুওরিন। (2) ক্ষার/বিজারক। (3) তামা (Cu)। (4) 131 I। (5) বেকারেল।
সত্য বা মিথ্যা নির্ণয় করো:
1. ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত তেজয়িয় আইসোটোপটি হলো 40C0 ।
2. পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত কণাগুলিকে একত্রে নিউক্লিয়াস বলে।
3. তেজস্ক্রিয়তা 1869 সালে হেনরি বেকারেল আবিষ্কার করেন।
4. ‘γ’-টি হল কার্যত ভরহীন।
5. 1u পরিমাণ ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হলে উৎপন্নশক্তির পরিমাণ হয় 931 MeV |
উত্তর: (1) মিথ্যা। (2) মিথ্যা। (3) মিথ্যা। (4) সত্য। (5) সত্য।
‘অ’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘আ’ স্তম্ভ মেলাও :
(a)
‘অ’ স্তম্ভ | ‘অ’ স্তম্ভ |
1. ক্ষারধাতু2. Xe3. আধুনিক পর্যায় সূত্র4. নিউল্যান্ডস | (a) মোজেল(b) অষ্টক সূত্র(c) নিষ্ক্রিয় মৌল(d) সোডিয়াম |
উত্তর: 1→(d) 2→(c) 3→(a) 4-(b)
(b)
‘অ’ স্তম্ভ | ‘আ’ স্তম্ভ |
1. তীব্র জারণ ধর্মী2. মুদ্রাধাতু3. সিরিয়াম4. সোনা | (a) একটি ল্যান্থানাইড মৌল(b) বরধাতু(c) ক্লোরিন(d) তামা (Cu) |
উত্তর: 1 (c) 2→(d) 3→(a) 4→(b)
দু-একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে কি নিয়ন্ত্রণ করা যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
2. নিউক্লিয় বিক্রিয়া থেকে উদ্ভুত শক্তিকে কী কাজে লাগানো উচিত বলে তুমি মনে করো?
উত্তর: নিউক্লিয় বিক্রিয়া থেকে উদ্ভূত শক্তিকে শান্তিপূর্ণভাবে মানব কল্যাণে ব্যবহার করা উচিত।
3. নিউক্লিয় বিভাজন বিক্রিয়ার আবিষ্কারক কে কে?
উত্তর: বিজ্ঞানী অটোহান এবং স্ট্রাসম্যান।
4. তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপক একটি যন্ত্রের নাম লেখো।
উত্তর: তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপক একটি যন্ত্রের নাম হল- ‘গাইগার মুলার কাউন্টার’।
5. সূর্য ও নক্ষত্রের শক্তির মূল উৎস কী?
উত্তর: সূর্য ও নক্ষত্রের শক্তির মূল উৎস হল নিউক্লিয় সংযোজন।
6. নিউক্লিয় সংযোজন ঘটাতে কত তাপমাত্রার প্রয়োজন?
উত্তর: নিউক্লিয় সংযোজন ঘটাতে প্রায় 107°C থেকে 108°C তাপমাত্রার প্রয়োজন।
7. নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটরে জ্বালানি হিসাবে বহুল ব্যবহৃত একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থের নাম লেখো।
উত্তর: নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটরে সাধারণত ইউরেনিয়াম নামক তেজস্ক্রিয় মৌলটি
জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৪. এমন একটি যন্ত্রের নাম লেখো যার সাহায্যে নিউক্লিয় বিভাজনে উৎপন্ন শক্তিকে মানব কল্যাণে কাজে লাগানো যায়।
উত্তর: নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটর বা পারমাণবিক চুল্লি।
9. জীবকোশের ওপর তেজস্ক্রিয় রশ্মির প্রভাব কী?
উত্তর: জীবকোশের ওপর তেজস্ক্রিয় রশ্মির প্রভাব মারাত্মক। এই রশ্মি জীবকোশকে ধ্বংস করতে পারে।
10. নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটরে ভারি জলের ভূমিকা কী?
উত্তর: নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটরে নিউট্রনের উচ্চগতি কমানোর কাজে ভারি জল ব্যবহার করা হয়।
11. তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে কত ধরনের রশ্মি নির্গত হয়? তাদের নাম কী?
উত্তর: তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে তিন ধরনের রশ্মি নির্গত হয়। এরা হল-আলফা
(α) রশ্মি, বিটা (β) রশ্মি ও গামা (γ) ) রশ্মি।
12. সবচেয়ে ভারি অতেজস্ক্রিয় আইসোটোপ কোনটি?
উত্তর: সবচেয়ে ভারি অতেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হল 20983Bi।
13. কোন্ প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করা হয়?
উত্তর: নিউক্লিয় সংযোজন প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করা
হয়।
14. কোন্ প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে পরমাণু বোমা তৈরি করা হয়?
উত্তর: নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে পরমাণু বোমা তৈরি করা হয়।
15. তাপীয় নিউট্রন কী?
উত্তর: 10-2ev এর মতো উচ্চ গতিশক্তিসম্পন্ন নিউট্রনকে তাপীয় নিউট্রন বলা হয়।
16. তাপীয় নিউট্রনের একটি ব্যবহার লেখো।
উত্তর: নিউক্লিয় বিভাজন বিক্রিয়ায় ভারি নিউক্লিয়াসকে দ্বিখণ্ডিত করার কাজে তাপীয় নিউট্রন ব্যবহার
করা হয়।
17. তেজস্ক্রিয়তার SI একক কী?
উত্তর: তেজস্ক্রিয়তার SI একক হল বেকারেল। (Bg)
18. নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটরে কোন প্রক্রিয়া ঘটানো হয়?
উত্তর: নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটরে নিয়ন্ত্রিতভাবে নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়া ঘটানো হয়।
19. নিউক্লিয় সংযোজন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় কী?
উত্তর: না, এখনও অবধি নিউক্লীয় সংযোজন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল
আবিষ্কৃত হয়নি।
20. পারমাণবিক চুল্লি বিস্ফোরণ কোন অঞ্চলে হয়েছিল?
উত্তর: 1986 সালে 24 এপ্রিল সোভিয়েত রাশিয়ার ইউক্রেন শহরের চেরনোবিলে হয়েছিল।
21. পারমাণবিক বোমার কোন বিক্রিয়া ঘটানো যায়?
উত্তর: অনিয়ন্ত্রিত শৃঙ্খল বিক্রিয়া।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
1. নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটরের ব্যবহার লেখো।
উত্তর: জাহাজ চালানো, চিকিৎসা বিজ্ঞান, পরমাণু কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন। টারবাইন ঘোরাতে এবং শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় আইসোটোপ তৈরি করতে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটর ব্যবহৃত হয়। কিছু নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটর শুধুমাত্র গবেষণার কাজেই ব্যবহৃত হয়। সারা পৃথিবীতে প্রায় 30টি দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে প্রায় 450টি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটর ব্যবহার করা হয়।
2. নিউক্লিয় বিভাজন কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় একটি তেজস্ক্রিয় পরমাণুর (যেমন, ইউরেনিয়াম, প্লুটোনিয়াম বা থোরিয়াম) ভারি নিউক্লিয়াসকে ধীর গতির নিউট্রন দিয়ে আঘাত করে প্রায় সমান ভরের দুটি নিউক্লিয়াসে ভেঙে ফেলা হয় এবং তার সঙ্গে কিছু সংখ্যক নিউট্রন এবং প্রচুর পরিমাণে শক্তি উৎপন্ন হয়, তাকে নিউক্লিয় বিভাজন বলে।
3. তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে?
উত্তর: যে ধর্মের জন্য সাধারণত কিছু উচ্চ পারমাণবিক ভর সংখ্যা বিশিষ্ট মৌল সব অবস্থায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে এক বিশেষ ধরনের অদৃশ্য বিকিরণ নিঃসরণ করে এবং নতুন মৌলের পরমাণুতে পরিণত হয় তাকে তেজস্ক্রিয়তা বলা হয়।
4. কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? তিনটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় মৌলের উদাহরণ দাও।
উত্তর: কতকগুলি অতেজস্ক্রিয় মৌলকে কৃত্রিম উপায়ে তেজস্ক্রিয় মৌলে রূপান্তরিত করা হয়। কৃত্রিম উপায়ে উৎপন্ন এইসব মৌলের তেজস্ক্রিয়তাকে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা বলা হয়।
তিনটি কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় মৌল 2714Si, 2411Na, 3215 P
5. জনক পরমাণু ও দুহিতা পরমাণু কাকে বলে?
উত্তর: তেজস্ক্রিয় মৌলের যে পরমাণুর তেজস্ক্রিয় বিঘটন হয় তাকে জনক পরমাণু এবং ওই পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হওয়ার পর যে নতুন মৌলের পরমাণু উৎপন্ন হয় তাকে দুহিতা পরমাণু বলা হয়।
6. নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটর কাকে বলে?
উত্তর: নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটর হল এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে নিউক্লিয় বিভাজনকে বিশেষ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে, নিউক্লিয় বিভাজনে উৎপন্ন তাপশক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে অল্প সময়ে বিপুল শক্তি উৎপন্ন করা হয়।
7. নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়া ঘটানোর পূর্বে নিউক্লিয় বিভাজন বিক্রিয়া
ঘটনা হয় কেন?
উত্তর: ধনাত্মক আধানযুক্ত নিম্নভরসম্পন্ন দুটি নিউক্লিয়াসকে সংযোজন করানোর জন্য প্রচুর তাপশক্তির প্রয়োজন হয়। এই তাপশক্তি সরবরাহ করবার জন্য নিউক্লিয় বিভাজন বিক্রিয়াসম্পন্ন করা হয়। এই নিউক্লিয় বিভাজন প্রক্রিয়া থেকে উৎপন্ন শক্তিই নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়া ঘটাতে সাহায্য করে।
৪.α রশ্মি, ẞ রশ্মি ও γ রশ্মির ভেদন ক্ষমতার তুলনা করো।
উত্তর: α, β, γ রশ্মির ভেদন ক্ষমতার তুলনাগুলি-
α রশ্মি | ẞ রশ্মি | γ রশ্মি |
ẞ ও γ রশ্মির তুলনায় α রশ্মির ভেদন ক্ষমতা কম। বাস্তবে বায়ুর মধ্য দিয়ে কয়েক সেন্টিমিটার অগ্রসর হওয়ার পরই α কণা গতিহীন হয়ে পড়ে। | ẞ রশ্মির ভেদন ক্ষমতা α রশ্মির তুলনায় বেশি কিন্তু γ রশ্মির তুলনায় কম। 5mm বেধের AI পাত ẞ রশ্মিকে থামিয়ে দেয়। | γ রশ্মির ক্ষমতা α রশ্মি ও ẞ রশ্মির চেয়ে বহুগুণ বেশি। γ রশ্মি 100cm পুরু AI পাত ভেদ করে যেতে পারে। α, β, ও γ রশ্মির ভেদন ক্ষমতার অনুপাত 1: 100:10000| |
9. পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহারের জন্য কীভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে?
উত্তর: বর্তমানে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি করা হচ্ছে। এই পারমাণবিক চুল্লির প্রধান বিপদ হল তেজস্ক্রিয় বশির নির্গমন। যদি ভুলক্রমে চুল্লি থেকে তেজস্ক্রিয় জ্বালানি বায়ুমণ্ডলে নির্গত হয় বা সমুদ্রে মিশে যায়, তাহলে পরিবেশ ভীষণভাবে দূষিত হয়। 2011 খ্রিস্টাব্দে 11 মার্চ জাপানের ফুকুশিমায় 1 নিউক্লিয়ার প্লান্টে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে পারমাণবিক জ্বালানি পরিবেশে মিশে গিয়ে প্রবলভাবে পরিবেশ দূষিত হয়েছিল এবং প্রায় 2000 মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল।
10. পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের ফলে কীভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে?
উত্তর: পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে যে তেজস্ক্রিয় দূষণ হয়, তার ফলে জল, মাটি, বায়ু ক্রমশ বিষাক্ত হয়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত পারমাণবিক বোমায় জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকি শহর ধ্বংস হয়ে গিয়ে জল, মাটি, বায়ু দূষিত করেছে, এইভাবেই পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
জাপানে পারমাণবিক বোমায় শহর ধ্বংস
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর:
1. চিকিৎসা বিজ্ঞানে তেজস্ক্রিয়তার ব্যবহার লেখো।
উত্তর: ক্যানসার রোগের চিকিৎসায় ক্যানসার আক্রান্ত কোশগুলো নষ্ট করার কাজে তেজস্ক্রিয় মৌল রেডিয়াম, কোবাল্ট (60C0) ব্যবহৃত হয়। লিউকিমিয়া, মস্তিষ্কের টিউমার রোগের চিকিৎসায় তেজস্ক্রিয় ফসফরাস (32P) ব্যবহৃত হয়। থাইরয়েড রোগের চিকিৎসায় তেজস্ক্রিয় আয়োডিন (131I) ব্যবহৃত হয়।
2. “কোনো মৌলের তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণ নিউক্লিয়াসজনিত ঘটনা”- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: যে মৌলগুলি তেজস্ক্রিয় তাদের রাসায়নিক পরিবর্তন হয়ে অন্য যৌগ গঠন করলেও তার তেজস্ক্রিয় ধর্মের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন- রেডিয়াম তেজস্ক্রিয় এবং রেডিয়াম ক্লোরাইডও তেজস্ক্রিয়। কোনো মৌলের রাসায়নিক ধর্ম বিভিন্ন কক্ষে ইলেকট্রন বিন্যাসের ওপর নির্ভরশীল। যেহেতু রাসায়নিক পরিবর্তনের পরেও তেজস্ক্রিয় মৌলের তেজস্ক্রিয়তা বর্তমান থাকে তাই তেজস্ক্রিয়তার সঙ্গে মৌলের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাসের কোনো সম্পর্ক নেই। আবার, তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গমনের ফলে নতুন ধর্মবিশিষ্ট মৌল উৎপন্ন হয়। এটা সম্ভব যদি একমাত্র নিউক্লিয়াসের গঠনের পরিবর্তন হয় অর্থাৎ নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার পরিবর্তন হয়। তাই বলা যায়- “কোনো মৌলের তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণ নিউক্লিয়াসজনিত ঘটনা।”
3. নিউক্লিয় বিভাজন ও নিউক্লিয় সংযোজনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর: পার্থক্যগুলি হল-
নিউক্লিয় বিভাজন | নিউক্লিয় সংযোজন |
1. এই প্রক্রিয়ায় কোনো ভারি নিউক্লিয়াস প্রায় সমান ভরের দুটি কেন্দ্রকে বিভাজিত হয়।2. এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তি সমভরের পদার্থের সংযোজনে উৎপন্ন শক্তির তুলনায় কম।3. এই প্রক্রিয়ায় টার্গেট নিউক্লিয়াসকে আঘাত করার জন্য তাপীয় নিউট্রনের প্রয়োজন হয়।4. এই প্রক্রিয়া সাধারণ উষ্ণতাতেই ঘটে।5. এই প্রক্রিয়ায় তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয়। | 1. এই প্রক্রিয়ায় কয়েকটি হালকা নিউক্লিয়াসযুক্ত হয়ে একটি ভারি নিউক্লিয়াস গঠন করে।2. এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তি সমভরের পদার্থের বিভাজনে উৎপন্ন শক্তির তুলনায় বেশি।3. এই প্রক্রিয়ায় কোনো আঘাতকারী কণার প্রয়োজন হয় না।4. এই প্রক্রিয়া 107°C থেকে 108°C উষ্ণতার মধ্যে ঘটে।5. এই প্রক্রিয়ায় কোনো তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয় না। |
4. জীবদেহে α, β, γ রশ্মির প্রভাব লেখো।
উত্তর: প্রভাবগুলি-
α রশ্মির প্রভাব | ẞ রশ্মির প্রভাব | ㄚ রশ্মির প্রভাব |
α রশ্মি জীবকোশের ক্ষতি করে ও জীবদেহে সামান্য ক্ষতের সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে α রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব চামড়ার উপরিভাগে সীমাবদ্ধ থাকে। | ẞ রশ্মি জীবকোশের ক্ষতিসাধন করে ও জীবদেহে ক্ষতের সৃষ্টি করে। ẞ কণার ভর নগণ্য ও আধান α কণার তুলনায় কম হওয়ার জন্য মানবদেহে ক্ষতি করার ক্ষমতা α কণার তুলনায় কম হয়। | ㄚরশ্মি জীবকোশের ক্ষতিসাধন করে ও জীবদেহে ক্ষতের সৃষ্টি করে। তবে ㄚরশ্মির ভর ও আধান না থাকার জন্য জীবদেহে ক্ষতি করার ক্ষমতা ㄚরশ্মির সবচেয়ে কম। |